লক্ষ ‘এক’...লক্ষ্যও এক

, যুক্তিতর্ক

এরশাদুল আলম প্রিন্স | 2023-08-23 05:30:11

দেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে এ শতাব্দীর সূচনাটিকালটি একটি মাইলফলকই বলতে হবে। বাংলাদেশ ধীরে ধীরে এ সময়ে অনলাইন গণমাধ্যমের জগতে প্রবেশ করেছে। দেখাদেখি অনেক সংবাদপত্রও তাদের অনলাইন ভার্সন চালু করে। শুরু হয় বাংলাদেশে অনলাইন গণমাধ্যমের পথযাত্রা। এ পথযাত্রায় আজ সবাই পথিক।

রচিত পথে সবাই হাঁটতে পারেন। কিন্তু সবাই পথ দেখাতে পারেন না। যিনি পথ দেখান, নতুন পথের স্বপ্ন দেখেন, দেখান, তিনি পথিকৃৎ। বাকিরা সবাই তার অনুসারী মাত্র। যিনি পথিকৃত, তিনি সৃজনশীলও। তাই নিজের সৃজিত একই পথে তিনি চলবেন, তা তো নয়। বরং, নতুন পথযোগই যে তার নিরন্তর কাজ। যদি তা নাও হয়, অন্তত সেপথে নতুনমাত্রা যোগ তো অবশ্যই। সেই পথিকৃতের হাতেই এবারের “বার্তা২৪”। ২৪ ঘণ্টার “বার্তা২৪”। এবারে সেই পথিকৃতের বার্তা শুধু নতুন পথেরই নয়, এতদিনের অনলাইনের পথে তিনি এবার যোগ করেছেন নতুন মাত্রাও। অনলাইন ও ডিজিটাল মাধ্যমের সাথে তিনি এবার যোগ করেছেন মাল্টিমিডিয়া।

অনলাইন গণমাধ্যমের স্বপ্নযাত্রাকে গণমাধ্যমের একমাত্র গন্তব্যে পরিণত করেছেন সেই পথিকৃৎ। নিজের সৃষ্টিকেই তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। আগের অনলাইন গণমাধ্যমের ইতি টেনে অনলাইন ও ডিজিটাল গণমাধ্যমের মিথস্ক্রিয়ায় সৃষ্টি করেছিলেন আরেক মাইলফলক। তার এ নব সৃষ্টির কাছেই হার মেনেছে পুরাতন সৃষ্টি। কিন্তু দুটোতেই তিনি ছিলেন এক ও অনন্য, সবার থেকে এগিয়ে।

এগিয়ে আছেন এবারও। মাল্টিমিডিয়ায় “বার্তা২৪” ইতিমধ্যেই অনন্য ও সেরা। সবেমাত্র দুইমাস হলো এর যাত্রা। এরই মধ্যে সারা ফেলেছে পাঠকের কাছে। কারণ, চিরচেনা অনলাইন ডিজিটাল মিডিয়ার পাশাপাশি মাল্টিমিডিয়াই এখানে প্রমিনেন্ট। পাঠক বা ভোক্তার অন্তরের লুকানো চাহিদার উপলব্ধি সবাই করতে পারে না। কারণ এটা থাকে লুকায়িত, সুপ্ত। ভোক্তার প্রকাশিত চাহিদা বা পণ্যের ব্যবসা সবাই করতে পারে। পুঁজি থাকলে চাল, ডাল, কাপড়, চিটাগুড়, ভুসিমালের ব্যবসা সবাই করতে পারে। কিন্তু সময় ও বাস্তবতার নিরিখে মানুষের চাহিদা উপলব্ধি করে তার যোগান সবাই দিতে পারে না। ব্যবসা তো পরের কথা। কিন্তু যিনি তা বুঝতে পারেন, তিনি তার সৃষ্টি ও যোগান দেওয়ার জন্য শ্রম ও মেধার প্রয়োগ করেন। ফলে তিনি ব্যবসায়ী নন, তিনি সেবক।

বাংলাদেশের অনলাইন গণমাধ্যমের জনক ও পথিকৃৎ হিসেবে যাকে আমরা জানি—তিনি আলমগীর হোসেন। তিনিই বাংলার অনলাইন গণমাধ্যমের পথিকৃত, সে পথে নতুন মাত্রা সংযোগকারীও তিনিই। অনলাইন গণমাধ্যম তার কাছে চাকরি নয়, নয় শুধু পেশাও। তিনি সৃজন করেন। পাঠকের অন্তরের আজ ও আগামীর প্রয়োজন তিনি উপলব্ধি করতে পারেন। পাঠক তার কাছে শুধু ভোক্তা নয়, তাই তিনিও শুধু ব্যবসায়ী বা অনলাইন চাকুরিজীবী নন। পাঠক তার কাছে পূজনীয় মানুষ, তাই তিনিও অনলাইন বা ডিজিটাল ব্যবসায়ী নন, তিনি অনলাইনের সেবক, গুরুজন। সেই গুরুর এবারের বার্তাই বার্তা২৪.কম।

মাল্টিমিডিয়ার বারতা নিয়েই এবারের এই যাত্রা। সে যাত্রায় যোগ হবে আরো আরো অনেক কিছুই। মানুষ যা চায়, হৃদয়ের আরেকটু কাছাকাছি গিয়ে সে কথা শুনে বিশ্বের কাছে পৌঁছানোই এবারের প্রচেষ্টা। কিন্তু পাঠক কিভাবে সে কথা শুনতে, জানতে ও বুঝতে চায়—সেটি প্রকাশের মাত্রাটি এবারে একেবারেই ভিন্ন। “বার্তা২৪”-এর ভিন্নতাও সেখানেই। পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাঝে দৃষ্টি বা চোখই সবচেয়ে শক্তশালী। চোখ দিয়ে মানুষ যা দেখে তার আয়ুষ্কাল সবচেয়ে বেশি। তাই দৃষ্টির পথেই প্রবেশ করতে চাই মানুষের হৃদয়ের গভীরে। কথায় আছে, চোখের ভাষা যে বোঝে না, হাজার বই পড়েও সে নির্জ্ঞান। ‘বার্তা’র দৃষ্টি এবার বাঙালির দৃষ্টিতে। ‘বার্তা’ দেখবে বাঙালিকে নতুন করে, নতুনভাবে। বাঙালিও ‘বার্তা’য় দেখবে নিজেকে নতুন করে। সেখানেই সৃজিত হবে এক নতুন সংবাদ সারথি।  

আসলে সময় বদলেছে। সময় এখন নিজেকেও সময় দিতে চায় না, সে এতই ব্যস্ত। পাঠক-মানুষ এখানে আরো ব্যস্ত। কিন্তু শত ব্যস্ততার মাঝেও সে আপন আলোয় দেখতে চায় তার আপন ভুবনকে। যা কিছু ভালো তার সব কিছুর সাথেই সে তার সম্পর্ক আবিষ্কার করে। আমরা বাংলার ও বাঙালির যা কিছু ভালো তা তুলে আনতে চাই বাংলার ও বাঙালির মতো করে, বাংলার কাছে, বাঙালির কাছে, বিশ্বের কাছে। তাই “বার্তাকে” আমরা বলি “বাংলার, বাঙালির সংবাদ সারথি”।

সবে মাস দুই হলো। কিন্তু এরই মাঝে ব্যাপক সাড়া। কারণ, পাঠক পেয়েছে এক নতুন ইশারা, নতুন বার্তা। সামাজিক গণমাধ্যমে পাঠক ঘুরে বেড়ান দেশ থেকে দেশান্তরে। কতকিছুই তার দৃষ্টির সীমায় আসে আর যায়। কতকিছুই তার ভালো লাগে। কোনো কিছু ভালো লাগলে ফেসবুকের ভাষায় আমরা ‘লাইক’ করি। কিন্তু সব ভালোলাগাই কি হৃদয়ের কাছাকাছি বাসা বাঁধতে পারে? ‘আজ আছি কাল নেই ডট কম’-এর জগতে মানুষের এই ভালোলাগার আয়ু কতক্ষণ? কথায় বলে, একবিংশ শতাব্দীতে মানুষের শোকের আয়ু আড়াই দিন। কিন্তু এই ভালোলাগার আয়ু আরো কম বই বেশি হবে কি? কারণ, ভালোবাসার আয়ুই নাই বললে চলে।

এই স্বল্পদিনের পথ চলায় বন্ধু (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভাষায় ফ্যান) হয়েছেন এক লাখ। ‘বার্তা’র পেজে লাইকের সংখ্যা আজ এক লাখ। এটি আনন্দের সংবাদ। কিন্তু যত ভালোলাগা, তত ভালোবাসা, তত দায়িত্ববোধ। আমরা তা জানি ও মানি। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই এজেন্ডা এবার—গুণ ও মান। পরিমাণটাতো আছেই।

ফেজবুকে আজ এক লক্ষ বন্ধু হয়েছেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এ ডিজিটাল সময়ে কাছে যেমন চাই, পাশে চাই তারচেয়েও বেশি। কাছের ও পাশের সব বন্ধুকে সাথে নিয়ে যেতে চাই বহুদূর। আজ এক লক্ষ। কিন্তু জানি, এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে অনেক, অগণিত। কিন্তু লক্ষ্য আমাদের একটাই—বাংলা, বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, আজ ও আগামীকে আমরা নতুন করে, নতুন দৃষ্টিতে দেখতে ও দেখাতে চাই, বাংলাকে, বাঙালিকে, বিশ্বকে—আজ ও আগামীতেও। বিশ্বকেও দেখতে চাই নতুন করে।

এরশাদুল আলম প্রিন্স
আইনজীবী ও কন্ট্রিবিউটিং এডিটর-বার্তা২৪

এ সম্পর্কিত আরও খবর