প্রযুক্তি নির্ভর মানসম্পন্ন শিক্ষাই সমৃদ্ধ দেশ গড়ার মূলমন্ত্র

বিবিধ, যুক্তিতর্ক

রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-29 16:38:53

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পূর্ণকালীন সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রথিতযশা অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন একাধারে গবেষক, লেখক ও তথ্য-প্রযুক্তিবিদ। তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে লেখালেখির জন্য তার বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।

১৯৬৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া ড. সাজ্জাদ ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন। রাশিয়ার মস্কো টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি।

দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর র‌্যাংকিং, শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন ও এসব বিষয়ে মঞ্জুরি কমিশনের নানা কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে অধ্যাপক ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গ্লোবাল র‌্যাংকিং দেখলেই সে চিত্র স্পষ্ট হয়। এর কারণ কী? উত্তরণের উপায় কী হতে পারে?

সাজ্জাদ হোসেন: র‌্যাংকিং-এ আসার ক্ষেত্রে প্রথম বিষয়টা হচ্ছে আইসিটিকে আমরা ফোকাস করি নাই। র‌্যাংকিং-এর জন্য যে কাজটা করা দরকার আইসিটি এবং তথ্য-উপাত্ত, তাকে কখনো আমরা গুরুত্ব দেইনি। আইসিটিকে রেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে গবেষণা হয় সে গবেষণা ও তথ্য উপাত্তগুলিকে অবশ্যই বিভিন্ন প্লাটফর্মে উপস্থাপন করা দরকার।

এছাড়া আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রকাশিত জার্নালগুলো ইনডেক্সটেড নয়। সেটিও একটি কারণ। ভালো মানের জার্নাল যাতে ইউনিভার্সিটিগুলো প্রকাশ করে সে ব্যাপারেও আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। সব ডিপার্টমেন্টে আলাদা আলাদা করে জার্নাল প্রকাশ না করে যদি ভালো মানসম্মত একটা জার্নাল পুরো ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকাশ করা হয় যেটা সারা বিশ্বে ইনডেক্সেট হবে, সারা বিশ্বে সম্মানিত হবে, সেটা বেশি কার্যকরী হবে। এ রকম জার্নালের আমাদের খুব অভাব। কনফারেন্সেরও খুবই অভাব। দেশ-বিদেশের গবেষকদের আমরা অ্যাট্রাক্ট করতে পারছি না। এই কালচারটা আমাদের তৈরি করতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভিসি, ডিন আছেন। ওনারা কিন্তু বিজ্ঞ। ওনাদেরকে এদিকে নজর দিতে হবে। মানসম্পন্ন শিক্ষাকে আরো বেশি বৃদ্ধি করতে হবে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে প্রয়োজন গবেষণা। গবেষণার ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা নিয়ে আপনার মতামত কী?

সাজ্জাদ হোসেন: একজন গবেষক যেকোনো দেশের জন্য কী রোল প্লে করতে পারেন? একটা সোসাইটিকে বদলে দিতে পারেন। গবেষক যে কোনো বিষয়কে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে তাতে নতুন ডাইমেনশন (মাত্রা) আনতে পারেন। সেটাই এখন দরকার।

সামগ্রিকভাবে আমাদের মাইন্ডসেটটা গবেষণাধর্মী নয়। আমরা গবেষণা করতে শিখি নাই। আমরা স্কুল থেকে, কলেজ থেকে এ জিনিসটা প্রণোদনামূলক হিসেবে দেখি না। কেউ তো গবেষণা করছে না। গবেষণা করলে তার বেনিফিট কী? একজন শিক্ষক যে গবেষণা করবেন তার জন্য সঠিক প্রণোদনা কী হবে? সেগুলো আমাদের সমাজে পরিষ্কার নয়। সমাজে শিক্ষককে গবেষক হিসেবে সম্মান দিতে হবে। সে কালচারটা আমাদের সবাইকে তৈরি করতে হবে। সেটা একদিনে তৈরি হবে না।

এছাড়া আমাদের গবেষণা কর্মগুলো কোলাবরেটিভ হচ্ছে না। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক পাবনা সাইন্স এন্ড টেকনোলজি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কাজ করতেন, একসঙ্গে গবেষণা করতেন, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরের যে লিগ্যাসি আছে, সেটা এখানে ট্রান্সফার হতো। তাহলে এক জায়গায় ভালোমানের শিক্ষক, গবেষক তৈরি হতে তো সময় লাগবে। এই লোকাল কোলাবরেশনটা দরকার।

সোসাইটিতে লোকাল যে প্রব্লেম আছে সেটি হতে পারে স্বাস্থ্যগত প্রবলেম, এগরিকালচারাল প্রবলেম, যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রবলেম, এনভায়রনমেন্টের প্রবলেম- এসব বিষয়ে তো আমরা কাজ করছি না। হয়তো কিছু কিছু করছি। কিন্তু স্থানীয় কোলাবোরেশন বাড়াতে হবে। সে সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোলাবোরেশনের দিকেও যেতে হবে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: বলা হচ্ছে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। ভালো ছাত্র, শিক্ষক, গবেষকরা বিদেশমুখী। সে বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

সাজ্জাদ হোসেন: শিক্ষা তলানিতে এ ধরনের শব্দের সঙ্গে কোনভাবেই একমত না। 'আমাদের সবকিছুই খারাপ' এই নেতিবাচক মানসিকতার মধ্যদিয়ে যদি আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা বড় হয় সেটা বিরূপ প্রভাব ফেলবে। আমি মনে করি, আমাদের সবকিছুই খারাপ নয়। 'ইউনিভার্সিটির সব কিছুই খারাপ'- এটাকে আমার এত বেশি প্রোপাগেট করছি যে, আমরা মনে হয় দাঁড়িয়ে নাই। তাহলে আমরা কীভাবে মাথাপিছু আয় ২০০০ ডলারে নিয়ে গেছি, কীভাবে আমরা পদ্মাসেতু করছি? স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করছি, কীভাবে রূপপুর পাওয়ার প্লান্ট করছি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে। বিশ্বের সবাই যেখানে আমাদের মর্যাদা দিচ্ছে সেখানে আমরা মনে করছি আমাদের আসলে কিছু নেই। সেটা কিন্তু সঠিক নয়। সেভাবে উপস্থাপন করলে আমাদেরই ক্ষতি হবে। নিজেদের ক্ষতি আমরা কিন্তু নিজেরাই করছি।

দেশের প্রতি, রাজনীতির প্রতি নেগেটিভ মনমানসিকতা গড়ে উঠলে দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে ওঠা যায় না। আমরা নেগেটিভ জাতি হিসেবে মিথ্যার উপর চলতে ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্যদিয়ে বোঝা যায় আমরা ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে আছি।

একটা ইউনিভার্সিটি তলানিতে গেছে, এটা বলতে ভালো লাগে। খারাপ জিনিসটা সবাই বলতে পছন্দ করে। কিন্তু আমরা অনেক জায়গায় এগিয়ে গেছি, সেটি কিন্তু দিতে চান না। অথচ আমাদের অনেক ভালো কিছু হচ্ছে সেটাও তুলে ধরার চেষ্টা করতে হবে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: বলা হয়ে থাকে পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কার্যক্রম ততটা গতিশীল নয়। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সরকার গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছে। এটাকে কীভাবে আরো কার্যকর করা যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

সাজ্জাদ হোসেন: এটা ঠিক আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা ফান্ড অপ্রতুল। আর সেজন্য ইউনিভার্সিটির যারা সাবেক শিক্ষার্থী, যারা ধনী, তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য অনুদান দিতে পারেন। পাশাপাশি আমি ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টদেরও বলব, আপনাদের যেকোনো সমস্যা থাকলে সেটির সমাধানের জন্য ইউনিভার্সিটিগুলোতে যান। হয়ত তারা প্রথম দিনেই পারবে না, কিন্তু দ্বিতীয় দিনে, তৃতীয় দিনে ঠিকই পারবে।

কালচারটা ডেভেলপ করতে হবে; যেটা জাপানে আছে। সেখানে বার্ষিক রেভিনিউয়ের ১০ পারসেন্ট আরএন্ডডিতে (রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট) দিতে হয়ে। ইউনিভার্সিটির সঙ্গে কাজ করতে হয়। আমাদেরও সেভাবেই কাজ করতে হবে। সবাইকে মিলেই কাজ করতে হবে। একটা ইউনিভার্সিটিও মানসম্পন্ন সবকিছু হঠাৎ করে করে দিতে পারবে না। আবার ইন্ডাস্ট্রিও একা আগাতে পারবে না।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও টেন্ডারবাজিতে ছাত্র-শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বর্তমানে কথা হচ্ছে। ছাত্র রাজনীতিতেও অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। শিক্ষার গুণগত মানের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ছাত্র রাজনীতি কী প্রভাব ফেলছে বলে আপনি কী মনে করেন?

সাজ্জাদ হোসেন: আমি মনে করি না ছাত্র রাজনীতির কারণে শিক্ষার গুণগত মান পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের সবারই মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। শুধু ছাত্ররাজনীতির দোহাই দেব, নিজেরা ঠিক হব না সেটাও না। ছাত্রদেরও রাজনীতি করতে হবে যেটা হবে গঠনমূলক। প্রগতির পথে। প্রতিক্রিয়াশীল নয়। মন মানসিকতা উন্নত হতে হবে। সেখানে রাজনীতি থাকতে পারে, রাজনীতির বাইরে কেউ নয়। তার মানে এই নয় যে ছাত্ররা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত হবে, ছাত্ররা টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত হবে। সেটাতো ছাত্রদের কাজ না। ছাত্ররা ছাত্রদের কাজ করবেন। শিক্ষকরা শিক্ষকদের কাজ করবেন। গবেষণা করবেন, পড়াবেন, নীতি নৈতিকতার মধ্যে থাকবেন।

দেখুন ইউনিভার্সিটিগুলো একটা বিশাল কর্মযজ্ঞে ঢুকে যাচ্ছে, অনেক কাজ হচ্ছে, অনেক ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে। সে ডেভেলপমেন্টগুলোর জন্য আমি মনে করি যে হয়তবা কোনো সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এটা সাময়িক।

আমাদের ইকোনমিটা বেড়ে যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটিগুলোকে অনেক বড় করতে হচ্ছে। অনেক ক্যাপাসিটি বিল্ডিং করতে হচ্ছে। অনেক ধরনের ইনফ্রাচট্রাকচার ডেভেলপ করতে হচ্ছে। অনেক সিনিয়র প্রফেসর, ভাইস চ্যান্সেলরদের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। একটা ইউনিভার্সিটি চালাতে ভিসিদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে ইউজিসি কী ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে?

সাজ্জাদ হোসেন: আমরা গবেষণাকে উৎসাহিত করছি। ইউনিভার্সিটি যেন আইসিটিকে ফোকাস করে, নতুন নতুন টেকনোলোজিকে ধারণ করে, ইন্টারন্যাশনাল ও লোকাল কোলাবোরেশন করে, গবেষণাকে প্রাধান্য দেয় সেদিকে উৎসাহিত করছি।

আমরা গবেষণা ও র‌্যাংকিং-এ যেন একটা সম্মানজনক জায়গায় যেতে পারি সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে নীতিমালা তৈরি করছি।

শিক্ষক হচ্ছেন ইউনিভার্সিটির মূল প্রাণশক্তি। ভালোমানের শিক্ষক ছাড়া একটি ইউনিভার্সিটি দাঁড়াতে পারে না। ভালোমানের গবেষক ছাড়া গবেষণা দাঁড়াতে পারে না। ইউনিভার্সিটিগুলো যাতে ভালোমানের শিক্ষক নিয়োগ করতে পারে, সেজন্য আমরা নির্দেশিকা দিতে চাচ্ছি। নূন্যতম কোয়ালিফিকেশনকে ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগাবে। এছাড়া ইউনিভার্সিটিগুলোর নিজস্ব স্বায়ত্তশাসন আছে। সেটিকে মেইনটেইন করে ওনাদের নীতিমালা দেখে ওনারা কাজ করবেন। আমরা সহযোগী অ্যাপেক্স বডি হিসেবে কাজ করছি। স্টার্টআপ, ইনোভেশন হাব এবং বিভিন্নভাবে গবেষণা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: জাতি গঠনে শিক্ষার বিকল্প নেই। উন্নত রাষ্ট্র পরিণত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। সে যাত্রাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

সাজ্জাদ হোসেন: বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানসম্মত উচ্চশিক্ষার বিকল্প কিন্তু নেই। কেননা প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটা সুনির্দিষ্ট ভিশন, স্ট্রাকচার, স্বপ্ন ও সেটা বাস্তবায়নের রূপরেখা দিয়েছেন। সেগুলোই হল ভিশন-২০২১ , ভিশন-২০৪১। আমরা এখন ২০০০ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশে আছি, ২০৪১ সালে যেটা হবে ১৫ হাজার ডলার, উন্নত বিশ্বের যেমনটা থাকে। আর সেজন্য মাত্র ২১টা বছর বাকি আছে। আমরা এখন সবচেয়ে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টে বাস করছি। সেটা হল আমাদের ৮ কোটি লোক আছে ১৫-৩৫ বছরের মধ্যে। এদেরকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। আমাদের খনিজ সম্পদ নেই। কিন্তু মানব সম্পদ আছে, উর্বর ভূমি আছে। আমাদের দেশটা মেধাবীদের। আমাদের ছেলেরা মেধাবী ,পরিশ্রমী। এটার প্রমাণ পাওয়া যায় আমরা যখন ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, জাপানে যাই। দেখা যায় তারা সবাই ভালো করছে। কারণ তারা মেধাবী, পরিশ্রমী, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের এখানে সে পরিবেশটাই তৈরি করতে হবে, আর কিছু না।

জাতির পিতা আমাদেরকে একটি দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। ওনাকে তো ধারণ করেই এগোতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেই এগোতে হবে। মানসম্পন্ন শিক্ষা আর জাতির উন্নয়ন-সবকিছুর পেছনে একটা ইতিহাসও থাকতে হবে। দেশ থাকতে হবে। দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভালোবাসতে হবে। জাতির পিতাকে সম্মান করতে হবে।

উচ্চশিক্ষাকে আরো ভালো ও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই হচ্ছে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন। উনি দিনরাত পরিশ্রম করছেন যে আমাদেরকে একটা তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর জাতি হিসেবে তৈরি করার জন্য। যে ফোর্থ জেনারেশন ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনের কথা বলছেন, উনি কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের কথা বলছেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কথা বলছেন, রোবোটিক্সের কথা বলছেন। সেকারণে দেখবেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ যে রূপকল্প, সে রূপকল্পের একজন কর্ণধার আছেন- সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানে আইসিটি মন্ত্রণালয় ও শিক্ষামন্ত্রণালয় একসঙ্গেই কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তার বাইরে নয়। আমরা কিন্তু একসঙ্গেই কাজ করছি। কারণ তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর মানসম্পন্ন শিক্ষাই হতে পারে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের মূলমন্ত্র।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

সাজ্জাদ হোসেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর