জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের সায়েদ মুয়াজ নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও ২ নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনায় সাভার-আরিচা মহাসড়কে মিরপুর-কালিয়াকৈর রুটে চলাচলকারী রাজধানী পরিবহনের ২৪ টি বাস জব্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বাস কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে মুসলেকা দিয়ে বিকেল ৪ টার দিকে বাসগুলো ছাড়িয়ে নেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বাসগুলো আটকে রাখতে শুরু করেন।
মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৫২তম ব্যাচের ছাত্র সায়েদ মুয়াজ। এ ছাড়া এ ঘটনায় হেনস্তার শিকার হয়েছেন আরও তিন ছাত্রী। অভিযুক্ত বাসের সহযোগী (হেল্পার) মো. হান্নান এবং অভিযুক্তের সাথে যুক্ত বাস যাত্রীর নাম মশিউর রহমান তুফান।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মিরপুর-২ থেকে সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে করে ক্যাম্পাসে আসছিলেন ওই ৩ শিক্ষার্থী। বাসের হেল্পার তাদের নিকট ভাড়া চাইলে তারা স্টুডেন্ট ভাড়া ২০ টাকা দিতে চায়। কিন্তু এসময় স্টুডেন্ট ভাড়া হিসেবে বাসের হেল্পার ২৫ টাকা চান। শিক্ষার্থীরা হেল্পারকে ২০ টাকাই হাফ ভাড়া বলে জানালে বাসের হেল্পার অসদাচরণ করেন এবং ভুক্তভোগীর মায়ের নামে গালিগালাজ করেন।
একপর্যায়ে জাবি শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিলে বাসের হেল্পার হান্নান জাহাঙ্গীরনগর নিয়েও গালিগালাজ শুরু করেন। এতে ভুক্তভোগী মুয়াজ ক্ষিপ্ত হয়ে ওই হেল্পারের দিকে তেড়ে যায়। এসময় হেল্পার হান্নান বাসের সিটের নিচ থেকে লাঠি বের করেন এবং তাকে মারধর শুরু করেন। পরে বাসের মধ্যে থাকা তুফান নামের এক যাত্রী হেল্পারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে ভুক্তভোগী মুয়াজকে মারধর করেন।
এ সময় মুয়াজকে মারধরকালে তার সাথে থাকা তিন ছাত্রী প্রতিবাদ জানালে তাদেরকেও হেনস্তা করেন ও হুমকি দেন যাত্রী তুফান। এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে রাজধানী পরিবহনের বাসগুলো আটকাতে শুরু করেন এবং ওই অভিযুক্ত বাসের হেল্পার মো. হান্নানসহ ওই বাসটিকেও ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে বাস কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে মুচলেকা নিয়ে বাসগুলো বিকেলে ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সায়েদ মুয়াজ জানান, আমরা নিয়মিত বাসে যাতায়াত করি ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য। বাসে স্টুডেন্ট ভাড়া ২০ টাকা করে নেয়। তবে আজ ২০ টাকা দিতে চাইলে বাসের হেল্পার অসদাচরণ করেন এবং এক পর্যায়ে মা এবং ক্যাম্পাস ধরে গালিগালাজ করেন। পরে তেড়ে গেলে বাসের হেল্পার সিটের নিচ থেকে লাঠি বের করেন এবং মারধর করেন। পরে মশিউর রহমান তুফান নামের বাসের ঐ যাত্রী জাবির শিক্ষার্থী শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে সেও মারধর করেন। ছাত্রীরা ঠ্যাকাতে গেলে তাদেরকেও হেনস্তার শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরীন জলি বলেন, বাস কর্তৃপক্ষ আসলে তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দাবি জানিয়েছে। রাজধানী পরিবহনের যে বাসের হেল্পার অপরাধ করেছে সে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আর বাস কর্তৃপক্ষ ওই হেল্পারকে শাস্তি দেবে বলে জানিয়েছে।