কী পাষণ্ড!

, যুক্তিতর্ক

আনিসুর বুলবুল | 2023-08-30 23:43:00

এক দিনের এক কন্যা শিশুকে গভীর রাতে ব্রিজের ওপর থেকে নিচের চরে ফেলে দেয়া হয়েছে। নিচে পড়ে শিশুটি ছটফট ছটফট করেছে। মাথা ফেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়েছে। আশ-পাশে কেউ ছিলো না যে এগিয়ে আসবে। এতটুকুন শরীর তার; কত জোরে আর কান্না করবে? তার কান্নার রোল মানুষের কানে গিয়ে পৌঁছায়নি আর। সকাল পর্যন্ত পোকা-মাকড়ে খেয়েছে। শিশুটি বাঁচতে চেয়েছিলো; সে তখনও বেঁচে ছিলো।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয়রা শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। ততক্ষণে শিশু নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা করে তাকে বাঁচিয়ে তুলতে। কিন্তু মাথার গুরুতর আঘাতের যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারেনি শিশু। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয় তাকে।

ঘটনাটি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের। গুণকরকাটি ব্রিজের ওপর থেকে বেতনা নদীর চরে ফেলে দেওয়া হয়েছিলো নবজাতকটিকে। 

কিছু ঘটনা বা কোনো মৃত্যু বুকের পাঁজর ভেঙে চুরমার করে দেয়; কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলা যায় না। এ ঘটনা এমনই একটি। 

যে বা যারা শিশুটিকে ফেলেছে তারা হয়তো ভেবেছে নবজাতকটি মারা গেছে। তবে ভাগ্যক্রমে শিশুটি জীবিত ছিল। মাথায় গুরুতর জখম হয় শিশুটির। কী পাষণ্ড! একবার বুকটা ধুক করে ওঠলো না? এতটুকুন বাচ্চাটাকে এভাবে ফেলা যায়? দয়া-মায়া-মমতা কিচ্ছু নাই?

দিন দিন আমাদের মনুষত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের নীতি-নৈতিকতাও। লোপ পাচ্ছে আমাদের ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতা। মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রেম-ভালোবাসা ও দয়া-মায়া ধীরে ধীরে নির্বাসিত হয়ে যাচ্ছে।

মানুষকে বিচার-বুদ্ধি ও বিবেকের জন্য অন্যান্য প্রাণী বা সব কিছু থেকে আলাদা করা হয়। কিন্তু মানুষ কি সবসময় তার বিচার, বুদ্ধি, বিবেক কাজে লাগায়? আমাদের প্রতিদিন কী পরিমাণ নৈতিক স্খলন, বিবেকের স্খলন হচ্ছে, তা কী আমরা ভেবে দেখি!

আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর