বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শের-ই-বাংলা হলের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা হত্যার রহস্যের সূত্র খুঁজে পাচ্ছেন তার সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
আবরার ৫ অক্টোবর তার সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে ভারত সর্ম্পকে লিখেছিলেন।
পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- '৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।
কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।
কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।
হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-
“পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
সহপাঠীরা অভিযোগ করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজন নেতাকর্মী রোববার (৬ অক্টোবর) রাত আটটার দিকে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরারকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ২০১১ নাম্বার রুমে তাকে তার দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ওই সময় তারা আবরারকে মারধর করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু। তবে আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, ছাত্রলীগের উপদফতর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুজতবা রাফিদ, উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপআইন সম্পাদক অমিত সাহা।
পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার।
অন্যদিকে রাত অনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে সবাই জানতে পারে, সিঁড়ি থেকে পড়ে আবরার ফাহাদ মারা গেছেন।
ঘটনাটি সর্ম্পকে লালবাগ জোনের অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার কামাল হোসাইন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, হল প্রশাসনের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। এসে ছেলেটির মরদেহ দেখতে পাই। পরে তা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: আবরারের মৃত্যু: জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ ছাত্রলীগ নে...