জনপ্রিয় লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল আক্ষেপ করে বলেছেন, আমাদের সময় শিক্ষাজীবন অনেক আনন্দের ছিল। তিন বছর পড়াশোনা করে আমরা একবার পরীক্ষা দিতাম। প্রথম তিন বছর কোনো লেখাপড়া-পরীক্ষা ছিল না।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় আসতাম, ঘুরতাম, চা খেতাম, গল্পগুজব করতাম। সে তুলনায় আজকের ছেলে-মেয়েদের জীবনে অনেক কষ্ট। তাদের অনেক পড়াশোনা করতে হয়, অনেক ধরনের পরীক্ষা দিতে হয়।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ফিজিক্স অলিম্পিয়াড উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন জাফর ইকবাল।
মঞ্চে উঠেই চিরায়ত হস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিমায় তিনি বলেন, আমি যখন এই রুমটাতে (কার্জন হল অডিটোরিয়াম) ঢুকেছি, সাথে সাথে আমার ভয় লাগতে লাগল। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করে বললেন—কারণটা কী কেউ বলতে পারো?
সমস্বরে শিক্ষার্থীরা কিচিরমিচির শব্দে কী যেন বলল। আবার জাফর ইকবাল বললেন, তোমরা ঠিকই বলেছ, কিন্তু আমি শুনতে পাইনি। আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ফিজিক্স বিভাগে পড়াশোনা করেছি। এই যে হলটা দেখছ, এই হলটা ছিল আমাদের পরীক্ষার হল। এখানে এসে আমাদের পরীক্ষা দিতে হত বুঝেছ? ঢুকেই মনে হচ্ছে পরীক্ষা বুঝি আবার দিতে হবে।
পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পদ্ধতির সমালোচনা করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, অনেক শিক্ষার্থীর ধারণা পড়াশোনা করে যদি গোল্ডেন জিপিএ-৫ না পাওয়া যায় তাহলে জীবন বৃথা। লেখা পড়ার সাথে জিপিএ-৫ এর কোনো সম্পর্ক নাই।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জাফর ইকবাল বলেন, জিপিএ-৫ তো এমনিতেই আসবে। জিপিএ-৫ এর জন্য না, আমরা পড়াশোনা করব শেখার জন্য।
এ সময় মানুষের শরীরকে নক্ষত্রের অংশ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তোমরা সবাই নক্ষত্রের অংশ। যে মানুষের শরীরে নক্ষত্রের অংশ আছে, সে মানুষকে ছোট বলা যাবে না। তোমরা কেউ ছোট না।