দেশের চিকিৎসা সেবা বিষয়ে গবেষণা প্রয়োজন

, যুক্তিতর্ক

লতিফা নিলুফার পাপড়ি | 2023-09-01 16:21:25

 

বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবার মান কেমন, সেবা প্রার্থীদের কী ধরনের ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়, সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে কী কী বাধা কাজ করে, দায়িত্বশীলদের ভূমিকা কেমন, সমস্যা উত্তরণে গ্রহণীয় কর্তব্য কী হতে পারে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিশদভাবে গবেষণা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। কেননা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেহাল দশা ও সেবাদাতাদের চিকিৎসাসেবায় চরম অবহেলা, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক হালহকিকতকে ব্যাখ্যার জন্য এই গবেষণা যথেষ্ট সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

হাসপাতালে আনন্দিত হয়ে কেউই যেতে রাজি হয় না, নিতান্ত প্রয়োজনেই মানুষ হাসপাতাল তথা ডাক্তারদের দ্বারস্থ হয়। হাসপাতালে মানুষ যে কতটা অসহায় তা কেবলমাত্র ভুক্তভোগীরা অনুধাবন করতে পারে, আর পারে রোগীর স্বজনরা। দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসা দেবার বিষয়টি দিন দিন ডাক্তার-নার্সদের অভিধান থেকে উঠে যাচ্ছে; বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালের চিত্র কিন্তু তাই বলে। কেমন যেন একটা দায়সারাভাব সবার মধ্যে পরিলক্ষিত হয়, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা কোনভাবে শেষ হলেই যেন তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। একই চিত্র বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক গুলোতেও।

সাধারণ মানুষের নিকট এখনো সরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসার শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাধারণ মানুষ বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে; যাদের ক্লিনিক, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের সামর্থ নেই। দরিদ্র, নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তরাই মূলত সরকারি হাসপাতালে সেবাগ্রহণ করে থাকেন। দেশে এই শ্রেণির মানুষের সংখ্যা এখনো বেশি এবং তাদের অধিকাংশই এখনো গ্রামে-গঞ্জে বসবাস করেন।

কাগজ কলমে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা যতই মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও রিজার্ভের কথা উল্লেখ করি না কেন রাষ্ট্রের অধিকাংশই মানুষই চিকিৎসা সেবা গ্রহণে রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা সঠিকভাবে পায় না।

আমি আমার  অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সরকারি হাসপাতালে রোগী নেওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়; কিভাবে সেই রোগীকে এই হাসপাতাল থেকে বিদায় দেয়া যায়, সেই প্রচেষ্টা। দালাল টাইপের কিছু লোককে উপেক্ষা করে রোগী ভর্তি ও সেবা নেওয়া অনেকাংশ ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে পড়ে। অবাক করার মতো বিষয় হলো ঐ শ্রেণির দালালদের সঙ্গে দায়িত্বরত কিছু নার্স এবং ডাক্তারদের যোগসূত্র দেখা যায়।

ঐ দালালের কাজ হলো প্রাথমিকভাবে রোগীকে দায়িত্বরত ডাক্তারের মাধ্যমে দেখিয়ে সুনির্দিষ্ট ওয়ার্ডে, কেবিনে পৌঁছেয়ে দেয়া, বিনিময়ে তাকে খুশি করার স্বার্থে ভাল অঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে হয়। শুরুতেই বলেছি, হাসপাতালে রোগী এবং তাঁর স্বজনরা অত্যন্ত অসহায় এবং রোগীর স্বার্থেই তড়িগড়ি করে দালাল কিংবা হাসপাতালের ভিতরে ঘোরাঘুরি করা হোমরাচোমরা টাইপ মানুষদের মাধ্যমে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্বজনরা থাকে বদ্ধপরিকর। কেননা, স্বাভাবিক উপায়ে রোগীকে নিয়ে গেলে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়, বিধায় স্বজনরা টাকা খরচ করতেও দ্বিধা করে না। এই চিত্র মফস্বলের সরকারি- বেসরকারি অধিকাংশ হাসপাতালেই।

আমার শহর মৌলভীবাজারে চিকিৎসা সেবায় ডাক্তারদের যে ধরনের আচরণ ও ভুল চিকিৎসা সেবা পেয়েছি তা নিয়ে আরো বিশদভাবে জানাতে চাই।

শুধু মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নয় পুরো বাংলাদেশের চিকিৎসার মান একইরকম। হয়তো কিছু সত্যিকারের মানবিক ডাক্তার এখােেনা আছেন। যার জন্য হয়তো আমাদের মতো সাধারণ মানুষেরা কিছুটা সেবা পাচ্ছি। কিন্তু সেই সংখ্যাটা অত্যন্ত কম।

মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে সেদিন নিরুপায় হয়ে আব্বাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। কেবিনে ভর্তি করালাম। ডাক্তার দেখে খুব জরুরীভাবে একটি এক্সরে করাণোর জন্য লিখে দিলেন। এক্সরে করালাম বেলা সাড়ে বারটায়। বললাম এক্সরের প্লেটটা আমার হাতে দিয়ে দিন। ডাক্তারকে দেখিয়ে এনে না হয় ফেরৎ দিয়ে দেবো। না, এক্সরে প্লেটটা দেয়নি, বললাম ছবি তুলে নেই? ছবিটাও তুলতে দেয়নি। অথচ এক্স-রে প্লেটটা সেই মহূর্তে ডাক্তারের দেখা অতীব জরুরি ছিলো। বললো আগামীকাল (পরেরদিন) সকাল ১০টার আগে পাবেন না। সন্ধার আগেই আব্বার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেলো। তখন হাসপাতালে জরুরী বিভাগ ছাড়া আর কোথাও কোনা ডাক্তার নেই। আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই হাসপাতালেরই ডাক্তারকে মোবাইল ফোনে পুলো বিষয় জানালাম। তিনি এসে আব্বাকে দেখে আরো ভালো চিকিৎসার জন্য দ্রুত সিলেটে নিয়ে যাবার পরামর্শ দিলেন। অথচ ওই এক্সরে প্লেটটি ঠিক সময়ে ডাক্তার দেখতে পারলে পরবর্তী চার/পাঁচ ঘণ্টায় আব্বার অবস্থার এতো অবনতি হতো না।

সিলেটে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও পড়লাম অথৈ সাগরে। সেখানে প্রবেশের পর হাসপাতালের চরম অব্যবস্থাপনা এখন আমি আর আমার স্মৃতিতে আনতে চাই না।

নার্স-আয়া-বয়দের এই করুন সেই করুন শুনতে শুনতে এক পয়ায়ে ডাক্তারের দেখা মিললো। বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তারকলকরে আনতে হয়! ডাক্তার সাহেব আসলেন, চিকিৎসা শুরু হল। এই টেস্ট সেই  টেস্ট। বাইরে থেকে করিয়ে আনা। এদিকে আমার লোকবল একেবারেই নেই। তারপর ইনজেকন আনা, ওষুধ আনা। আমার মাথায় কোন কাজ করছিল না। তারপর নাভীর নীচে ইনজেকশন। যা নিউমোনিয়ার প্রধান চিকিৎসা। জানি না সেই মহূর্তে কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ নয়। আমি পুরোই অসহায়। আমার হাত-পা কাঁপছে। আমার স্বামী, ভাই, বোন তখন অনেক দূরে। তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। আর অতন্দ্র প্রহরীর মতো ভাগ্নে শাহীন আমার সাথে, সে ছোটছেলে, সবকিচু ঠিকটাক বুঝতেও পারে না।

এর বাইরেও আমার স্বামীর সহকর্মী ভ্ট্টুুভাই, অলিদভাই, মুজাহিদের সহযোগীতা না পেলে আমাদের কি হতো আল্লাহই জানেন।

সিলেটের ওমেন্স মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসায় ছিল নানা অসংগতি। দিনরাত টেস্ট, আর রাত ১১টার পর ডাক্তার আসেন। যখন তখন ওষুধ কিনে আনা। এক ডাক্তারের সাথে আরেক ডাক্তারের চিকিৎসার সামঞ্জস্যতা নেই। তারপরও তাদের পরিচালক ডাঃ হিমাংশু দাশ বারবার আব্বার খোঁজ নিয়েছেন। ছোট ভাই ডাঃ শান্তনু, ডাঃ আহাদ, মিতি, লিপু ফুফু সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রেখেছে। ১৯ দিন পর আব্বা কিছুটা সুস্থ হয়ে সিলেট উপশহরের ভাড়া বাসায় উঠেন।

একটি কথা না বললেই নয়, হয়তো কাগজ পত্রে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে লোক দেখানো সেবার মাধ্যমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারবে। কারণ আমাদের শ্রেষ্ঠত্বর বিচার তো হোমরাচোমরারা মানুষরাই করে। যারা তৈলমর্দন পেতে পেতে তৈলাক্ত হয়ে আছে। আমার অভিজ্ঞতায় মৌলভীবাজারের ২৫০ শয্যা এই সদর হাসপাতালের স্থান সর্বনি¤েœ হবার কথা। কিন্তু এটাই না কি দেশ সেরা হাসপাতাল হিসাবে পুরস্কৃত! সত্যি সেলুকাস!!

এই লেখাতেই আমি আরো কিছু বিষয়ের অবতারণা করতে চাই। সেটা ডায়গনস্টি সেন্টার ও ক্লিনিক ব্যবসার বিষয়ে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর রিপোর্টে যে অসামঞ্জস্য আছে তা বর্ণনাতীত। এসব কিছু নিয়ে আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে  বলছি।

কিছুদিনের মধ্যে  আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার একটি অন্যতম পন্থা হচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসা। যেকারণে মানসম্মত চিকিৎসা সেবার কথা চিন্তা না করে দিনে দিনে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এমনকি ভুল রিপোর্ট সহ বিভিন্ন অভিযোগ থাকলে এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার বছরের পর বছর থাকছে বহাল তবিয়তে। উপর মহলকে ম্যানেজ করে দিনের পর দিন এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের টেস্ট অর্থাৎ পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে বিশাল টাকার ব্যবসা। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে, টেস্টগুলো কতটুকু মানসম্মত কিংবা সঠিক তা যাচাই করার কোন উপায় নেই। কারণ একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোন রোগী টেস্ট করানোর পরে দ্বিতীয়বার কেউ সাধারণত টেস্ট করায় না। কারণ এতো টাকা ব্যায় করার সামর্থ সবার থাকেনা। তবে কোন কারণে যদি একই টেস্ট একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করানো হয়, তবে ভিন্ন ভিন্ন রিপোর্ট আসার নানা ঘটনা রয়েছে। এছাড়া টেস্টের মান নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর অধিকাংশের লাইসেন্সসহ টেস্টের যন্ত্রপাতি ও সেগুলোর মান নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ একটি ছোট শহরে এতোগুলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার কিভাবে অনুমোদন পায়। তাছাড়া একই ভবনে কিংবা একই গলিতে একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকার কোন যুক্তি নেই। ভুল রিপোর্টে রোগীর  ভুল চিকিৎসা হলেও এসব ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলোর অপকর্ম ধামাচাপা দিতে কিংবা ম্যানেজ করতে প্রভাবশালী মহল সব সময় কাজ করে থাকে এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে। সেসব প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি প্রশাসনের অভিযান ঠেকিয়ে দেয়ার হুংকারও দিয়ে থাকে এসব সমাজের প্রভাবশালী  ব্যক্তিরা।

আমাদের দেশের আরেকটি সমস্যা হল রোগীকে অহেতুক টেস্ট করে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেয়া। মনগড়া রিপোর্ট দিয়ে সম্পূর্ণ টাকা হাতিয়ে নেয়া। ত্রুটিপূর্ণ মেশিন দিয়ে মানহীন টেস্ট রিপোর্ট প্রদানসহ নানা ত্রুটি রয়েছে। তবুও উপর মহলের আশির্বাদে এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

দশ-বার  বছর আগে  এক নার্সের সাথে আমার তুমুল বাকবিতন্ডা হয়েছিল। আমার পরিচিত মহিলা কোনক্রমেই সিজার করতে চাইছিল না। কিন্তু জনৈক নার্স ছলেবলে কৌশলে সিজার করালো। বারবার একই কথা বলছিল তুমি কোন চিন্তা করো না। নরমাল ডেলিভারি হবে। একটু পরপর বাচ্চার অবস্থান দেখে যাচ্ছে। আর কার সাথে জানি ফোনে কথা বলছে। এর মাঝে আমি নিজের কানে শুনতে পেলাম  ম্যাডাম ম্যানেজ করার চেষ্টা চলছে। আপনি আসেন তাড়াতাড়ি। আমি মনে মনে যা আশংকা করছি  তা-ই। যে সব মহিলারা বেশি আহলাদী কথা বলে তারা ভয়ংকর হয়। আমি বাস্তবে ভুরিভুরি প্রমাণও পেয়েছি।

একটু পরে কায়দা করে এসে বলল, ডাক্তার আসছে। আর হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে। ডাক্তার এসেই রোগী দেখেই বললেন রোগীর গার্ডিয়ান কে? এখনই সিজার করতে হবে। বাচ্চার অবস্থা ভালো না। আজ দেখছি সেই নার্স নিজেই একটা ক্লিনিকের মালিক। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সিজারিয়ান অপারেশনের একটা পরিসংখ্যান থাকলেও প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে সিজার করার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়না কখনোই।

এসব বন্ধ হওয়া দরকার এমন বক্তব্য প্রায়ই ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন। দোষ দিচ্ছেন কিছু স্বার্থলোভী ক্লিনিক ও ডাক্তারদেরকে। এমনকি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য বিভাগীয় সংসদীয় কমিটির সভাপতিও সিজারিয়ান অপারেশন কমিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালগুলোর পরিসংখ্যান পাওয়া গেলেও ক্লিনিকগুলোর হিসেবে রয়েছে প্রচুর গরমিল। ক্লিনিকগুলোতে সঠিক মনিটরিংও নেই। যে কারণে অপারেশনের দরকার না হলেও ক্লিনিকগুলোতে হরহামেশাই ব্যবসায়ীক কারণে সিজারিন সন্তান প্রসবের ঘটনা বেড়ে চলেছে।

হাসপাতাল বা ক্লিনিকে আগত রোগীরা জানায়, ডাক্তারদের পরামর্শেই তারা সিজারিয়ান অপারেশন করিয়ে থাকেন। যখন ডাক্তাররা বলেন, সমস্যা আছে তাই অপারেশন লাগবে। রোগী বা রোগীর স্বজনরা তখন আর দেরী না করে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য রাজী হয়ে যান।

 প্রথম সন্তান স্বাভাবিকভাবেই জন্ম নিয়েছিল। কিন্তু সমস্যার কারণে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিতে হয়েছে সিজার করে। এমন হাজারো প্রমাণ মিলবে। কেউ যেন কোন রিক্স নিতে চায়না। কিন্তু এতে করে স্বাভাবিক জন্ম প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।

ক্লিনিকের মালিকদের অতিরিক্ত টাকার লোভ, আর সেই সঙ্গে কিছু কিছু ডাক্তারদেরকেও দুষলেন আজ একজন আত্মীয়া।

অবশ্য কোন কোন রোগীর স্বজনরাও রোগীর কষ্ট লাঘবের জন্য এবং নিরাপদ মনে করে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করিয়ে থাকেন। এ অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আশা দরকার।

সারাবিশ্বে যেখানে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবকে উৎসাহিত করা হয়, সেখানে আমাদের দেশে সিজারিয়ান অপারেশনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে আমাদেরকে বেড়িয়ে আসতে সচেতনতা বাড়াতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আর বেরিয়ে আসার পথ পাওয়ার জন্য দেশের সামগ্রীক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে গবেষনা হওয়া প্রয়োজন।

লতিফা নিলুফার পাপড়ি: শিক্ষক, কবি, গল্পকার ও কলামলেখক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর