গুজবের সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক কারণ ও প্রতিরোধের উপায়

, যুক্তিতর্ক

ড. মতিউর রহমান | 2023-09-01 20:28:43

গুজবের আভিধানিক অর্থ ‘জনরব বা ‘ভিত্তিহীন প্রচার‘। ইংরেজিতে বলা হয় ‘রিউমার‘। এই ভিত্তিহীন প্রচার এতই শক্তিশালী যা যেকোনো সময় যে কোনো দেশে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনে। ইতিহাসে এর অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। সেই প্রাচীনকাল থেকে আজ অবধি গুজব দাপটের সাথেই প্রচলিত রয়েছে। সময়ের বির্বতনে গুজব ছড়ানোর ধরন পাল্টেছে কিন্তু এর পরিসমাপ্তি হয়নি। গুজব বা ভিত্তিহীন প্রচার নিয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করেছেন। এসব গবেষণা থেকে গুজব সংক্রান্ত অনেক অজানা তথ্য আমরা জানতে পারি।

বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে সমাজবদ্ধ বসবাস মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম। গোষ্ঠীবদ্ধ ও সমাজবদ্ধ হতে মানুষকে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে মানুষের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে। এই মিথস্ক্রিয়া সংগঠিত হয় সাংকেতিক চিহ্ন, প্রতীক ও ভাষার মাধ্যমে। একে অপরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ও কোনো বিষয়ে অভিন্ন মত গড়ে তুলতে, নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে ও সে অনুযায়ী সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ঘটনাবলী নিজেদের অনুকূলে নিতে মানুষের অব্যাহত প্রয়াস বা মিথস্ক্রিয়া সবসময়ই লক্ষ্যণীয়। সমাজবদ্ধ মানুষের স্বার্থ রক্ষার এই প্রয়াস কখনো কোনো গোষ্ঠীর অনুকূলে এবং অন্য গোষ্ঠীর প্রতিকূলে যায়। ফলে ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে, গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে, সমাজে ও রাষ্ট্রে  দ্বন্দ্বের উৎপত্তি হয়। এই দ্বন্দ্বের ফলে ও নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে তাদের পক্ষে জনমত গঠন করে স্বার্থ রক্ষায় লিপ্ত হয়। এই ধারা বহু পুরোনো এবং এখনো বর্তমান। পৃথিবীর সবদেশেই, সবকালেই এটা লক্ষ্যণীয়।

সুতরাং, গুজব অর্থ হলো, জনসাধারণের সম্পর্কিত যেকোন বিষয়, ঘটনা বা ব্যক্তি নিয়ে মুখে মুখে প্রচারিত কোন বর্ণনা বা গল্প। সমাজবিজ্ঞানের ভাষায়, গুজব হলো এমন কোন বিবৃতি যার সত্যতা অল্প সময়ের মধ্যে অথবা কখনই নিশ্চত করা সম্ভব হয় না। অনেক পন্ডিতের মতে, গুজব হল প্রচারণার একটি উপসেট মাত্র। সমাজবিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞান শাস্ত্রে গুজবের ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা পাওয়া যায়। গুজব অনেক ক্ষেত্রে “ভুল তথ্য”এবং  “অসঙ্গত তথ্য”এই দুই বোঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। “ভুল তথ্য” বলতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যকে বুঝায় এবং “অসঙ্গত তথ্য” বলতে ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা বুঝায়।

গুজবের সমাজতত্ত¡ ও মনস্তত্ত্ব নিয়ে বিদেশে অনেক একাডেমিক গবেষণা রয়েছে। অনেক বই লেখা হয়েছে। বাংলাদেশে এই ধরনের গবেষণার সংখ্যা খুবই কম। তবে  দেশি-বিদেশি পত্রিকায় এ সংক্রান্ত নিবন্ধ ও প্রতিবেদনের সংখ্যা অনেক। এ সব নিবন্ধ ও প্রতিবেদন থেকে গুজব সম্পর্কিত অনেক মূল্যবান তথ্য ও ধারণা পাওয়া যায়। ১৯৪৪ সালে প্রকাশিত রবার্ট এইচ নাপ “এ সাইকোলজি অব রিউমার“ প্রবন্ধে গুজবকে কেন ছড়ানো হয় অথবা গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্য কী তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ভ্রান্ত আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ছড়ানো গুজবকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন।। যেমন: ১. পিপ ড্রিম রিউমার: এটি মূলত ছড়ানো হয় ভালো কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে। এ শ্রেণির গুজবে- গুজব ছড়ানো ব্যক্তিটি চান গুজবটি যেন সত্য হয়। কারণ এ ধরনের গুজব ছড়ানোর পেছনে থাকে ভালো কোনো উদ্দেশ্য।; ২. ভগি বা ফিয়ার রিউমার: এটি সাধারণত ছড়ানো হয় সমাজে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে; ৩. ওয়েজ ড্রাইভিং এগ্রেশন রিউমার: মূলত এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয় প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়ে। গুজবের প্রাথমিক কাজ হল এমন একটা বিষয় যা নিয়ে মানুষের পরিষ্কার ধারণা নেই কিন্তু আগ্রহ আছে। গুজবে এ ধরনের তথ্যই বেছে নেয়া হয়, যেখানে মানুষকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ রয়েছে।

গর্ডন অলপোর্ট এবং লিও পোস্টম্যান ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত “দ্য সাইকোলজি অফ রিউমার” গ্রন্থে গুজব ছড়ানোর মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলো বর্ণনা করেছেন। এক. অনিশ্চিত পরিস্থিতি: পরিস্থিতি যখন অনিশ্চিত তখন মানুষ গুজব ছড়ায় বা গুজব ছড়ানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দুই. উদ্বেগ: মানুষ যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকে, তখনও গুজব ছড়ায় বা গুজবকে গ্রহণ করে। উদ্বেগের সাথে অনিশ্চয়তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যেসব মানুষের মধ্যে বেশি উদ্বেগ কাজ করে তারাই বেশি গুজব ছড়ায়। গবেষণায় এটাও দেখা গেছে যে খারাপ কোন ঘটনার গুজব ভালো কোন ঘটনার গুজবের চেয়ে দ্রুত ছড়ায়। তিন. তথ্যের গুরুত্ব: গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, অর্থাৎ রটনাকারী যখন জানে যে এই বিষয়ে তথ্যগুলো মানুষ জানতে চায় অর্থাৎ তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তখনই তা ছড়ায়। আর যারা গুজব ছড়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা সেটা বিশ্বাস করে বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানীরা। চার. অস্পষ্টতা: কোন বিষয় বা তথ্য সম্পর্কে মানুষের স্পষ্ট ধারণা না থাকলে মানুষ গুজবে কান দেয়। পাঁচ. নিজের ভাবমূর্তি রক্ষা: মানুষ তাদের ভাবমূর্তির সাথে যায় এমন তথ্যে বিশ্বাস করে এবং সেই গুজবকে সত্য বলে ধরে নেয়। ছয়. ভালো লাগা: অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ নিজেদের ব্যাপারে ভালো অনুভব করতে চায় এবং সেই জায়গা থেকে গুজব রটায়। সাত. প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে: গবেষকেরা বলছেন অন্যকে নিচু করতেও গুজব রটানো হয়। আট. দৃঢ় সামাজিক অবস্থান: সামাজিক অবস্থানকে শক্ত করতেও অনেকে গুজবের আশ্রয় নেয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

তবে গুজবের প্রকারভেদে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ তা বিভিন্নভাবে গ্রহণ করে। অর্থাৎ ব্যক্তিমানসিকতা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কে বা কারা গুজব ছড়াচ্ছে তার বা তাদের ব্যক্তিত্ব, সামাজিক অবস্থানের উপর গুজবের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে। গবেষণার ফলাফল বলছে, কিছু কিছু গুজব নির্দিষ্ট কিছু দলের মানুষের মাধ্যমে দ্রুত ছড়ায় কারণ তারা হয়ত কোন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল, ধর্ম, মতামতের উপর বিশ্বাস করে এবং ওই সংক্রান্ত যেকোন গুজবকে বিশ্বাস করে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, একটি নির্দিষ্ট গুজব তখনই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যখন মানুষের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির সাথে তা মিলে যায়। এ কারণে একই গুজব গ্রামাঞ্চলে যতটা দ্রুত ছড়ায় শহরে হয়ত ততোটা ছড়ায় না। তারা আরো বলেন, অনগ্রসর সমাজ ও রাষ্ট্রে গুজব বেশি ছড়ায়। কারণ এসব সমাজে জনসাধারণের শিক্ষার হার কম এবং সঠিক তথ্য প্রাপ্তিরও ঘাটতি রয়েছে। সুতরাং সংবেদনশীল কোনো বিষয়ে গুজব ছড়ানো এইসব সমাজে সহজ হয়।

অনেকের জন্য গুজব ছড়ানো বা পরচর্চা করা একটি পছন্দের কাজ। যে কাহিনীর মধ্য দিয়ে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কে মানুষের ধারণা পাল্টে যেতে পারে, সেটি গুজব হিসেবে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। বিখ্যাত ব্যক্তি ছাড়াও মানুষ নিজেদের বন্ধুবান্ধব সম্পর্কেও গুজব ছড়ায়। চেনা মানুষ, তারকা এবং বিখ্যাত কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে গুজব ছড়ানোর কাজ অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু মানুষ কেন গুজব ছড়ানোর প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে না, সেটিই গবেষণার বিষয় হওয়া উচিত বলে অনেকে মনে করেন।

অপরদিকে যে সমাজে আবেগ ও বিশ্বাস প্রবণতা বেশি; গুজব বা জনরব সেই সমাজে বেশি ছড়াই। বাংলাদেশের মানুষ প্রচন্ড আবেগ ও বিশ্বাস প্রবণ। শোনা কথা ও ধারণাপ্রসূত কথা শোনা ও বলায় তাদের আগ্রহ অনেক বেশি। আর এই অতি আগ্রহের কারণে গুজব ছড়ানো অনেক সহজ হয়। বিভিন্ন স্বার্থাণ্বেষী মহল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করতে চায়। বাংলাদেশে ছড়ানো এধরনের গুজবের সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। গুজবের ফলে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা প্রায়শ সংঘঠিত হয়।

গুজব ছড়ানোর মাধ্যমেরও পরিবর্তন হয়েছে। আগে মানুষ মুথে মুখে গুজব ছড়াতো। এখন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়। গুজব ছড়ানোর সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিশেষ করে ফেসবুক গুজব ছড়ানোর অন্যতম প্ল্যাল্টফরম হয়ে ওঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন যে সমাজে গণমাধ্যম মুক্তভাবে কাজ করেনা সেখানে গুজব ছড়ানোর বিকল্প হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তারা আরো বলেন, লোকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্যকে মূলধারার গণমাধ্যমের চেয়ে তখনই বেশি সত্য মনে করেন যখন প্রচলিত গণমাধ্যমের উপর মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হয়। বাংলাদেশে মূলধারার গণমাধ্যমের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা কতটুকু এ সংক্রান্ত কোনো গবেষণা নেই বলা চলে। তবে অনেক সময়ই মূলধারার গণমাধ্যমের তথ্যকে মানুষ পক্ষপাতদুষ্ট মনে করে।

আবার অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশে এখন সবারই হাতেই স্মার্টফোন রয়েছে। ইন্টারনেটযুক্ত এসব স্মার্টফোন থেকে সহজেই মানুষ সামাজিক যোগায়োগ মাধ্যমে নজর বোলাতে পারে এবং সহজেই গুজব সংক্রান্ত তথ্য পেয়ে যায়। এই সব তথ্য অনেকেই অপরের সাথে শেয়ার করেন যা পরে ভাইরাল হয়। তথ্য বা খবরের উৎস ও সত্য-মিথ্যা নিয়ে কেউ চিন্তা করেনা। কিংবা তা যাচাই করার কোনো উপায়ও তারা পাননা। এভাবে সহজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো সহজ বলে তারা মনে করেন। তবে গুজব ছড়ানো প্রতিরোধে ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম সবসময়ই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

গুজব প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা স্বাধীন গণমাধ্যমের বিকাশ এবং গণমাধ্যমের উপর মানুষের আস্থা তৈরির পরামর্শ দেন। এছাড়াও কিছু প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ নেয়া যেমন প্রথমত: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যতগুলো এ্যাপস আছে যেমন, ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইউটিউব, ইন বক্স মেসেজ যা থেকে কোনো ভুয়া খবর শেয়ার করা যায় তা বন্ধ করা। প্রযুক্তিবিদরা এই বিষয়ে কাজ করতে পারেন- যাতে কেউ কোনো গুজব অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা লকড হয়ে যায়। বাংলাদেশে এরই মধ্যে সাইবার ক্রাইম ইউনিট এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে গুজব ঠেকানোর ব্যবস্থা করেছে। দ্বিতীয়ত: গুজব বা ফেক নিউজ চিহ্নিত করার এ্যাপস সহজলভ্য করা। এখন ফেক নিউজ চিহ্নিত করার জন্য অনেক এ্যাপস তৈরী হয়েছে যেগুলো স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে ইনস্টল করা গেলে গুজব ছড়ানো রোধ করা সম্ভব বলে বিশেষ্জ্ঞরা মনে করেন। তৃতীয়ত: সচেতনতা বৃদ্ধি অর্থাৎ কোনটি গুজব আর কোন ধরণের পোস্ট শেয়ার করা যাবেনা--এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা। বিশেষ করে, ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা যেমন, হাট-বাজার, বাস স্ট্যান্ড, লোকালয় বা জনসমাগমস্থানে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো দরকার বলে তারা মনে করেন। চতুর্থত: সব শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে গুজব সম্পর্কিত পাঠ্যসূচী অর্ন্তভুক্ত করলে আগে থেকেই ছাত্রছাত্রীরা সচেতন হবে এবং গুজব ছড়ানো প্রতিরোধ করা সম্ভব বলেও অনেকে মনে করেন।

ড. মতিউর রহমান, গবেষণা পরামর্শক, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এইচডিআরসি), ঢাকা

এ সম্পর্কিত আরও খবর