করোনার বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদেরও যুদ্ধ

, যুক্তিতর্ক

সৈয়দ ইফতেখার | 2023-08-18 04:37:12

কোভিড-১৯। যে জ্বরে কাঁপছে সারাবিশ্ব। অনেকে একে সংক্ষিপ্ত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও বলছেন। যে যুদ্ধের খলনায়ক ক্ষুদ্র ভাইরাস আর নায়ক চিকিৎসকরা। বিষয়টি সারা বিশ্বেই তাই। চীনে জীবন দিয়ে চিকিৎসকেরা রোগীকে সারিয়ে তুলছেন। ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যেও একই অবস্থা। বাংলাদেশেও সেটিই হওয়ার কথা, কিন্তু দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রেক্ষাপট।

চিকিৎসকেরা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। আবার দিচ্ছেনও না। প্রথম দিকে ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) যখন ছিল না, তখনও অনেকে এগিয়ে এসেছেন। আবার অনেকে আসেনওনি। এতো কিছুর পরও যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা মহৎ। মনবতার ব্রত তাদের মনে খেলা করে। আর যাদের মধ্যে এতোটুকু মানবপ্রেম জাগেনি, তারা চিকিৎসক নামের ব্যবসায়ী এ কথা আবারও তারা প্রমাণ করলেন।

পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছে তা বলা যায় না। এখনও পিপিই’র সংকট বিদ্যমান, তবুও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন বহু জনদরদী চিকিৎসক।

যুদ্ধ সব পেশায় কম বেশি থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন মানুষকে নিরাপদ রাখতে ৩৬৫ দিন যুদ্ধ করে যায়, তেমনি চিকিৎসকদের যুদ্ধ অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তোলার। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঝুঁকি থাকে সবসময়ই কম-বেশি। কিন্তু চিকিৎসাকাজে স্বাভাবিকভাবে নেই কোনো ঝুঁকি। কিন্তু এই নভেল করোনাভাইরাস খুলে দিয়েছে ঝুঁকির দ্বার। তাই চিকিৎসকদেরও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে, এটাই পেশাগত যুদ্ধ। এটা মানতেই হবে। এর থেকে পিছপা হওয়ার সুযোগ নেই। তাই সবার ছুটি থাকলেও চিকিৎসকদের বসে থাকার জো নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষেত্রেও বিষয়টি তেমন।

পরিস্থিতি যুদ্ধকালীন না হলেও যুদ্ধের মতোই। এই ভাইরাস যুদ্ধে আরেকটি পক্ষ সাংবাদিকরা। তারাই কিন্তু যুদ্ধের অগ্রগতি, হালচাল সব তুলে ধরছেন সাধারণ মানুষের কাছে। এক্ষেত্রে তারাও নায়ক, এ কথা কোনো সাংবাদিক বলবেন না, কিন্তু পাঠক-দর্শক ঠিকই জানেন সাংবাদিকরাও এ যুদ্ধে সামনে থেকে লড়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকেই হয়ত জানেন না, তাদের লড়ে যাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে করোনার দিনগুলোতে। আপনি বাসায় বসে সংবাদ দেখছেন আর আলোচনা-সমালোচনা করছেন, এই সংবাদ তৈরির পেছনে কতটা কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে একজন সংবাদকর্মীকে তা কজনে জানেন!

হাইকোর্ট সম্প্রতি বলেছেন, ‘সংবাদপত্র, সাংবাদিক হচ্ছেন সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ। এই চতুর্থ স্তম্ভ যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে রাষ্ট্রের বাকি তিন স্তম্ভ- আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে’।

সাধারণভাবে সাংবাদিকতা ঝুঁকির কাজই বটে। কিন্তু এই সময়ে এসে, অদৃশ্য ভাইরাসের সময়ে এ ঝুঁকি কয়েকগুণ বেশি। কোনো মিডিয়া প্রতিষ্ঠানই চায় না, তার সংবাদকর্মী ভাইরাসে আক্রান্ত হোক। তাই ‘আগে জীবন, পরে সংবাদ’ এই ভিত্তিতে কাজ করতে বলা হয়েছে সাংবাদিকদের। ঝুঁকিকে জয় করে সংবাদ তৈরি করতে হচ্ছে প্রতিদিন। অনলাইন মাধ্যম সীমিত করে আনা হয়েছে। বাসা থেকে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন পোর্টালের সাংবাদিকরা। কিন্তু কিছু কিছু সংবাদের জন্য বাইরে ঠিকই বের হতে হচ্ছে প্রতিবেদককে।

বাইরে বরে হলে নিজস্ব সুরক্ষা নিজেকেই নিশ্চিত করতে হচ্ছে। এতে কখন, কোথায়, কে, কীভাবে আক্রান্ত হয়ে যান তার ঠিক নেই। এ কথা মাথায় রেখেই জনস্বার্থে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি ভুলে যাচ্ছেন না যে সাংবাদিকতা শুধু নির্দিষ্ট পেশা নয়, এটি সমাজ, রাষ্ট্রের কাছে নিজের দায়বদ্ধতাও। এই কাজ কেবল চাকরি নয়, এটি এক ধরনের ভালো লাগা, এক ধরনের ঘোর, এক রকম নেশাও। যেখানে সব পেশার মানুষের ছুটি, সেখানে একটি দিনও ছুটি কাটানোর সুযোগ নেই সাংবাদিকের, বরং সংবাদের চাপ বেশি থাকায় কাজ করতে হচ্ছে আগের চেয়ে আরও বেশি।

দেশে ছাপা পত্রিকার দুঃসময় গত দশক থেকেই শুরু (বিশ্বে আরও আগে থেকে)। কোভিড-নাইনটিনের প্রভাবে যা আর স্পষ্ট হয়। কাগজের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় সংবাদপত্রের গ্রাহকরা ছাপা কাগজ আর রাখছেন না। যদিও করোনা এইভাবে ছড়ানোর সুযোগ তেমন নেই, বলছেন চিকিৎসকেরা। তবুও যে হকার এই পত্রিকা বিলির সঙ্গে যুক্ত, তিনিই তো আর ঢাকায় নেই। কিংবা থাকলেও ঝুঁকি এড়াতে বাসায় রয়েছেন। কাটাচ্ছেন সরকারি ছুটি। তবুও পত্রিকা প্রকাশ স্বল্প পরিসরে হলেও থেমে নেই। সাংবাদিক ও কারিগরি দিকের কর্মীরা যারা অফিস করছেন, তারা ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই দায়িত্ব পালন করছেন। ভয়-ডর দূর করে সংবাদ সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন তারা।

করোনাভাইরাসের এই সময়ে গণমাধ্যমের নানা ধারার মধ্যে টেলিভিশন সচল সবচেয়ে বেশি। সচল তাদের ইউটিউব চ্যানেলও। এগুলোর কাজ হয়নি সীমিত, নেই ছুটিও। একটা বিকল্প পদ্ধতি ধরে কাজ করছেন ব্রডকাস্ট সাংবাদিক ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। কোনো কোনো স্টেশনে একদিনেই করতে হচ্ছে দুই দিনের অফিস, পরদিন মিলছে ছুটি। কোথাও কোথাও টানা চারদিন অফিস শেষে তিনদিন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে (চারদিন কর্মঘণ্টা বেশি)। আবার কোথায় সাত দিন অফিস, সাত দিন ছুটি।

এমন সব নিয়মে চলছে টেলিভিশন। রেডিওর ক্ষেত্রেও বিষয়টি তাই। জেগে আছে নিউজরুম। দম ফেলার ফুরসত নেই সংবাদকর্মীদের। বিকল্প পদ্ধতি ভাবার কারণ হলো, এতে আসা-যাওয়া কম করতে হচ্ছে। অফিসের গাড়ি নিয়ে আসছে, নিয়ে যাচ্ছে যখনই ডিউটি টাইম তখনই। অফিসে একবার ঢুকে গেলে, হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করে নিজেকে সুরক্ষিত রেখে কাজ করে যাওয়া যাচ্ছে। অফিসে ঢুকতে বের হতে মাপা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। সবাই যখন সেফ হোম কোয়ারেন্টিনে, সেখানে সংবাদকর্মীরা নিজের ঘুম বিসর্জন দিয়ে জনগণের জন্য সংবাদ পরিবেশন করছেন। দেশ ও বিদেশের খবর প্রকাশ করছেন। ঘরে বসেই জানতে পারছি, দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কত। সাধারণ ছুটির নিয়ম ভেঙে বাইরে বের হলে কী পরিণতি হবে। ইতালি, স্পেনে মৃত্যুর মিছিলের তথ্য ইত্যাদি ইত্যাদি।

এছাড়া মানুষের সচেতনতায়ও কাজ করছেন সংবাদকর্মীরা। পাশপাশি গরিব, আসহায়, ছিন্নমূল মানুষ এই সময়ে না খেয়ে আছে, এই বিষয়টিও বিবেকবানদের ঘরের বৈঠকখানায় সংবাদ আকারে পৌঁছে দিচ্ছেন সাংবাদিকরা। যা সমাজ পরিবর্তনে, সামাজিক উন্নয়নে কাজে দিচ্ছে।

দেশের বাইরে নাজুক করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও টেলিভিশনের বিদেশ প্রতিনিধিরা লাইভ করছেন। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন, পতুর্গাল, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ যেসব দেশে করোনা রোগী বেশি এবং বাংলাদেশি আক্রান্ত হচ্ছেন সেই সব খবর বিদেশি প্রতিনিধিরা স্পটে থেকে কাভার করছেন। এতে দেশের সাংবাদিকদের থেকেও তাদের ঝুঁকি কয়েক গুণ বেশি। তবুও তারা তথ্য দিচ্ছেন। ঘরে বসে মানুষ এসব দেখতে ও শুনতে পারছেন। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদেরও এ এক আপ্রাণ যুদ্ধ। সারা বিশ্বেই এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশি সাংবাদিক স্বপন হাই মারা গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিএসের খ্যাতনামা সংবাদিক মারিয়া মেরক্যাডার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এমন বেশ কয়েকটি তথ্য রয়েছে।

এসব বিষয়ে দেশে একজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল। তিনি এই যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ নিয়ে রয়েছেন মাঠে। বললেন, ‘ইতালিতে প্রতিদিনই গড়ে ৫শ’ জন মারা যাচ্ছেন। স্পেনেও তাই। খুব ভয়াবহ অবস্থা। আমাদের অফিসে, বহু রিপোর্টার হাসপাতালে যান। খবর সংগ্রহ করেন। জনসমাগম, বিমানবন্দর, প্রেস ব্রিফিংসহ নানা স্থানে কাজ করেন। সবার কাছে তো আর পিপিই নেই। সাধারণ সুরক্ষা মেনে চলে তারা ফের অফিসে আসেন। আমরা অফিসে বসি, কাজ করি একই ডেস্কে। সব যখন বন্ধ তখন আফিস আমাদের খোলা। কারণ আমরা বন্ধ নিলে টেলিভিশনে কী দেখবে মানুষ? এখন বাসায় বসে মানুষ নিউজই দেখছে। দর্শকের চাহিদা মেটাতে দুই শিফটে আমরা অফিস করছি। কেউ রাতে, কেউ দিনে। ব্যাপক কাজের চাপ রয়েছে। আর ঝুঁকির কথা তা আর নাই বলি। কষ্ট হচ্ছে এই ভেবে যে, দুনিয়ার সবার ছুটি- অথচ আমাদের নেই। ছুটিটা পেলে অন্তত শরৎচন্দ্র, কিংবা জীবনান্দ নিয়ে বসতে পারতাম। পড়তাম হরেক রকম বই। পরিবার ও নিজেকে সময় দেয়াও যেতো। বাসায় বাবা-মা’র বয়স হয়েছে। আমি আক্রান্ত হলে বা জীবাণু বহন করলে ক্ষতি আমার চেয়ে তাদের বেশি। তাও যুদ্ধ করে যাচ্ছি। জাতীয় দায়িত্ব, পেশাটাই এমন। মানুষের সেবা করা তথ্য দিয়ে- সংবাদ দিয়ে- যা করতে গিয়ে ঘর, সংসার, জীবন সবই বাজি ধরতে হয় রোজ’।

সাংবাদিকতা এমনই। এভাবেই চলছে শত বছর। এ এক ভিন্ন অনুভূতি। ভিন্ন অভিজ্ঞতা। অথচ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কষ্ট করে, দিন শেষে গণমাধ্যমের সংকটও দেখতে হয় সাংবাদিকদের। সেটি অর্থনৈতিক বৈকি। কারণ এই সংকটময় সময়ে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন নিজেই নানা সমস্যার মুখোমুখি রয়েছে। বিশেষ করে সংবাদপত্রের সার্কুলেশন কমে গেছে, কোনোটা অর্ধেকে নেমে এসেছে, কোনোটা আরও কমে গেছে। হকার ও সংবাদপত্রে যারা দৈনিকভিত্তিতে কাজ করেন, তারা নানা সমস্যায় পড়েছেন। টেলিভিশনেও দিনে দিনে কমছে বিজ্ঞাপন। কারণ বাজার ব্যবস্থা ভালো না। সমস্যাগুলো মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে কী কী করা যায় এবং গণমাধ্যমের পাওনা বিলগুলো যাতে তাড়াতাড়ি দিয়ে দেয়া হয় এ নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিকদের আলোচনা হয়েছে। টেলিভিশনের জন্য চাওয়া হয়েছে আলাদা প্রণোদনাও।

সাংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। সংবাদের ক্ষুধা মেটাচ্ছেন সাধারণ মানুষের। তাদের ভবিষ্যৎ জীবন ও বর্তমান ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে সরকার যেন একটা উদ্যোগ নেয়, এটাই এখন সময়ে দাবি। কোনো সংবাদমাধ্যম যেন ক্ষতির মুখে না পড়ে। পত্রিকা, অনলাইন ও টেলিভিশন শিল্প যেন আরও বিকশিত হয়- যেমনটা করোনার আগে সগৌরবে চলছিল- তেমনই যেন থাকে।

আরেকটা কথা, আপনি যত বেশি মেইনস্ট্রিম মিডিয়াকে গুরুত্ব দেবেন, যত বেশি স্বচ্ছ ও সঠিক সংবাদ প্রচারে সহায়তা করবেন, সার্বিক মূল্যায়ন করবেন তত বেশি সমাজ থেকে দূষণ দূর হবে। দুর্নীতি কমবে। মানুষের মধ্যে বাড়বে সচেতনতাও। কেটে যাবে গজবের ঘনঘটা। তখন আর সরকার প্রধান কিংবা সরকারের অংশ হয়ে আপনাকে- উন্নয়নের কথা মুখে তুলবার আগে, দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া গুজবের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিতে হবে না। এক একটি বড় বড় ঘটনা দেশে এক একটি গুজবের জন্মদাতা হয়ে যাচ্ছে তা কারোই কাম্য নয়।

মূল ধারার সংবাদমাধ্যমগুলোকে এগিয়ে আনুন, সত্যিকারের যারা সাংবাদিকতা পেশাকে ভালোবাসেন তাদের গুরুত্ব দিন- বেতন-ভাতা ঠিক মতো পাচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখুন, দেখবেন অধিকাংশ সামাজিক সমস্যা ও অসচতনতা দূর হয়ে যাবে। উন্নত দেশ গড়তে হলে রাষ্ট্রের চতুর্থ এই স্তম্ভকে মজবুত না করলে, উন্নয়নের রেশ দৃশ্যত দেখা মিললেও তা টেকসই রূপ পাবে না।

সৈয়দ ইফতেখার: লেখক, সাংবাদিক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর