টাকা না দিলে স্বাক্ষর মিলে না!

বিবিধ, ক্যাম্পাস

হারুনুুর রশিদ, জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 03:38:47

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে টাকা না দিলে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর মিলে না। শিক্ষার্থীদের যে কোনো স্বাক্ষর নিতে একশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হয়। রশিদ কেটে টাকা নেওয়ার এই প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের পরিপন্থী।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অবগত নন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী টাকা দিতে অস্বীকৃতি করায়, সাবেক এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে তাকে পিটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।

টাকা নেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, এভাবে টাকা নেওয়ার কার্যক্রম আগে কখনো ঘটেনি। এ বিষয়ে আমি বিভাগের চেয়ারম্যানকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করবো এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, এভাবে টাকা নেওয়ার প্রক্রিয়া এবারই প্রথম দেখলাম।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যান ড. আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে যে কোনো বিষয়ে স্বাক্ষর নিতে গেলে একশ থেকে তিনশ টাকা বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় চেয়ারম্যানের ভয়ে ইতোপূর্বে মুখ খুলতেন না। গত রোববার ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী শামিম মাহমুদ বিভাগে ভিত্তির দরখাস্ত জন্য গেলে তাকে একশ টাকা বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে বলে। ব্যাংকে টাকা জমার রশিদ দেখালে বিভাগীয় চেয়ারম্যান তার দরখাস্তে স্বাক্ষর করেন। এরপর গতকাল সোমবার ২০১৩-১৪ সেশনের আরেক শিক্ষার্থী আবু তৈয়ব সার্টিফিকেট সংশোধনের জন্য আবেদন পত্রে বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য গেলে তাকে তিনশ টাকার ব্যাংক রশীদ ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সংবাদ পেয়ে সাংবাদিকরা বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের সাথে রূঢ় আচরণ করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমি তোমাদের কাছে জবাব দিতে বাধ্য নই। সাংবাদিক হলেই তোমাদের সব বলতে হবে না। আমার রুম থেকে বের হয়ে যাও। আমি এই কাগজে স্বাক্ষর করবো না। টাকা দিলেও করবো না, না দিলেও করবো না। কোন খাতে এই টাকা নেওয়া হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডোন্ট আরগু উইথ মি, গেট আউট অফ মাই রুম’।

এরপর বিভাগ থেকে ওই শিক্ষার্থী (আবু তৈয়ব) বের হয়ে আসার পর, বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী সালমান তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়া করার হুমকি দেন। এই সালমান বিভাগের শিক্ষক হওয়ার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে দীর্ঘদিন থেকে লবিং-তদবির করে আসছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর