শাবিপ্রবির নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন কম দেওয়ার অভিযোগ!

, ক্যাম্পাস

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, সিলেট | 2023-08-16 01:17:01

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘যমুনা স্টার সেভ গার্ড সার্ভিস লিমিটেড’-এর বিরুদ্ধে কর্মীদের বেতন কম দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে কোম্পানির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন ৬৬ জন নিরাপত্তাকর্মী।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক থেকে বেতন তোলার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে কমিশন চান কোম্পানির সুপারভাইজার রাজা মিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিত একাধিক নিরাপত্তাকর্মী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের কাছে এ অভিযোগ জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, যমুনা স্টার সেভ গার্ড সার্ভিস লিমিটেডের অধীনে গত জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন ৯৬ জন নিরাপত্তাকর্মী। চাকরিতে প্রবেশের সময় ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কর্মীকে গত তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) বেতন দেওয়া হয়েছে আট হাজার টাকা করে। এ বিষয়ে কোম্পানির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টরের কাছে অভিযোগও করেছেন কয়েকজন।

অভিযোগ আছে, প্রথম দিকে নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়ে যমুনা ব্যাংকে একাউন্ট খোলা হয়। পরবর্তীতে দুর্নীতির বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তাকর্মীদের সোনালী ব্যাংকে বেতন দেওয়ার নির্দেশনা দেয়। বুধবার তাদের একাউন্টে এপ্রিল ও মে মাসের টাকা জমা হয়। কিন্তু বুধবার ব্যাংকে তাদের একাউন্টে টাকা আসার পরপরই সক্রিয় হয়ে ওঠেন সুপারভাইজার রাজা মিয়া।

সকাল থেকেই সোনালী ব্যাংকের ভেতরে অবস্থান নিয়ে কর্মীদের বেতন থেকে চাঁদা দাবি করেন। কয়েকজন টাকা দিতে না চাইলে ব্যাংকের ভেতরেই গোলযোগ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রাজা মিয়াকে ব্যাংক থেকে বের করে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নিরাপত্তাকর্মী জানান, তাদের একাউন্টে দুই মাসের বেতন হিসেবে ২৮ হাজার ৯০০ টাকা আসার কথা থাকলেও অনেকের একাউন্টে কম টাকা জমা হয়েছে। এর প্রতিবাদ করলেই চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ৩-৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তবে যারা ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন তাদের সম্পূর্ণ বেতন দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ন্যায্য বিচার দাবি করেন।

চাঁদা দাবির বিষয়ে রাজা মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, আমি একজনের কাছ থেকে ঋণের টাকা আনতে ব্যাংকে গিয়েছিলাম। তবে কারও কাছে আমি চাঁদা দাবি করিনি।

কোম্পানির ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, চাঁদা দাবির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে একজনের কাছে পাওনা টাকা আনতে গিয়েছিল রাজা মিয়া।

বেতন কম দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, ডিউটি অনুযায়ী সবাইকে টাকা দেওয়া হয়। তাই অনেকের একাউন্টে কম টাকা জমা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, র্দীঘদিন ধরে নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন থেকে কমিশন নেওয়া হয়। তবে রাজা মিয়ার বিষয়টি জানার পর আমি ম্যানেজারকে বলে তাকে ব্যাংক থেকে বের করে দিয়েছি। কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী আমাকে জানিয়েছেন, গতকাল রাত থেকে মাসুক নামে একজন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তাদের হুমকি দিচ্ছেন।

প্রক্টর আরও বলেন, গরিব মানুষগুলো যাতে ন্যায্য টাকা পায় সে জন্য আমি কয়েক মাস ধরে কাজ করে যাচ্ছি। আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি দেখছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর