আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, ছাত্রলীগের অস্বীকার

, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 11:54:25

ঢাকা: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের কয়েক দফা হামলা করায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ। আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যক্তিগত ঝামেলা রয়েছে সেখান থেকে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করে সংগঠন।

শনিবার (৩০ জুন) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থগারের সামনে হামলার পর দুপুর দেড় টায় শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরির ভেতরে কয়েকজনকে বেধড়ক মারপিট করা হয়।

এমধ্যে কোটা আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর, ফারুক হোসেন, মো আরশ, আতাউল্লাহ ও জসীম আহত হয়।

১১টা দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এরপর ক্যাম্পাসে পরিষদের কয়েকজনকে মারধরে পর দুপুর দেড়টার দিকে পাবলিক লাইব্রেরির ভেতর থেকে ধরে এনে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জসিমসহ পাঁচকে মারধর করা হয়েছে। জসিমকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করার পর পুলিশের গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে নেয় হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের কেন্দ্রিয় গ্রন্থগারে কর্মচারী নাম প্রকাশের অনুচ্ছুক বার্তা২৪কমকে বলেন, সকালে সাড়ে ১০টার পরে গ্রন্থগারে সামনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করছিল কয়েকজন ছাত্ররা। সেখানে পূর্ব থেকে অনেকেই অবস্থান করছি। এক পর‌্যায়ে দুইজনকে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছিল। এরপর কয়েকজন গ্রন্থগারে ভেতরে ঢুকে তৃতীয় তলা থেকে দুইজনকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের মারধরে করতেছিল। এসময় গ্রন্থগারের পরিচালক স্যার আসেন। এবং ছাত্রদের ওপর মারধর করা থেকে অন্যদের নিবৃত্ত করতে চাইলেও পারেনি।

আন্দোলনকারীদের কেউ গ্রন্থাগারের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছে কি না, তা দেখতে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ভেতরে ঢুকলেও তাদের বের করে দেন গ্রন্থাগারের পরিচালক অধ্যাপক জাভেদ আহমেদ বলে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান। নূরকে মারার সময় ঠেকাতে গিয়ে অধ্যাপক জাভেদ আহমেদও আঘাত পান। বে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় কিছু বলতে চাননি তিনি।

এসময় হামলার শিকার হন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন। গ্রন্থাগারের কর্মচারীদের সহায়তা গ্রন্থাগারে অবস্থান নেয়। পরে বিকাল ৩ টার দিকে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যান।

এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বার্তা২৪কমকে বলেন, সাড়ে ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু এসময় বিভিন্ন হল থেকে আসা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে।গ্রন্ত্রগারের কয়েকজন কর্মচারী আমাকে গ্রন্থগারের ভেতরে নিয়ে আসে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলার কথা অস্বীকার করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।

সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বার্তা২৪কমকে বলেন, আন্দোলনকারী নিজেদের মধ্যে ঝমেলা হয়েছে। সেখানে ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রলীগের কয়েকজন থাকতে পারে। কিন্তু সংগঠনের পক্ষে থেকে কেউ ছিল না।

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্টকারীর বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিহত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।

ছাত্রদের ওপর হামলা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীকে অবহিত কলেও তিনি সেখানে আসেনি । তিনি হামলার ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে প্রক্টরিয়াল টিম পাঠিয়েছেন।

তিনি বার্তা২৪কমকে বলেন, আজকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা পড়াশুনা করতে চায়, তাদের জন্যই গ্রন্থগারগুলো খোলা থাকে। সেখানে পড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট কারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর