ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (২ মার্চ) দুপুরে ক্যাম্পাসের ঝাল চত্বর এবং অনুষদ ভবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ওই ছাত্রী প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রী সোমবার (৩ মার্চ) বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বরারব একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী সুইটি (ছদ্মনাম) আইন ও ভুমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তুষারকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাল চত্বরে হাঁটছিলেন।
এসময় তুষারের সহপাঠী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শারমিন সাথী, অনন্যা নারগিস, তাজমীন নাহার ও জান্নত-ই-কাওনাইন মাকনুন তাদের দু’জনের পথরোধ করেন। এসময় সুইটি (ছদ্মনাম) কেন তুষারের সঙ্গে ঘুরছে? এ নিয়ে সুইটিকে (ছদ্মনাম) তারা বারবার জেরা করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে তারা সুইটির (ছদ্মনাম) ওপর চড়াও হন এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকেন। পরে তুষার সুইটিকে (ছদ্মনাম) নিয়ে অনুষদ ভবনের সামনে আসলে সেখানেও তারা আবার সুইটিকে গালি-গালাজ, হুমকি ও এমনকি তারা তাকে মারধর করতে উদ্বুদ্ধ হন।
এসময় তারা হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুই ক্যামনে ক্যাম্পাসে পড়িস দেখে নিবো। সোস্যাল ওয়েল ফেয়ার বিভাগ আমাদের কিছুই করতে পারবে না।’ একপর্যায়ে সুইটি (ছদ্মনাম) আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বমি করে। পরে তাকে সেখান নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে তার মেসে পাঠিয়ে দেন তুষার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তুষার বলেন, ‘আমার ওদের সঙ্গে (অভিযুক্ত ছাত্রীদের) কোন রকম শত্রুতা নেই। তারা কেন এমন উগ্র আচরণ করেছে তা আমি জানি না। আমি বাধা দিলেও তারা আমাকে উপেক্ষা করে তার ওপর নির্যাতন চালায়।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুইটি (ছদ্মনাম) বলেন, ‘তারা (অভিযুক্ত ছাত্রীরা) আমাকে ক্যাম্পাসে আসার ব্যাপারে হুমকি দিয়েছে। আসলে আমাকে দেখে নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এর পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনও করেছে। এ নিয়ে আমি খুব আতংকে আছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ছাত্রীদের মধ্যে জান্নত-ই-কাওনাইন মাকনুনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ বিভাগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘র্যাগিং এর বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রক্টরের কাছে সেটি হস্তান্তর করেছি। প্রক্টর বিষয়টি দেখছেন। সব কিছু যাচাই-বাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’