টাকার অভাবে হচ্ছে না মশা নিধন, অতিষ্ঠ জাবি শিক্ষার্থীরা

বিবিধ, ক্যাম্পাস

রুদ্র আজাদ, জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 22:46:09

ড্রেন নিষ্কাশন না করা, বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকা, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা এবং ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার না করার ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে মশা। আর এ মশার কামড়ে অতিষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। তবে ‘টাকা এবং যথেষ্ট লোকবলের অভাবে’ মশা নিধনে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের পাশে ড্রেনগুলোতে সবসময় পানি জমে থাকে। এসব ড্রেনে দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয় না। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর আশপাশের জলাশয় ও ডোবাতে কচুরিপানা ও অন্যান্য ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আর এসব অপরিষ্কার জায়গাগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ফলে মশার প্রাদুর্ভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে বাড়ছে ভোগান্তি। অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের মশা গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'ক্যাম্পাসে বর্তমানে যে পরিমাণ মশা আছে আগামী মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত আরও কয়েকগুণ বাড়বে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে না সমগ্র বাংলাদেশে এই সময়ে মশার প্রকোপ চরমে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে কিউলেক্স মশা খুব বেশি। এর কামড়ে যদিও গোদ রোগ হয়। কিন্তু ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় এ রোগটা হয় না। তবে একেবারে হবে না এমন না। এখন থেকে কার্যকরী উদ্যোগ নিলে সেই সম্ভাবনা কমে যাবে।'

তিনি আরও জানান, মশা নিধন করতে হলে নিয়মিত ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। কারণ মশার বংশ বিস্তার হয় খুব সহজে। প্রতি তিনদিন পর পর একাধারে একমাস ওষুধ প্রয়োগ করলে মশা কমে যাবে।'

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (স্টেট) মো. নূরুল আমিন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমরা এর মধ্যে মশা নিধনে কার্যক্রম শুরু করেছি। আজকেও দুইটা হলে মেডিসিন দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো হলে দেওয়া হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'টাকা এবং লোক বলের অভাবে আমরা বছরে দুইবারের বেশি ওষুধ প্রয়োগ করতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফান্ড এবং লোকবল দেওয়া হলে আমরা আরও কার্যকরী উদ্যোগ নিতে পারবো।'

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধুমাত্র ওষুধ স্প্রে করে মশা কমানো যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেনগুলোতে এবং আবদ্ধ জায়গায় যেন পানি জমে না থাকে, সেটাও নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ডোবা ও জলাশয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তিনদিন পর পর অন্তত একমাস মশা মারার কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হবে। তাহলে কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'যেহেতু যথেষ্ট টাকা ও লোকবলের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেট শাখা কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারছে না। আমি আশা করবো শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়টা ভেবে দেখবে।'

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর