স্বতন্ত্রদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে ছাত্রলীগ সভাপতির ‘চাপ'

বিবিধ, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-17 18:08:34

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর ‘বল প্রয়োগ’ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মোহাম্মদ মুহসীন হল সংসদের কমপক্ষে পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ, তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।

তবে ছাত্রলীগের দাবি, ছাত্রলীগের যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে, তাদেরকে বোঝানো হয়েছে। চাপ সৃষ্টি করা হয়নি।

সূত্র জানায়, শুক্রবার (০১ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং দলের কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তার কক্ষে (কক্ষ নং-৩৩২) ডাকেন। তিনি ওই সব প্রার্থীদের শনিবার (০২ মার্চ) দুপুর ১২টার মধ্যে ভেবে চিন্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার কথা বলেন।

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি সরকার জহির রায়হান, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, মুহসীন হল সংসদে ভিপি প্রার্থী তৌহিদুল হক শিশির, জিএস প্রার্থী মিজান হাসান প্রমুখ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুহসীন হল সংসদের একাধিক প্রার্থী জানান, ছাত্রলীগ সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তার কক্ষে ডেকে প্রার্থিতা প্রত্যহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে হলে থাকতে সমস্যা হবে বলে ভয় দেখানো হয়েছে বলেও জানান তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হল সংসদের নির্বাচনের এক প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচন মানে অনেক প্রার্থী থাকবে। যে ভোট বেশি পাবে সে নির্বাচিত হবে। যদি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর লোক বাদে আর কেউ দাঁড়াতে না পারে তাহলে নির্বাচন হওয়ার কি দরকার?'

ডাকসু নির্বাচনের আচরণ বিধির ৯ (গ) ধারায় বলা আছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা ভোটারকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, বল প্রয়োগ ও ভোটদানে বাধাগ্রস্ত করতে পারবেন না।

এ বিষয়ে জানতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের মুঠোফোনের একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

তবে ছাত্রলীগ প্যানেলের মুহসীন হল সংসদের ভিপি প্রার্থী শিশির বলেন, ‘ছাত্রলীগেরই যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে দলের স্বার্থে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়েছে। বাইরের কাউকে বলা হয়নি।'

ডাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে আচরণবিধির ১৫ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা অভিযোগ ও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবেন৷ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রয়োজনবোধে স্বপ্রণোদিতভাবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবেন৷ আর ১৫ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার কিংবা রাষ্ট্র বা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য কোনো দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এ বিষয়ে জানতে ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক এস এম মাহফুজুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানীকে তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর