রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘কচু ছাড়া সব কিছুতেই ফরমালিন। দেশের নির্ভেজাল খাবার দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশের মানুষ ক্রমেই দানব হয়ে উঠছে। মানুষকে এই পথ থেকে ফেরাতে হবে। না হলে জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাবো।’
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পঞ্চম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে আবদুল হামিদ বলেন, ‘কেবল আচার্য হিসেবে নয়, আমি তোমাদের অভিভাবক হিসেবে বলতে চাই- উচ্চশিক্ষা শেষে শুধু একটি ভালো চাকরি পাওয়া জীবনের প্রকৃত ও একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে না। শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে- নিজে শিক্ষিত হওয়া ও অন্যকে শিক্ষিত করা। অর্জিত শিক্ষা সততার সঙ্গে বৃহৎ মানবতার কল্যাণে ব্যবহার করা। কারণ সততা মানুষের মূল্যবান সম্পদ। কর্মজীবনে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রযুক্তি উন্নয়নের বাহন। তাই বলে প্রযুক্তির উদ্ভাবনই যথেষ্ট নয়। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের উন্নয়ন করায় উদ্ভাবনের সার্থকতা। অন্যের অনুকরণ নয় বরং আমাদেরকে যাতে অন্যরা অনুকরণ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষা যাতে দেশ ও মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হয়, সেদিকে শিক্ষকদের সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াটেক এডভান্সড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম শেখ। পরে সমাবর্তনে নিবন্ধন করা ২ হাজার ৫৮৬ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। যার মধ্যে ৭০ জন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী। এছাড়া সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি ও সমাবর্তন বক্তাকে স্মারক প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ অংশ নেন। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে সমাবর্তন শোভাযাত্রা সহকারে রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনের অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। সেখানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠের পর রাষ্ট্রপতি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।