উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল

বিবিধ, যুক্তিতর্ক

এম. এ. মাসুম | 2023-10-06 12:13:23

বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারি খাত অত্যন্ত ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষতঃ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেসরকারি খাতের অবদান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশব্যাপী বেসরকারি উদ্যোগে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার কথা চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছিল বেশ ক’বছর ধরেই।

বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) সর্বোৎকৃষ্ট স্থান হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ধারণার প্রথম প্রচলন দেখা যায় আয়ারল্যান্ডে ৫০ দশকের দিকে এবং এটি পর্যায়ক্রমে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ দশক পরে এশিয়ায় বিশেষতঃ চীনের দক্ষিণ পূর্ব সমুদ্র উপলবর্তী অঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে চীনের ডেং ঝিয়াপিং প্রদেশে ১৯৮০ সালে অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হয়। চীনের একটি ছোট্ট গ্রাম সেনঝেনে সবচেয়ে সফল অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাত্র ২০ বছরের মধ্যে সেখানে ১০ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যার শহরে পরিণত হয়। পরবর্তিতে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করায় চীনের অন্যান্য স্থানেও বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৫ সালে চীনে প্রায় ৫০০টি অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১৩০টি দেশে ৪ হাজার ৩০০টির বেশি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশেও অর্থনৈতিক জোনের দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে। বর্তমানে চীনে ১ হাজার ৫০০ এর বেশি, ফিলিপাইনে ৩১২টি, ভারতে ২২১টি, শ্রীলংকায় ১২টি এবং বাংলাদেশে বর্তমানে ৮টি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ সরকার পর্যায়ক্রমে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শিল্প খাতে দ্রুত বিকাশের জন্য বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ দেশে ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণসহ দেশে শিল্পখাত বিকাশে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে। ইপিজেড প্রতিষ্ঠার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রফতানি আয় বাড়ানোর স্বার্থে সরকার ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটি বা বেপজা প্রতিষ্ঠা করে। এরপর প্রায় দু’যুগে বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি ইপিজেড গড়ে উঠেছে। ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রামে ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করা হয় । তার ১০ বছর পর ১৯৯৩ সালে ঢাকা ইপিজেড কার্যক্রম শুরু করে। ইপিজেডগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম, ঢাকা (সাভার), মংলা, ঈশ্বরদী, কুমিল্লা, উত্তরা (নীলফামারী), আদমজী (নারায়ণগঞ্জ) ও কর্ণফূলি ।


বর্তমানে দেশে মোট ৮টি ইপিজেডে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত ৩৭টি দেশ ৪,২১৫.৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে, রফতানি হয়েছে ৫৭,০৪১.৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইপিজেডের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে সর্বমোট ৪ লাখ ৬৪ হাজার জন বাংলাদেশির প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে, তন্মধ্যে ৬৪ শতাংশই নারী।


ব্যাপক কর্মসংস্থান ও দেশব্যাপী শিল্প-কারখানা বিকাশের লক্ষ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পর্যালোচনা চলছে এবং চার ধরনের অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন বিল ২০১০’ পাশ করে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন আইন ২০১০-এর আলোকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। জানা যায়, সরকার ৮২টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে সরকারি ৫৪টি, বেসরকারি ২৩টি, ভারত, চীন ও জাপানের ৪টি এবং একটি বেপজার জন্য । শক্তিশালী শিল্পায়ন, সেবাভিত্তিক উৎপাদন, রফতানি এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চার ধরনের অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, এগুলো হলো-১. সরকারি উদ্যোগে বা সরকারি মালিকানাধীনে প্রতিষ্ঠিত, ২. সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ ধরনের শিল্প কারখানা, ৩. দেশি-বিদেশি ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যা সরকাররের সঙ্গে অথবা বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এবং ৪. বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত।

বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বাড়ছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। জানা যায়, এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮০ হাজার একরেরও বেশি জমি চি‎হ্নিত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অনুমোদন পেয়েছে ৭৪টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, যার মধ্যে বেসরকারি খাতের অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে ২০টি। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় চীন, ভারত, জাপানসহ উন্নত দেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশে পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ভারত মোট ২৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এমন ব্যাপক আগ্রহ দেশের অর্থনীতিতে অমিত সম্ভাবনার দুযার খুলে দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় এবং ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম বাস্তাবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। এগুলো হলো- দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াবো। এ চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবেলা না করতে পারলে এ ধরনের অঞ্চল গড়ে তোলা এবং পরিচালনা করা কঠিন হতে পারে। অর্থনৈতিক অঞ্চল বিভিন্ন ধরনের হবে। সেখানে কারিগরি বিষয় প্রাধান্য পাবে এবং দক্ষ মানবসম্পদ প্রয়োজন হবে। তাছাড়া, দেশে বিদ্যমান অনেক আইন-কানুন আছে যেগুলো বিনিয়োগবান্ধব নয়। একটি দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ না থাকলে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কোনো দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষুদ্র বা মাঝারি ব্যবসা চালু এবং সেটা পরিচালনা করা কতটুকু সহজ বা কঠিন- সে বিষয়গুলো কয়েকটি সূচকের আওতায় বিশ্বব্যাংক পরিমাপ করে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ডুইং বিজনেস- ২০১৯ প্রতিবেদনে দেখা যায় অধিকাংশ সূচকে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে এগুলো হলো- ব্যবসা শুরু, নির্মাণের অনুমোদন নেওয়ার প্রক্রিয়া, বিদ্যুত সরবরাহ, সম্পত্তির নিবন্ধন, ক্রেডিট অর্জন, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর প্রদান, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তির বাস্তবায়ন ও অস্বচ্ছলতা দূরীকরণ।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, দুর্বল অবকাঠামো ও ত্রুটিপূর্ণ ব্যবসায়িক পরিবেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রধান অন্তরায়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বৃহত্তর বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বেশ কিছু নীতিগত ও প্রায়োগিক সংস্কার করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।


বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে হালাল পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার ৩ লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এ বিশাল বাজারে পণ্যের সিংহভাগ জোগান দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, নিউজিল্যান্ড ও থাইল্যান্ড। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হয়েও হালাল খাদ্য রফতানিতে অনেক পিছিয়ে।


ট্রান্সপারেন্সি মার্কেট রিসার্চেও হিসাব অনুযায়ী ২০১৫ সালে পৃথিবীতে হালাল পণ্যেও বাজারমূল্য প্রায় ২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার, যা পৃথিবরি মোট খরচের ১১ দশমিক ৯ শতাংশ। এটি ২০২৪ সালে ১০ দশমিক ৫১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।

এ তথ্য থেকে বোঝা যায, বিশ্বে হালাল পণ্যের চাহিদা রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত তা বাড়ছে। তাই রফতানি নির্ভর এ বাজার ধরতে দেশের হালাল পণ্য উৎপাদনের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার কথা ভাবছেন ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, সরকার এক্ষেত্রে সব ধরনের নীতিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত। অনেকদিন ধরেই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা দাবি ছিল। দেশে প্রথমবারের মতো ১০০ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। সেখানে উদ্যেক্তা নারীদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিতেও এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বমানের তথ্যপ্রযুক্তির জন্য আলাদা অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যাবে। বছরে অতিরিক্ত ৪ হাজার কোটি ডরার রফতানি আয়োর সুযোগ তৈরি হবে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন দেশের অর্থনীতিতে গতি পাবে, অন্যদিকে লক্ষ লক্ষ বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। উল্লেখ্য, শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সারা দেশে বর্তমানে মোট তরুণ-তরুণীর সংখ্যা ২ কোটি ৭৬ লাখ। যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষিতি ও স্বল্পশিক্ষিত মিলিয়ে বেকারের সংখ্যা এক কোটির বেশি। আবার প্রতি বছরই নতুন করে কয়েক লাখ বেকার যুক্ত হচ্ছে শ্রম বাজারে। অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশাল এ বেকারকে শ্রম শক্তির আওতায় আনা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশের অনেক এলাকা আছে যেখানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত মানুষ দরিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ খানার আয় ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি এমন ১০টি জেলা হচ্ছে রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, জামালপুর, কিসোরগঞ্জ এবং মাগুরা। এসব পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোতে শিল্পায়নের মাধ্যমে সুষম উন্নয়ন করা যেতে পারে।


পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাতারাতি সামগ্রিক অর্থনীতির অবকাঠামো ও ব্যবসায়িক পরিবেশের অভাবনীয় উন্নতি বেশ কঠিন। কিন্তু বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তুলনামূলক কম সময়ে গড়ে তোলা সম্ভব। এ অঞ্চলগুলোর ভেতর অবকাঠামো ও ব্যবসায়িক পরিবেশের সমস্যাগুলো সমাধান করা গেলে দক্ষ ও কার্যকরী অঞ্চল হিসাবে কাজ করতে পারে।


বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করেছে। পুরোপুরি মধ্যম আয়ের দেশ হতে হলে দ্রুত ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার। মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে মোট জিডিপির ৩০-৩৩ শতাংশ বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। যেখানে বর্তমানে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ৩০ শতাংশের নীচে ওঠানামা করছে। সুষম উন্নয়ন তথা টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। তাছাড়া, অর্থনৈতিক অঞ্চলের অবকাঠামো ও ব্যবসায়িক পরিবেশ বিশ্বমানের হতে হবে। সফল দেশগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এসব অঞ্চলগুলোর সঙ্গে সমুদ্র ও স্থল বন্দরের কার্যকরী সংযোগের ওপর সাফল্য নির্ভর করে। এ জন্য বন্দরগুলোর অবকাঠামো ও দক্ষতার উন্নয়ন এবং সংযোগ সড়ক উন্নয়ন করতে হবে। সে সঙ্গে এসব অঞ্চলে শিল্প স্থাপনে রফতানি বহুমুখীকরণের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

লেখক: ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক

এ সম্পর্কিত আরও খবর