ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতি ও অবৈধ পন্থায় ভর্তির জেরে ৬৩ জন এবং অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চারজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ করেনি প্রশাসন। সেই বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে ৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সদস্য তানভীর হাসান সৈকত।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি ‘বহিষ্কৃত’ শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ প্রসঙ্গে শিরোনামে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে।
ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, যারা অবৈধ উপায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে তারা অপরাধী। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেছে। তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানীকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু নাম প্রকাশ না করে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা করেছে। ডাকসু সদস্য বলেন, ৫ দিনের মধ্যে যদি বহিষ্কৃতদের নাম প্রকাশ না করা হয়, তাহলে আমরা প্রক্টর অফিসে তালা ঝুলাবো।
স্মারকলিপিতে সৈকত বলেন, ভর্তি জালিয়াতির কারণে বহিষ্কৃতদের নাম প্রকাশ না করে প্রক্টর মহোদয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে যে প্রহসন করছেন তা রীতিমতো শিক্ষার্থীদের মনে দাগ কেটেছে। উপাচার্য মহোদয় প্রক্টরকে বলার পরেও প্রক্টর বহিষ্কৃতদের নাম প্রকাশ না করে যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন তাতে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরকে ধিক্কার জানিয়েছে। কোনোভাবেই প্রক্টরের মত দায়িত্বশীল জায়গায় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে এই ধরনের প্রতারণা কাম্য নয়। যার দায়ভার সম্পূর্ণ প্রক্টরের। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সন্দেহের দানা বেঁধেছে এবং শিক্ষাথীরা সরিষার ভেতরে ভূত দেখতে পাচ্ছে। বহিষ্কৃতদের নাম প্রকাশ না করা ইতিমধ্যেই জালিয়াতদের রক্ষার কৌশল হিসেবে শিক্ষার্থীরা বুঝে গেছে। শিক্ষার্থীদের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে এই জালিয়াতির সাথে প্রক্টর কোনোভাবে সম্পৃক্ত কিনা?
এতে আরও বলা হয়, আগামী ৫ দিনের মধ্যে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ করার মাধ্যমে সকল প্রশ্নের অবসান ঘটাতে হবে। অন্যথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানে কিভাবে ন্যায্যতা আদায় করে নিতে হয় এবং প্রয়োজনে শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অফিসে তালা ঝুলাতে বাধ্য হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সিন্ডিকেট সভায় ৬৭ জন শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে তাদের নাম প্রকাশ করেনি প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, এই প্রক্রিয়া অনেক জটিল। সবকিছু চাইলেও করা সম্ভব হয় না।