জুলাই বিপ্লবে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া নির্যাতনের অভিজ্ঞতা ও প্রতিবাদের ঘটনাগুলো তুলে ধরেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি )আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামে শিক্ষা অধিকার সংসদ আয়োজিত 'ক্যাম্পাসে নির্যাতিত ছাত্রীদের জবানবন্দি ও বৈষম্যহীন শিক্ষাঙ্গন গড়ার দায়' শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা দেন।
সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা, কাজী ফারজানা মিম, ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী জয়মা মুনমুন সহ আরো অনেকে নির্যাতনের কাহিনী শোনান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন বলেন, ছাত্রলীগের নেত্রী আমাকে এতটাই নির্যাতন করছিল যে, আমার কাছ থেকে সুইসাইড নোট লিখে নিয়ে বলে, এবার তোকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখব।
ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী জয়মা মুনমুন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে ছাত্রলীগ হলগুলোতে দখলদারিত্ব চালিয়ে আসছে। শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাধ্য করা হয় এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই বিপ্লবের সংগ্রামী সিনথিয়া মেহরিন সকাল বলেন, ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ আমাকে তাড়া করে মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে। ভেবেছিলাম, হয়তো আমি মারা গেছি।
কিন্তু আমার ভোগান্তি এখনো শেষ হয়নি। প্রতিদিন আঘাতের ফল ভোগ করছি। আমি যেন জীবন্ত শহীদ।
তিনি আরও বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন যদি রাজনৈতিক দলের হাতে জিম্মি না থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়া সম্ভব হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম বলেন, জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় আমি প্রথমে যৌন হয়রানির শিকার হই। কিন্তু অভিযোগ দায়ের করার পর উল্টো হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাব বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মনিনুর রশিদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রাজ্জাক, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।