করোনা মহামারি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অর্থনীতির গতি

, যুক্তিতর্ক

ড. মাহফুজ পারভেজ | 2023-08-31 09:59:18

করোনাকালের চীনা অর্থনৈতিক মন্দার লক্ষণীয় বিষয় হলো দেশটির ব্যবসায় সঙ্কুচিত পরিসর, বহু দেশই চেষ্টা করছে সেই জায়গা নিতে। 'ইকোনমিক হাব' নামে উত্থিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৈশ্বিক মহামারি করোনার বহুবিধ প্রভাবের মধ্যে এখন ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে মন্দার চিত্র। এরই সঙ্গে আর্থিক পরিস্থিতিকে পাল্লা দিয়ে করোনার দোলাচলে ত্রস্ত চীন। এমতাবস্থায়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা বৃহত্তর ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলের সামরিক ও নিরাপত্তাগত মেরুকরণকে ছাপিয়ে সামনে চলে আসছে অর্থনৈতিক প্রপঞ্চসমূহ এবং এর বহুমাত্রিক পালাবদলের দৃশ্যপট। জনস্বাস্থ্যের মতোই মহামারিকালে আর্থিক রূপান্তরের চিত্রও এতে স্পষ্ট হয়েছে।

একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষক সংস্থার হিসাবে, নববর্ষের জমায়েতের কারণে চীনে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৩৬ হাজার ছুঁতে পারে। সংস্থাটির হিসাবে কোভিডের কারণে চীনে এখন পর্যন্ত ৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যদিও সরকারি তরফে বলা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণে এসেছে কোভিড পরিস্থিতি, তথাপি চীনে এখনও চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস। দেশটির এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিডিয়াকে জানিয়েছেন, ১৩ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সে দেশে ১৩ হাজার মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ওই অফিসার আরও জানিয়েছেন যে, শূন্য কোভিড নীতি তুলে নেওয়ার পর সে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

চীনের ‘ডিজ়িজ কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনে’র তরফে চলতি সপ্তাহের শুরুতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ১৩ হাজার জনের মধ্যে ৬৮১ জন সরাসরি কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বাকি ১১ হাজার ৯৭৭ জনও কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন, তবে তাঁদের অন্যান্য শারীরিক সমস্যা ছিল। অবশ্য বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকা নাগরিকদের কত জন মারা গিয়েছেন, সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি এই বিবৃতিতে।

চীনে বর্তমানে চান্দ্র নববর্ষ উপলক্ষে উৎসব উদ্‌যাপন চলছে। কঠোর কোভিড নীতি উঠে যাওয়ায় দীর্ঘ দিন পরে দেশের নানা শহরে হইহুল্লোড়ে মেতেছে জনতা। এ অবস্থায় নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছে বেজিং প্রশাসন।

একটি নিরপেক্ষ সমীক্ষক সংস্থার হিসাবে, চাইনিজ নববর্ষের হুল্লোড় এবং জমায়েতের কারণে সে দেশে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৩৬ হাজার হতে পারে। ওই সমীক্ষক সংস্থাটির হিসাব বলছে কোভিড নীতি শিথিল করার পর চীনে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, পশ্চিমি মিডিয়াগুলোর একাংশের দাবি, চীন যদি প্রথম থেকে কোভিডে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা প্রকাশ্যে আনত, তবে হয়তো সম্ভাব্য এই বিপর্যয় এড়ানো যেত। পশ্চিমা দেশের কোনও কোনও নেতা চীনের 'কোভিড নীতি' এবং 'রক্ষণশীল মনোভাব' সম্পর্কে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন। তারা মনে করছেন, মহামারির আঘাত ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য ও পরিসংখ্যান প্রকাশের ক্ষেত্রে চীনের 'গড়িমসি কৌশল' বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং অপরাপর দেশের প্রস্তুতি গ্রহণকে 'বিভ্রান্ত' ও 'বিলম্বিত' করেছে।

করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব চীনের সামাজিক জীবনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকেও নাড়া দিয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। বিশ্বঅর্থনীতির শীর্ষস্থান অধিকারের প্রত্যাশায় যে চীনের গতি ছিল অব্যাহত ও তেজি, সেখানে থেকে সাম্প্রতিক কালে বহু দেশই তাদের উৎপাদন কেন্দ্র সরিয়ে নিচ্ছে। পূর্ব এশিয়ার বিনিয়োগ অর্থনীতিতে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছে, তা পূরণ করতে নানা ফন্দিফিকির কষছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলো, বিশেষত চীনের পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিগত এক দশক জুড়ে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলার পর বস্তুত করোনার ধাক্কায় চীনের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির পিছনে আরও কাজ করছে চীনের বাইরে অবস্থিত কারখানা এবং জোগান ব্যবস্থার দিকে উৎপাদন তথা অর্থনীতির অভিমুখ ঘুরে যাওয়ার ঘটনা। ফলে সাম্প্রতিক চার দশক ধরে উৎপাদন এবং বাণিজ্যে চীনের সাফল্য, যা তাকে ‘বিশ্বের কারখানা’ বলে পরিচিত করেছে, তা থেকে এক নতুন হাওয়ার ঘূর্ণিতে পৃথিবীর যাবতীয় কর্পোরেট পরিচালকদের নজর একেবারে উল্টো দিকে ঘুরে যাওয়ার বিষয়টি চীনের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দৃঢ়তার প্রতিষ্ঠিত ধারণার সঙ্গে একেবারেই মানানসই নয়। তা সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে, চীন ব্যতীত অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর শিল্পনীতিতেও কিছু বদল ঘটেছে, যা বিভিন্ন সংস্থাকে চীনের বিকল্প নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।

পরিস্থিতির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় চীন থেকে জাপানের সংস্থাগুলোকে তাদের উৎপাদন কেন্দ্রগুলো দেশে ফিরিয়ে আনতে অর্থ বিনিয়োগ করছে টোকিও প্রশাসন। গত গ্রীষ্মে জাপান এক নতুন অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আইন পাশ করেছে যার দ্বারা ১৪টি ক্ষেত্রকে একটি সামাজিক পরিকাঠামোর অঙ্গীভূত করা সম্ভব হয়েছে। তদ্রূপ,  দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান তুলনামূলক ভাবে ‘রি-শোরিং’ বা 'দেশের বাইরে চলে যাওয়া কোনও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া' শুরু করেছে।

এসব নীতিগত পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হলো, চীন থেকে তাদের ব্যবসাকে গুটিয়ে আনা। সুতরাং, এশিয়ার সব থেকে বেশি শিল্পায়িত ৩টি দেশ তাদের সংস্থাগুলোকে চীন থেকে দেশের মাটিতে কিংবা সুবিধাজনক দেশে ফিরে আসতে ইনসেন্টিভ দিচ্ছে। এর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী এবং বিশ্বের ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাৎপর্যবাহী।

জাপানের নীতিগত পরিবর্তনের নিরিখে দৃশ্যমান হয়েছে যে, 'রি-শোরিং’-এর জন্য টোকিওর বাজেট বেড়ে ২৫০ কোটি আমেরিকান ডলার হয়েছে। কমবেশি আড়াইশো জাপানি সংস্থা গত কয়েক বছরে চীন ছেড়ে চলে গিয়েছে। আর এই চীন-ত্যাগের ইস্যুকে ইউরোপের ব্রেক্সিটের অনুসরণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নামকরণ করা হয়েছে ‘চেক্সিট’। লক্ষণীয় বিষয় হলো সবগুলো সংস্থা যে চীন ছেড়ে সব সময় জাপানে ফিরে যাচ্ছে, তা-ও নয়। বরং ওই ভূগোলের অন্যসব আশেপাশের দেশেই তারা আস্তানা গাড়ছে। অর্থনৈতিক এই পরিবর্তমান গতিশীলতা চীনকে কেন্দ্র করে চলমান আর্থিক ধারাকে বহুলাংশে শ্লথ করবে।

জাপানের সংবাদমাধ্যম ‘আসাহি শিমবুন’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছর ১৩৫টি সংস্থা চীন ছেড়ে অন্য দেশে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করেছে। এই সব সংস্থা মূলত সেমিকন্ডাক্টর, মোটরগাড়ি, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং পোশাক নির্মাতা। সোনি তার স্মার্টফোন উৎপাদনের একাংশকে থাইল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছে। লক্ষণীয়, এই স্থানান্তরণের ফলে ২০২১ নাগাদ সেখানে উল্লেখযোগ্য রকমের বিদেশি বিনিয়োগ ঘটেছে। আরও লক্ষ করার বিষয় এই যে, বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কিন্তু চীনেরই বিভিন্ন সংস্থা।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থাগুলোও যে শুধুমাত্র ‘ফ্রেন্ড-শোরিং’ বা বন্ধুরাষ্ট্র বা যে সব দেশ পরস্পরের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তির দ্বারা আবদ্ধ, সেখানে যন্ত্রাংশ তৈরির বরাত দেওয়া বা সরবরাহের পরিধিকে সেই সব দেশের মধ্যে আবদ্ধ রাখার নীতি করছে, এমন নয়। যেমন, স্যামসাং ভিয়েতনামে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সে দেশ গুগলকে তার পিক্সেল ফোন বানাতে। অ্যাপলকে তার ম্যাকবুক এবং আইফোন উৎপাদনে এবং এমনকি নাইকি ও অ্যাডিডাসকেও বিনিয়োগে আকৃষ্ট করেছে।

এমনকি, চীন থেকে বত্রিশটি প্রকল্প সরিয়ে নিয়ে গিয়ে মালয়েশিয়া লাভবান হয়েছে। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তরফে এশিয়ার শিল্প-দানবদের চেয়ে বেশি ইনসেন্টিভ দেওয়ার ঘোষণার উত্তরে হুন্ডাই পাল্টা ঘোষণা করেছে যে, তারা জর্জিয়ায় একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং ব্যাটারি কারখানা গড়ে তুলবে। পাশাপাশি, হোন্ডার সঙ্গে যৌথ ভাবে এলজি ওহায়োতে একটি নতুন ব্যাটারি কারখানার উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে এসব পরিবর্তনের ফল আমেরিকানদের জন্য আশাবাদী হওয়ার মতো পরিস্থিতির জন্ম দিচ্ছে, তা বলা চলে না।

পক্ষান্তরে চীন এসব ব্যাপারে আগ্রাসী আচরণ দেখাতে অবশ্যই বাকি রাখেনি। তারা তৈরি করেছে এক দ্বিমুখী ভিসা নিষিদ্ধকরণ, যা জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে আঘাত করেছে এবং যা থেকে রাজনীতির আঙিনাতেও উদ্বেগও তৈরি হয়েছে। কোরিয়ায় লোত্তে-র খুচরো ব্যবসার পরিকাঠামো, সুইডেনের এরিকসন, অস্ট্রেলিয়ার সুরা-নির্মাতারা, তাইওয়ানের আনারস চাষিরা এবং লিথুয়ানিয়ার সকলেই চীনা ড্রাগনের আগুনে নিশ্বাসের উত্তাপ পেয়েছে।

স্বাভাবিক ভাবেই, বিশ্ববাণিজ্য মহল সার্বিক অর্থে চীনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঝুঁকি দেখতে পেয়েছে, সে দেশে বিভিন্ন রকমের বৈষম্য, ক্রমাগত বাড়তে থাকা উৎপাদন ব্যয়, যেমন, ভিয়েতনামে অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি চীনের থেকে ৬০ শতাংশ কম, পরিবেশ সংক্রান্ত কঠোর নিয়মকানুন, কোভিড সংক্রমণ এবং অবশ্যই বার বার বিঘ্নিত সরবরাহ ব্যবস্থার সম্পর্কে শুনেছে। শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোই নয়, বরং ইউরোপের একটি সমীক্ষা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, মহাদেশটির ২৩ শতাংশ সংস্থা চীন থেকে সরে আসার কথা ভাবছে।

আপাতত এসব নেতিবাচক কারণগুলো কিন্তু চীনকে উৎপাদন কেন্দ্র বা বাজার হিসেবে খাটো করে দেখাচ্ছে না। ২০২২ সালে নানা বিঘ্নের পরও চীনে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের পরিমাণ কার্যত বেড়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, জার্মানির বিএএসএফ তার কর্মকাণ্ড চীনে ফিরিয়ে আনছে। ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’ চীনের আর্থিক শক্তিতে কোনধরনের ধ্বস হয়েছে বলে মানতে নারাজ। তাদের সাম্প্রতিক অনেকগুলো প্রতিবেদন চীনের ক্ষেত্রে নানা সঙ্কুলতার কথা উল্লেখ করলেও দেশটির সার্বিক আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেনি। বরং, কী উপায়ে অ্যাপলের উৎপাদন পদ্ধতি চীনের পরিবেশের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত, তা ফলাও করে প্রচার করেছে।

এ সব সত্ত্বেও বলা যায়, পরিবর্তনের হাওয়া কিন্তু বইছেই। সিএনবিসি এক সরবরাহ ব্যবস্থা সংক্রান্ত ‘হিট ম্যাপ’ (ডেটা প্রদর্শনকারী পদ্ধতি বিশেষ)-এ দেখাচ্ছে যে, চীন ক্রমে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত এবং তাইওয়ানকে হারাতে চলেছে।

সুতরাং, বিশ্বায়নের দিনগুলোতে করোনাকালে যত পরিহাসই করা হয়ে থাকুক না কেন, জাতীয় শিল্পনীতির পুনরুজ্জীবন এক বাস্তব ঘটনা, যা কার্যত জাতীয় নিরাপত্তা, সরবরাহ-শৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক উদ্বেগের দ্বারা চালিত হয়। এবং এই সমস্ত কিছুই একত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত সেপ্টেম্বরে চীন নিজেই এক বিস্তারিত জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছিল, যার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ না করেই। যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সমস্ত কিছুরই নিরাপত্তা বিধান’। এর মানে হলো পরিবর্তন আঁচ করেছে খোদ চীন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েও তারা ভাবছে।

চীনের পরিস্থিতি ফায়দা তুলতে মুখিয়ে আছে বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকা ও আঞ্চলিক প্রতিযোগী ভারত। ভারতের সাম্প্রতিক উৎপাদন বিষয়ক ইনসেন্টিভ, পুঁজির ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান ইত্যদি নীতির উপর জোর দেওয়ার ব্যাপার কিন্তু বিশেষ ভাবে চীন তথা পুর্ব এশিয়া এবং ব্যাপকার্থে বিশ্বের প্রবণতার সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের প্রত্যাশার নিবিড় সম্পর্ক রাখে। যদিও ভারত ২০২১ সালের জাতিসংঘের বৈদেশিক বিনিয়োগ-তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে এবং চীনের বিকল্প হিসাবে তাকে বিশ্বের বৃহৎ সংস্থাগুলো বিবেচনা করেনা, তথাপি আর্থিক ক্ষেত্রে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার ভারতীয় তৎপরতা থেমে নেয়। দেখছে না। ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা পুর্ব এশিয়ার সঙ্গে আরও বেশি মাত্রায় বাণিজ্য সম্পর্ক তৈরি, শুল্কনীতির শিথিলায়ন, শ্রমক্ষমতার গুণগত মানের উন্নয়ন ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় যোগ্য হয়ে উঠার তাগিদ দিচ্ছেন। এরই মাঝে বহু পূর্ব এশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তিসম্পদ দেশগুলো প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনের পথে সামনের পরিস্থিতিতে সুবিধাজনক অবস্থান হাসিলের লক্ষ্যে চলতে শুরু করেছে।

ড. মাহফুজ পারভেজ, প্রফেসর, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম

এ সম্পর্কিত আরও খবর