অর্ধযুগেও নামকরণ হয়নি নোবিপ্রবির মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের

বিবিধ, ক্যাম্পাস

নোবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 02:19:31

‘অপরাজেয় বাংলা, সংশপ্তক, সাবাস বাংলাদেশ, দুর্বার বাংলা, বিজয় ৭১, চেতনা ৭১’ এই ভাস্কর্যগুলোর সঙ্গে মিশে আছে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম আর বীর বাঙালির মুক্তির চেতনা। উদ্দীপনামূলক নামের এই ভাস্কর্যগুলো যেন স্বাধীন বাংলার একটুকরো প্রতিচ্ছবি।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থান পাওয়া ভাস্কর্যগুলো যেন শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এসব ভাস্কর্য তরুণ-তরুণীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশকে জানার এবং চেনার ইচ্ছে তৈরি করছে।

দেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (নোবিপ্রবি) রয়েছে এমনই একটি ভাস্কর্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে উদ্বোধনের প্রায় অর্ধযুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো নাম পায়নি ভাস্কর্যটি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে স্থাপিত এই ভাস্কর্যে নাম ঠিক করা নিয়ে যেন কোনো রকমের মাথা ঘামানোর সময়ই নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা ভাস্কর্যটি ২০১৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর সাইদুল হক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় উপাচার্য নাম ঠিক করার প্রজ্ঞাপন দিলেও সেটি আর কাজে পরিণত হয়নি।

উদ্বোধনের সময় সাময়িকভাবে ভাস্কর্যটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘স্বাধীনতা ভাস্কর্য’। সেই অস্থায়ী নামের ওপর এখনো দাঁড়িয়ে আছে ভাস্কর্যটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় এ ভাস্কর্যটির নামকরণের দাবি জানিয়েছি। বছরখানেক আগে আমাদের বুঝ দেওয়ার জন্য লোকদেখানো নাম চাওয়া হয়। কিন্তু সে নাম বা নামকরণ কোনো কিছুরই হদিস নেই।’

নোবিপ্রবির এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্বের প্রত্যেকটি জিনিসেরই একটি পরিচয় থাকে, যা দিয়ে নির্দিষ্ট করে তাকে চেনা যায়। পরিচয় সংকটে হারিয়ে যায় ঐতিহ্য। একটি ক্ষুদ্র মাইটস, তারও পরিচয় লাগে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নামেও একটি মাইটস আছে। কিন্তু খুবই দুঃখজনকভাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য দীর্ঘ সময় থেকে নামহীনভাবে পড়ে আছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, ‘ভাস্কর্যটির একটি নাম হওয়া উচিত। এর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, আশা করি খুব দ্রুত এর নামকরণ হয়ে যাবে।’

এই বিজয় দিবসে শুভকাজটি করা যায় কিনা এমন প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, 'এটি তো আর আমি একা দিতে পারি না। আরো অনেকেই আছেন, তাদের সবার মতামতের ভিত্তিতেই ভাস্কর্যটির নামকরণ করা হবে। তাছাড়া অন্য কোনোটির সঙ্গে নাম যেন মিলে না যায়, সেটিও দেখার বিষয়। তবে আশা করছি, ভাস্কর্যটির একটি নামকরণ হয়ে যাবে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর