বিশ্ব নদী দিবসে 'তিতাসের আত্মকথা'

, যুক্তিতর্ক

শামীমুল হক | 2023-08-29 03:05:08

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব নদী দিবস। এদিনে মনে পড়ে স্মৃতি, শৈশব ও সত্ত্বার প্রিয়নদী তিতাসকে। অদ্বৈত মল্লবর্মনের 'তিতাস একটি নদীর নাম' সাহিত্যের ধ্রুপদ অঙ্গন পেরিয়ে ঐতিহাসিক মর্যাদায় ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্রে অম্লান হয়ে আছে। অনাদিকালের তিতাস এখন কেমন আছে, সে ছবিই আবেগ আর বাস্তবতায় উপস্থাপিত হয় প্রতিদিনই, শুধু নদী দিবসে নয়।

এখনো চলছে বৃষ্টি। ফলে তিতাসের পূর্ণ যৌবন। তীর উপচে তিতাস তার আয়তন বাড়িয়েছে আশ পাশের গ্রাম পর্যন্ত। চারদিকে পানি আর পানি। এ পানিতে জেলেরা ধরছে মাছ। হাজারো মানুষ নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এখান থেকে সেখানে। কেউ কেউ তিতাসের জলে গা ভিজিয়ে নিচ্ছে। শরীরে মেখে নিচ্ছে তিতাসের শীতল পানির পরশ। এ এক অন্যরকম অনুভূতি। তিতাসের এই ভরা যৌবনের হৃদয় ছোঁয়া বর্ণনা নদীর ভাষায় তুলে ধরেছেন বহু কবি, সাহিত্যিক। জন্ম থেকে আমি তিতাসকে দেখতে দেখতে তিতাসের ভাষায় বলতে চেষ্টা করছি নদীর নিজস্ব আনন্দ-বেদনার অব্যক্ত কথাগুলো:

আমার বুক জুড়ে হাহাকার। হৃদয় ভেঙে চৌচির। শরীর জ্বলছে দাউ দাউ আগুনে। এ সবই ভালবাসার প্রতিদান। আমি কাঁদছি। চিৎকার করে কাঁদছি। কেউ আমার কান্না শোনে না। ভালবাসার প্রতিদান বুঝি এভাবেই পেতে হয়? পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ আমাকে জেরবার করে দিয়েছে। অথচ কি না করেছি এ মানুষের জন্য? জীবন, যৌবন সবই দিয়েছি। শুধু কি তাই? না আরও আছে। সবই বলব আজ। এর আগে আমার নিজের কথা একটু বলতে চাই। হে মানুষ, তোমরা শোন কান দিয়ে। আমি কি ছিলাম। কি আছি। আমার উত্থান-পতনের সাক্ষীতো তোমরাই। তোমাদের হৃদয়ে কি একটুও দয়া হয় না আমার জন্য? মৃত্যুর দুয়ারে এসেও তোমাদের দিয়ে যাচ্ছি। আমার যা আছে তাই তোমরা চুষে নিচ্ছ। তারপরও আমার দিকে তোমাদের নজর নেই। থাকবেই বা কেন? আমি যে মানুষ নই। আমি যে স্বার্থপর নই তোমাদের মতো। আমিতো হলাম গাঙ। নদী। তিতাস আমার নাম। আমাকে নিয়ে তোমরা গল্প, উপন্যাস লিখেছো। বানিয়েছো চলচ্চিত্র। অদ্বৈত মল্ল বর্মণ আমাকে নিয়ে লিখে বিখ্যাত হয়েছে। কবি আল মাহমুদ তার কবিতায়ও আমায় মনে করেছে। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ তার সুরের লহরি তুলেছে আমারই তীরে বসে। ঋত্বিক ঘটক যে তিতাস দেখেছিলেন, দেখিয়েছিল, সেই তিতাস আজ কেমন আছে? তা জানতেও কি তোমাদের মন চায় না? ১২০ কিলোমিটার আমার ব্যাপ্তি। এ বিশাল এলাকায় আমি বিলিয়েছি আমার মিষ্টি পানি। আমার হৃদয় ছিদ্র করে দেয়া গ্যাস সারা বিশ্বে পরিচিত করেছে বাংলাদেশকে। বড় কষ্ট হয় আজ। যুগ যুগ পর সাম্প্রতিক সময়ে এসে তিতাস গ্যাসকে বিলুপ্ত করে বাখরাবাদের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। কি দোষ ছিল আমার? তিতাস গ্যাস নাম থাকলে কার এমন ক্ষতি হতো? ওই যে ত্রিপুরার মালামাল বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাবে। এজন্য আমি ছিলাম বাধা। কি করলে তোমরা। আমার বুকে দিলে বাঁধ। আমি নদী থেকে হয়ে গেলাম খাল। হায়রে নিয়তি। আমার পানি দিয়ে যেসব কৃষক হালচাষ করতো তাদের কান্না দেখে আমিও না কেঁদে পারিনি। মরুভূমির উপক্রম হয়েছিল ওইসব এলাকা। ক’দিন আমার বুকের ওপর দিয়ে চলেছে ৪০ চাকার ডাউস সাইজের ট্রাক। কিচ্ছু বলতে পারিনি আমি। আমার চোখ দিয়ে পানি নয়, রক্ত ঝরেছে। তবুও নীরব ছিলাম। একটা সময় ছিল, আমার পানির সঙ্গে খেলা করে কত যে লঞ্চ, স্টিমার চলেছে এর ইয়ত্তা নেই। নববধূ গোমটা দিয়ে আসত আমার পানি নিতে। আমার তীর ঘেঁষে ছিল কত যে বন্দর আর বাজার। লঞ্চ ঘাটে বসত মেলা। আজ এ সবই ইতিহাস। এই যে বছর কয়েক আগে বাংলাদেশ রেলওয়ে আমার নামে চালু করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা কমিউটার ট্রেন। কুমিল্লায় হয়েছে নতুন থানা। আরও আছে। সবই বলবো তোমাদের। এর আগে আমার জন্ম কাহিনী একটু বলতে চাই। আমার উৎপত্তি অন্য কোন দেশে নয়। মেঘনা থেকে উৎপত্তি হয়ে আমি আবার সেই মেঘনায় মিশেছি। মাঝখানে আমার বেশ ক’টি শাখা প্রশাখাও আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার আজবপুরের কাছে মেঘনা নদী থেকে আমার উৎপন্ন। আর শেষ হয়েছে নবীনগর থানার মনতলায়। সেখানে গিয়ে সেই মেঘনায় মিলিত হয়েছি। মাঝখানে সদর থানার চান্দুরা গ্রামের উত্তরে এসে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে অগ্রসর হই। শহরের কাছাকাছি এসে আবার পূর্ব দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে আখাউড়া রেল জংশনের দক্ষিণে এসে উত্তর-পশ্চিম মুখে গোকর্ণঘাট হয়ে নবীনগর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে গিয়ে মনতলায় গিয়ে থামি। আমার মূল পথ ছাড়াও আরও অনেক শাখা আছে। এর মধ্যে অন্যতম সালদা, বুড়ি, ঘুঙ্গুর, সোনাই, মাজোরা, লোহাড় সালিয়াজুড়ি, পাগলি অন্যতম। আমি তোমাদের এ মুহূর্তে অদ্বৈত মল্ল আমাকে নিয়ে কি লিখেছে এর একটু বিবরণ দেই। তাহলে আমার সম্পর্কে তোমাদের আরও স্বচ্ছ ধারণা হবে। তিনি লিখেছেন-“ ঝরনা থেকে জল টানিয়া পাহাড়ি ফুলেদের ছুঁইয়া ছুঁইয়া উপল ভাঙিয়া নামিয়া আসার আনন্দ কোনকালে যে পায় নাই। অসীম সাগরের বিরাট চুম্বন আর বিলানের আনন্দও তার কোনকালে ঘটবে না। দূরন্ত মেঘনা নাচিতে নাচিতে কোনকালে কোন অসতর্ক মুহূর্তে পা ফসকাইয়াছিল বা তীরটা একটু মচকাইয়া গিয়া ভাঙ্গিয়া যায়। স্রোত আর ঢেউ সেখানে প্রবাহের সৃষ্টি করে। ধারা সেখানে নরম মাটি খুঁজিয়া, কাটিয়া, ভাঙিয়া, দুমড়াইয়া পথ সৃষ্টি করিতে থাকে। এক পাকে শত শত পল্লী দুই পাশে রাখিয়া অনেক জঙ্গল, অনেক মাঠ, ময়দানের ছোঁয়া লইয়া ঘুরিয়া আসে। মেঘনার গৌরব আবার মেঘনার কোলেই বিলীন হয়ে যায়। এই তার ইতিহাস। অদ্বৈত আরও লিখেছেন- পল্লী রমণীর কাঁকনের দুই মুখের মধ্যে যেমন একটু ফাঁক থাকে তিতাসের দুই মুখের মধ্যেও রহিয়াছে তেমনি একটু খানি ফাঁক। কিন্তু কাঁকনের মতোই তার বলয়কৃতি। কি বুঝলে তোমরা?

এবার আমার কথা শোন- ভাবলাম ব্রাহ্মণবড়িয়া যখন আমাকে ঠাঁই দিয়েছে তাহলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্যতো কিছু করতে হয়। আমার তলদেশে আছে গ্যাসের নহর। ভাবলাম জানান দেই সবাইকে। একদিন কূল উপচাইয়া গ্যাসের উদগীরণ জানান দিলাম। চারদিকে রব ওঠে গেলো। দেশী বিদেশী বিশেষজ্ঞরা এলো। আমার হৃদয় ছিঁড়ে তুলে আনল গ্যাস। নাম দিলো তিতাস গ্যাস। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ঢুকতে মেড্ডার পূর্ব দিকে তাকালে দেখা যাবে গ্যাস ফিল্ড। এ ফিল্ডে দিনরাত গ্যাস পুড়ছে। আর আমার হৃদয় ছেঁড়া ধন এই গ্যাস সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে। দুঃখ কোথায় জান? দীর্ঘদিন পর এসে তোমরা আমার অস্তিত্ব বিলিয়ে দিলে বাখরাবাদের কাছে। লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে আছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছি না। তারপর আমার তীর একের পর এক দখল করে আমাকে বিশাল থেকে একেবারে সরু করে দিলে। মাঝে মাঝে ভরাট করে তোমারা দখল করেছো আমাকে। তীর ঘেঁষে বানিয়েছ নানা কল কারখানা। যার দূষিত পদার্থ আমার পেটে ঢেলে দিচ্ছ। আমি ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছি বিষে। এতটুকুই সান্ত¡না- ভালবাসার প্রতিদান হয়তো এভাবেই পেলাম। আর মনে মনে অদ্বৈত আর ঋত্বিক ঘটককে গালি দিচ্ছি। তোমরা কেন আমাকে নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি করলে? অথচ একদিন আমার রূপ যৌবন দেখে আমার তীরেই রাজপ্রাসাদ করেছিল হরিপুরের জমিদার। যা এখনও হরিপুর বড়বাড়ি বলে ডাক তোমরা। এ বাড়ি থেকে সুন্দর করে সাজিয়েছিল আমার ঘাট। শান বাঁধানো এ ঘাঁট এখনও সাক্ষী হয়ে আছে। হরিপুর বড়বাড়ি এখনও দাঁড়িয়ে আছে আমার তীর ঘেঁষে। কিন্তু সেই জমিদারের বংশধর কেউ নেই। হয়ত আমার এমন রূপ দেখবে বলেই তারা আগেভাগে চলে গেছে। এখানে মনে পড়ছে অদ্বৈত মল্ল বর্মণের আরও কয়েকটি কথা। যা তিনি লিখে গেছেন তার তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসে। তিনি লিখেছেন, মেঘনা-পদ্মার বিরাট বিভীষিকা তার মধ্যে নেই। আবার রামু মোড়লের মড়াই, যদু পন্ডিতের পাঠশালার পাশ দিয়ে বহিয়া যাওয়া শীর্ণ পল্লী তটিনীর চোরা কাঙ্গালিপনাও তার নেই। তিতাস মাঝারি নদী। দুষ্টু পল্লী বালক তাকে সাঁতরাইয়া পার হতে পারে না। আবার ছোট নৌকায় বউ নিয়ে মাঝি কোন দিন ওপারে যেতে ভয় পায় না। তিতাস শাহী মেজাজে চলে। তার সাপের মতো বক্রতা নেই। কৃপণের মতো কুটিলতা নেই। কৃষ্ণ পক্ষের ভাটায় তার বুকের খানিকটা শুষিয়া নেয়। কিন্তু কাঙাল করে না। শুল্কপক্ষের জোয়ারের উদ্দীপনা তাকে ফোলায় কিন্তু উদ্বেল করে না। হ্যাঁ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর সুখ দুঃখের অংশীদার আমি। আর তাই আমার যৌবনের পড়ন্ত সময় এখন। আমার কূল জোড়া জল নেই। বিশালাকার ঢেউ আর এখন আছড়ে পড়ে না আমার বুকে। প্রাণভরা উচ্ছ্বাস নেই। এখন আর আগের মতো শুনিনা মাঝিদের গলা ফাটা গান “তুই যদি আমার হইতিরে বন্ধু, আমি হইতার তোর/ তোরে লইয়া ঘুরতাম আমি দেশ দেশান্তর....। এখন বুঝি আমি কারও চাহিদা মেটাতে সক্ষম নই। না জেলে, না জলে। এক সময় আমাকে নিয়ে গর্ব করা হতো। বলা হতো তিতাসের জল যত মাছ তত। আর তীরে জমিতে ফসলের উৎপাদন সেকি কল্পনা করা যায়? প্রবীণদের এসব কথা এখন আর এ যুগের ছেলেরা বিশ্বাস করতে চায় না। আর বিশ্বাস করবেইবা কেন? ওরা কি আমার যৌবন দেখেছে? ওরা এখন দেখছে পলি ভরাট এক তিতাস। নাব্যতা হ্রাস পেয়ে এখন সাধারণ নৌকাও চলে না। অথচ এক সময় আমাকে ঘিরে সাজ সাজ রব ছিল বর্ষায়। নাও দৌড়ানি হতো আমার বুকে। হাজারো মানুষের কলকলানিতে আমি উদ্বেলিত হতাম। কৃতজ্ঞতা জানাতাম। নৌকা বাইচ নিয়ে কত যে লঙ্কাকাণ্ড হয়েছে আমার তীরে। তবে অনেক ঘটনা আমাকে মর্মাহত করেছে। ৮০-এর দশকের শেষ দিকে শাহবাজপুরের ব্রিজ নতুন করে তৈরি হচ্ছিল। ওই সময় কিছু দিনের জন্য দেয়া হয়েছিল ফেরি। স্বাধীনতা যুদ্ধেও আমার অবদান কম ছিল না। সে সময় কত মুক্তিযোদ্ধাকে যে আমি ঠাঁই দিয়েছি আমার বুকে এর ইয়ত্তা নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ই শাহবাজপুরের ওই ব্রিজটি ভেঙ্গে দিয়েছিলাম। বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী যাতে পারাপার না হতে পারে। এতে অনেক উপকার হয়েছিল। সেই ব্রিজটিই ৮০’র দশকের শেষ দিকে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছিল। একদিন ফেরিতে উঠতে গিয়ে একটি লোকাল বাস তলিয়ে যায় আমার তলদেশে। লাশের সারি জমেছিল সেদিন আমার তীরে। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল। আমিও সেদিন কেঁদেছি চিৎকার করে। নিজেকে ধিক্কার দিয়েছি কেন এমনটি ঘটতে গেল আমার পেটে। সে ঘটনায় একই পরিবারের ৭ জন নিহত হয়েছিল। এখনও সে কথা মনে হলে চোখের কোনে পানি জমে। তবে সবচেয়ে বেশি কাঁদায় যখন দেখি মাইলের পর মাইল আমাকে দখল করে স্বার্থান্বেষী মহল ইট সুরকি দিয়ে অট্টালিকা বানিয়েছে। আমাকে শীর্ণ থেকে আরও শীর্ণ করে দিচ্ছে। আমার বুকে শেষ পেরেকটি ঠুকেছে রাষ্ট্র। ভিনদেশের মালামাল আমার দেশের ওপর দিয়ে নেয়ার জন্য আমাকে করা হয়েছে ক্ষত বিক্ষত। স্থানে স্থানে বাঁধ দিয়ে আমার চলার গতিকে রুদ্ধ করেছে। অনেক রক্ত ঝরেছে আমার শরীর থেকে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। ৪০ চাকার গাড়ি যখন আমার উপর দেয়া বাঁধ দিয়ে হুড়মুড়িয়ে চলে গেছে তখন নিজেকে খুবই অসহায় মনে হয়েছে। শুধু নিজেকে ধিক্কার দিয়েছি। কেন আমি ভালবাসলাম এমনভাবে। যে ভালবাসার প্রতিদান দিতে হচ্ছে রক্ত দিয়ে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত এ বাঁধ ভাঙতে হয়েছে। মহাসড়ক করা হয়েছে। আমার বুকে পিলার বসিয়ে ব্রিজ বানিয়ে চলাচল করছে ভিনদেশী গাড়ি। কত কষ্ট হয় জানেন আপনারা? এই যে এখন বর্ষায় আমার পানি উপচে পড়ছে। আশপাশের জমি, গ্রামে প্রবেশ করেছে। আপনারা একে বন্যা বলছেন। কিন্তু এ বন্যাতো আমি নিজেই গিলে খেতে পারতাম। যদি না আমার যত্ন  নেয়া হতো। আমার তলদেশ সময়মতো ড্রেজার দিয়ে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হতো। এখনও সময় আছে। ইচ্ছা করলে আমার নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। হে তিতাস পাড়ের মানুষ আমিতো অপেক্ষায় আছি। আবারও আগের মতো আপনাদের সেবা দিয়ে যেতে। আমিতো চাই আমার বুক দিয়ে চলুক নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার। আমার পানিতে মাছ ধরে সংসার চালাক জেলে পরিবার। মাঝির সেই সুর আবারও বেজে উঠুক- সুজন বন্ধুরে... আরে ও... বন্ধু/ কোনবা দেশে থাক/ আমারে ছাড়িয়া বন্ধুরে/ কোন নারীর মন রাখো/ সুজন বন্ধুরে..।

শামীমুল হক: রম্যলেখক, সাংবাদিক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর