ক্লাস-পরীক্ষার দাবিতে অনশনে শাবিপ্রবি’র পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা

, ক্যাম্পাস

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 16:49:54

 

ক্লাস-পরীক্ষা চালুর দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১১ শিক্ষার্থী।

বুধবার (১১ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে একাডেমিক ভবন ‘এ’ এর সামনে ১১ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। এছাড়া বিভাগের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

জানা যায়, বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৪ মার্চ বলা হয় ‘পরবর্তী নিদের্শ না দেয়া পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সকল ক্লাস, টার্ম টেস্ট ও পরীক্ষা বিভাগের সকল শিক্ষকের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্ধ থাকবে।’ কিন্তু কি কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে এ নিয়ে কিছু বলা হয়নি বিজ্ঞপ্তিতে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বেগম বলেন, ‘ওরা বিভাগের শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। অসৌজন্যমূলক আচরণের পরেই বিভাগের সাধারণ সভা ডেকে সর্মস্মতিক্রমে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করা হয়। এ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিদ্রুত তদন্তের রিপোর্ট প্রদান করা হবে।’

ক্লাস-পরীক্ষা চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘঠিয়েছে এখন আমরা তদন্ত না করে কিভাবে ক্লাসে যাবো?’

এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৩০তম বছর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত নৈশভোজ অনুষ্ঠানে বিভাগীয় প্রধান ও বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টার উপস্থিতিতে বহিরাগত এক ব্যক্তি একজন স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করেন। উক্ত ব্যক্তি সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষক এবং বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শামছুন নাহার বেগম-এর স্বামী। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগ বরাবর ৪ দফা দাবি পেশ করে। কিন্তু দাবিগুলোর কোন সুরাহা না করেই গত ৪ মার্চ বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর সংবলিত একটি নোটিশের মাধ্যমে উপযুক্ত কোনো কারণ না দেখিয়েই বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ক্লাস-পরীক্ষা চালুসহ ৪দফা দাবি মেনে না নিলে এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমার কাছে আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যা নিয়ম নেই তা তো শিক্ষার্থীরা হাতে তুলে নিতে পারে না। ওদের তালিকা থেকে বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা কেন নিয়োগ দিতে হবে। এটা কি ছাত্রদের কাজ? তাছাড়া বিভাগের অনেক সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ রয়েছেন ছাত্রদের এমন একটি অনশনের পর্যায়ে যাওয়ার আগে শিক্ষকদের সাথে কথা বলার দরকার ছিল। তবে, শিক্ষকদের ক্লাসে যাওয়া উচিৎ। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করা ঠিক নয়।’

যোগাযোগ করলে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটিয়েছে। শিক্ষকরা অপমানিত, তাদেরকে যদি সম্মানটুকু না দেওয়া হয় তাহলে তারা কিভাবে ক্লাসে ফিরে যাবে। তাদের তো আত্মসম্মান বোধ আছে। বিভাগ তদন্ত কমিটি করেছে তারা দেখবে এর সাথে কারা জড়িত আছে। সুষ্ঠু তদন্ত দ্রুত করার জন্য আমি তাদের অনুরোধ করেছি।’

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত তালিকা থেকে ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগ, বিভাগের প্রধান ও ছাত্র উপদেষ্টাকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ব্যাচের একাডেমিক কর্মকান্ডে না রাখা এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য বিভাগের প্রধানকে ছাত্রদের নিকট জবাবদিহি করা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর