তীব্র শীতে ঝরে পড়ে গাছের পাতা। অঙ্কুরিত হয় নতুন কুঁড়ি। ফুল ও মুকুল আসতে শুরু করেছে গাছের প্রতিটি ডালে ডালে। প্রকৃতির এমন রূপ বদল দেখে মনে হচ্ছে নতুন ঋতুর আগমন ঘটছে। শুষ্কতা কাটিয়ে প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে এক নতুন প্রাণ। চারপাশে কোকিলের ‘কুহু-কুহু’ গানে জানিয়ে দিচ্ছে ‘বসন্ত এসে গেছে’।
বসন্তের প্রথম দিনে ফাল্গুনী উৎসবে রঙিন হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ডালিয়া, জিনিয়া, কসমস, গাদা, দোপাটি, চামেলিসহ নানান রঙের বাহারি ফুলের সুবাসে মুখরিত চারপাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ চত্বরে সকাল থেকে দল বেঁধে আসতে থাকে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী মানুষ। বাসন্তী রঙের বাহারি সাজে ফাল্গুনকে বরণ করে নিচ্ছে তারা। যেদিকে চোখ যাচ্ছে হলুদ, সবুজ ও লালে ছেয়ে গেছে চারপাশ।
শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় দুপুরের পর চারুকলায় বসন্ত উদযাপনে প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় বেড়েছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান ও নৃত্যের তালে তালে বসন্তকে অভিবাদন জানান শিল্পীরা। তরুণীদের পরনে হলুদ শাড়ি, মাথায় এক গোছা ফুলের মালা। রঙিন পাঞ্জাবি পড়ে প্রিয় মানুষের হাত ধরে হাঁটছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা চত্বর, প্যারিস রোড, জোহা চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায়।
বসন্ত বরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন বিভাগ। ঐতিহ্যবাহী পিঠা, শাড়ি-পাঞ্জাবি, হাতের কাজ করা শিল্পকর্মের দোকান দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকে।
এছাড়া চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা প্রতিবারের মতো এবছরও বিভিন্ন শিল্পকর্মের প্রদর্শনী, যাত্রাপালা, পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষার্থী আইরিন সুলতানা বলেন, ‘এটি একটি সর্বজনীন উৎসব। আমি দুপুরের একটু পর বের হয়েছি। বসন্তের শাড়ি পরে ফুল দিয়ে সেজে চারুকলা চত্বরে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করেছি। সবাই মিলে গান শুনলাম, নৃত্য দেখলাম, ছবি তুললাম।’
রাজশাহী নগরীর উপশহর থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসব দেখতে আসি পরিবার নিয়ে। অনেক দিন পর পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে এসে বেশ ভালো লাগছে। এখানে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছি। শিক্ষার্থীদের তৈরি পিঠা খাচ্ছি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখলাম বেশ ভালো লাগছে।