দাবি না মানলে অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের

, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-30 22:33:48

পূর্ব ঘোষিত তিন দফার ছয় দাবি আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেনে নেওয়া না হলে ৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) পূর্ব ঘোষিত মশাল মিছিল শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে বিগত সময়ে চলা বিভিন্ন আন্দোলনের ওপরে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

ডকুমেন্টারি প্রদর্শন শেষে শহীদ মিনার থেকে একটি মশাল মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরিবহন চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ'র সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, 'আমাদের তিনটা দাবি বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি, কিন্তু তারা কোনোভাবে কর্ণপাত করছে না। শিডিউল ছিনতাই হলো কর্ণপাত করল না। আবার দেখলাম দেশের সাধারণ জনগণের টাকা ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হলো। অন্যদিকে ছাত্রলীগ আর দলীয় শিক্ষকদের নিয়ে আন্দোলন দমানোর প্ল্যান করছেন উপাচার্য। আমার এর তীব্র নিন্দা জানাই। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউসিজি) বলেছেন, আমরা উন্নয়ন বিরোধী৷ কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা উন্নয়ন বিরোধী না। আমরা চাই, উন্নয়ন হোক কিন্তু পরিকল্পিতভাবে৷ এছাড়া এই উন্নয়ন প্রকল্প থেকে সকল ধরনের অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে৷'

বাংলাদেশ ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন,'আমাদের আন্দোলন গাছ কাটার বিরুদ্ধে নয়। আমাদের আন্দোলন অপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যান এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কোন লুটপাটকারীকে জাহাঙ্গীরনগরে আশ্রয় দেওয়া হবে না। উপাচার্য আপনার লুটপাটের কারণে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা ফেরত যায় তবে দায়ভার আপনার।'

সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনা উল্লেখ করে ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, 'উপাচার্যকে যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করল, আপনি টাকা ছাত্রলীগকে দিয়েছেন? তখন তিনি সাংবাদিকদের বলছেন, তাকে এই প্রশ্ন করা যাবে না। এই উপাচার্য স্বৈরাচারের ভূমিকা পালন করছে। আমরা উপাচার্যকে বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়কে গণতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালনা করুন নাহলে টিকতে পারবেন না।'

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনার নামে লুটপাটকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কোন অন্যায় অবিচারের জায়গা নয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আগামী ১লা সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি তিন দফা দাবি মেনে নেওয়া না হয়। তবে আগামী ৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করবো। আপনি যদি দাবি মেনে না নেন, তবে গদিতে ঠিকমতো থাকতে পারবেন না।'

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কোনো অপরাধ দুর্নীতিকে কখনো গ্রহণ করে নাই এবং ভবিষ্যতেও করবে না। আমরা এতদিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলেছি সন্ত্রাস নির্মূল করেছি। নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলেছি নিপীড়ন নির্মূল হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছি এটাও নির্মূল করে ছাড়ব। কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যাদের দুই কোটি টাকা দিয়েছেন, তাদেরকে দিয়ে আপনি রক্ষা পাবেন। তাহলে সেটা ভুল হবে।'

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রনু, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যাবি শাখার আহ্বায়ক শাকিল উজ্ জামান, ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান, ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর