করোনা আতঙ্কে শহর ছেড়েছে মানুষ। ব্যস্ত শহর ঢাকায় নেই যানজট, রাস্তাগুলো ফাঁকা। চিরচেনা ঢাকার রূপ পাল্টে গেছে মুহূর্তেই। এ যেন এক ভুতুড়ে শহর। সেই শুনশান নিরব শহরে পেটের দায়ে রয়ে গেছে কতগুলো খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের ঘর নেই, বাড়ি নেই, এ শহর ছাড়া মাথা গোজার জায়গাও নেই। এ মানুষগুলোর কাছে নির্ভার একটি নাম হয়ে ওঠেছেন সৈকত।
গত ২৪ মার্চ থেকে খেটে খাওয়া মানুষদের স্বল্প পরিসরে নিত্যপণ্য দিয়ে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) এ সদস্য।
প্রথমে নিজের অর্থে, পরে বন্ধু-বান্ধব ও বড় ভাইদের সহযোগিতায় ৫০ জন শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ বিতরণ করছেন সৈকত ও তার কয়েকজন বন্ধু।
দিন বাড়ার সাথে সাথে সাহায্যের পরিসর ও বাড়িয়ে চলেছেন তারা। ৫০ থেকে ১০০, এখন সেটা উন্নীত হয়েছে ৫০০ শ্রমজীবী মানুষে।
এদিকে এতোদিন নিত্যপণ্য দিলেও সম্প্রতি সৈকতরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, খেটে খাওয়া, ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে 'রান্না করা' খাবার বিতরণ করবেন। ৫০০ জন করে দু'বেলায় মোট এক হাজার মানুষের মধ্যে এ খাবার বিতরণ করবেন তারা।
সৈকত বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতিদিন ১০০ দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ও রাতে ৫০০ ছিন্নমূল ভাসমান মানুষের জন্য রান্না করা খাবার বিতরণ করে আসছি। ইতোমধ্যে সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে অনেকেই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন ভাসমান ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। তাদের অনেকের পরিবার বা রান্না করার ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পরিশ্রম বেশি হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা দুপুর ও রাত দুই বেলায় ৫০০ করে প্রতিদিন এক হাজার ভাসমান মানুষকে রান্না করে খাওয়াব, যোগ করেন সৈকত।
এসময় তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, আপনারা সহযোগিতা করেন বলেই আমরা পারি। পূর্বের ন্যায় আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে, এটাই কাম্য।