বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) উপাচার্য পদে যোগদান করেছেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকাল পৌনে ৫টায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে উপাচার্য পদে যোগদান করেন।
যোগদান শেষে ববির নবনিযুক্ত উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাতে ববির স্থগিত হওয়া ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করা যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে নিয়ে কাজ করবেন এবং অসৎ লোকদের প্রশ্রয় দিবেন না।
উপাচার্য বলেন, একটানা ৫ মাস উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো উপযুক্ত সমাধান করা হবে। শিক্ষা ও গবেষণা এবং সহ শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সেশনজট যাতে কমিয়ে আনা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আইনগত বাঁধা না থাকলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত রাখা হবে। কারণ ছাত্র রাজনীতি না থাকলে আগামী দিনের নেতৃত্ব তৈরি হয় না।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস, ববি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়াসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং দফতর প্রধানগণ।
গত রোববার (৩ নভেম্বর) ৫ মাস পর ববিতে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনকে। তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় উপাচার্য হিসাবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিদায়ী উপচার্য প্রফেসর ড. এস.এম ইমামুল হকের মেয়াদ ছিল ২৬ মে পর্যন্ত। চলতি বছরের গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শিক্ষার্থীদের দাওয়াত না দিলে তার প্রতিবাদ করায় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকের বাচ্চা’ বলে মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। উদ্ভুত পরিস্থিতির মুখে ১১ এপ্রিল ড. এস.এম ইমামুল হককে তার মেয়াদকালীন পর্যন্ত বাধ্যতামুলক ছুটি দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে ভিসির রুটিন দায়িত্বপালনকারী কোষাধ্যক্ষ ড. এ.কে.এম মাহবুব হাসানের মেয়াদ শেষ হয় গত ৭ অক্টোবর। রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ আগেই শুন্য ছিল। ফলে গত ৮ অক্টোবর থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছিল। উপচার্য না থাকায় গত ১৮ ও ১৯ অক্টোবরের সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। অক্টোবর মাসের বেতনও পাননি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে নতুন উপাচার্য নিয়োগে স্বস্তি ফিরেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সকল সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হবেন এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।