পাঠাও পে অবৈধ, ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-26 09:07:04

ঢাকায় জনপ্রিয় হওয়া রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’ তাদের অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেনের যে ওয়ালেট সুবিধা চালু করেছিল তা অবৈধ বলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের লেনেদেন করায় পাঠাও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রায় ৪২ দিন পাঠাও ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করেছিল।

শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পাঠাও অনুমতির জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু দেখা গেছে, তারা আগে থেকেই লেনদেন শুরু করে দিয়েছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। প্রথমত তাদেরকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ‍দ্বিতীয়ত কী ধরনের লেনদেন কত পরিমাণে বিস্তারিত গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাংকের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলো কাজ করবে। আগামী রোববার অফিস খুললে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা জানা যাবে।

পাঠাও সিইও হোসেন মো ইলিয়াস তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন,এখন আমরা আমাদের ভুলগুলোকে শুধরে একটি নতুন এবং আরও ভালো ‘পাঠাওপে’ সেবা নিয়ে আসব। দুর্ভাগ্যবশত এই কাজটি করার জন্য আমাদের গ্রাহকদের টপ-আপগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। বর্তমানে যে ব্যালান্স আছে তা ব্যবহারযোগ্য হবে এবং গ্রাহক ও আমাদের রাইডার্স উভয়ের জন্য ডিসকাউন্ট থাকবে। আশা করি আমরা আরও সুশৃংখল অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে আসব এবং ডিজিটাল বাংলাদেশে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাব। #এগিয়েচলো_বাংলাদেশ

সূত্র জানায়, ৪২ দিনের বেশি সময় পাঠাও তাদের অ্যাপে ব্যবহারকারী একটি ‘পাঠাও পে’ নামে ওয়ালেট সুবিধা দিয়ে আসছিল।

এই ওয়ালেটে টাকা রিচার্জ করা যেত। এই রিচার্জ ব্যালেন্স দিয়ে পাঠাও রাইড নেওয়া যেত। আবার ওয়ালেট থেকে টাকা উত্তোলনও করা যেত। ব্যবহারকারী এবং রাইডারের মধ্যে ওয়ালেটের মাধ্যমে উভয়ে একে অপর ‘ক্যাশলেস’ টাকা দেওয়া নেওয়া করতে পারতেন।

ব্যাংকিং নীতিমালা না মেনে এরকম কাজ শুরু করায় বাংলাদেশ ব্যাংক তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করছে বলে উল্লেখ করেছেন মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

এক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও বিএসআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট) এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

বিএসআইইউ এর একজন প‌রিচালক বার্ত‌া২৪.কম জান‌ি‌য়ে‌ছেন, অ‌বৈধ ব্যবসার জন্য পাঠাও এর বিরু‌দ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হ‌বে। এ‌ক্ষে‌ত্রে অন্যান্য আইন প্র‌য়োগকারী সংস্থার স‌ঙ্গে মি‌লে তারা কাজ কর‌বেন।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় পাঠাও চালু হয়। শুরুর দিকে তাদের অ্যাপে কেবল মোটরাসাইকেল ডেকে এনে ব্যবহার করা যেতে। পরে পাঠাও কারস যুক্ত করা হয়। ঢাকার পর চট্টগ্রাম সিলেটেও চালু করা হয় পাঠাও। আর ঢাকায় কোরিয়ার সাভিষ ও পাঠাও ফুড ডেলিভারি সার্ভিস চালু করে।

এর মধ্যে পাঠাও মোটরসাইকেল রাইড জনপ্রিয় হয়ে উঠে। পাঠাও-এর একটি নিজস্ব তথ্যে দৈনিক ঢাকায় ৩০ হাজারের বেশি রাইড হয়। একেকটি রাইডে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ভাড়া আসে। এর ২০ ভাগ কমিশন নেয় পাঠাও অ্যাপস। বাকিটা মোটরসাইকেল চালকের।

পাঠাও সহ কোনো রাইড শেয়ারিং অ্যাপকে এখনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি বিআরটিএ থেকে। বিআরটিএ তে আবেদন করেছিল পাঠাও। তবে রাইড শেয়ারিং নীতিমালার শর্ত পূরণ না করায় আবেদন বিবেচিত হয়নি। বিআরটিএএর নিবন্ধন না থাকায় এখনো সেবাটি এক ধরনের অবৈধ ভাবেই চলছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর