কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাংবাদিক সজিব বণিককে পেটানোর ঘটনায় এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য সতর্ক করা হয়েছে আরেক ছাত্রকে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো.আবু তাহের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ও একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুনতাসির হৃদয়, একই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ ও বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.নাসির উদ্দিন। এছাড়া এ বিভাগের একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য ও ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিরাজ খলিফাকে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ জানুয়ারি শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ২০৪ নম্বর কক্ষে সংগঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই কক্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদকে তিন মাসের জন্য এবং ৩০৩ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থী মুনতাসির হৃদয়কে দুই মাসের জন্য সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আগামী সেমিস্টার থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে। এছাড়া ওই হলের ৫০০২ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থী মিরাজ খলিফাকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ জাতীয় কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হবে না মর্মে মুচলেকা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৪ জানুয়ারি (শনিবার) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের নিজ কক্ষে (২০৪ নং রুম) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে হামলার শিকার হন সজিব বণিক। আহত সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি দৈনিক বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার কুবি প্রতিনিধি এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) সদস্য। পরদিন ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আহত ওই সাংবাদিক তার ওপর চালানো হামলার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর ওই লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এদিকে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাখা ছাত্রলীগ। ঘটনার জের ধরে মূল অভিযুক্ত রাজু আহমেদ কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাথে কোনো সম্পৃক্ততা না থাকায় তার বিরুদ্ধে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছে সংগঠনটি। অভিযুক্ত মিরাজ খলিফাকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে তার কুবি শাখা ছাত্রলীগের সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে।
আরেক অভিযুক্ত মুনতাসির হৃদয়ের কু্বি শাখা ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক পদ স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া অপর অভিযুক্ত ইমতিয়াজ শাহরিয়ারকে তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়। এদিকে, অভিযুক্ত মিরাজ খলিফা ও মুনতাসির হৃদয়কে কুবি ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় সংসদের কাছে সুপারিশ করে কুবি শাখা ছাত্রলীগ।