খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেছেন, তথ্য জানার অধিকার এখন বিশ্বব্যাপী বহুল প্রচলিত, চর্চিত ও গুরুত্বর্পূণ একটি বিষয়, যা মানুষের মৌলিক অধিকার পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত। এটি অনেক দেশেই সাংবিধানিকভাবে, এমনকি জাতিসংঘ স্বীকৃত বিষয়।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে খুবি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে ‘সুশাসনে তথ্য অধিকার ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, তথ্য প্রবাহ অবাধ হলে দুর্নীতি হ্রাসে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। একইসাথে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ়করণের ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যাপক ফায়েক উজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসহ কয়েকটি ক্ষেত্রের গোপনীয়তা রক্ষা ছাড়া স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য জনসংশ্লিষ্ট সকল সেবায় গোপনীয়তা রক্ষার চেষ্টা মানেই সেখানে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া বা অসৎ উদ্দেশ্য থাকা। এখনও আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ সঠিক তথ্যের অভাবে, জবাবদিহিতার অভাবে বিভিন্ন অফিসে সেবা নিতে যেয়ে আর্থিক ক্ষতি ও হয়রানির সম্মুখীন হন। তবে, আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যথেষ্ট স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন রয়েছে।
খুবিতে তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করাসহ মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করেন উপাচার্য। আশা প্রকাশ করেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যুক্ত হয়ে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের পেশাগত জীবনে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগাবে। তারা তাদের লেখনীর মাধ্যমে দেশের অভীষ্ট উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে, একইসাথে খুবির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান। তিনি বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে জনগণের চিন্তা-চেতনার বহিঃপ্রকাশের বিষয় যুক্ত। এক্ষেত্রে আইনের শাসন কার্যকর হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা নাহলে সমাজে জনগণের মধ্যে হতাশা বেড়ে যায়। আমরা যা কিছু করতে চাই, তার অভীষ্ট লক্ষ্য হওয়া উচিৎ- জনগণের কল্যাণ। যে আইন জনকল্যাণে কাজে আসে না, তাকে ভালো আইন বলা যায় না।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক মোছা. তাছলিমা খাতুন। স্বাগত বক্তব্য দেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের প্রভাষক মো. শরিফুল ইসলাম।
পরে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন প্রধান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, আইন এবং ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিনের প্রায় ৩০০ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশ নেন।