চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল ভূমি বরাদ্দের টাকা হস্তান্তর মঙ্গলবার

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 10:24:35


আসছেন নৌ মন্ত্রী

পাঁচ তারকা হোটেল র‌্যাডিসনে হবে হস্তান্তর প্রক্রিয়া


আলোচিত বে টার্মিনাল নিয়ে অবশেষে সঠিক কক্ষপথে চট্টগ্রাম বন্দর। প্রায় তিন বছর আগে বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও ভূমি প্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে কাল (মঙ্গলবার)। চট্টগ্রামের আগামীর বন্দর হিসেবে বিবেচিত বে টার্মিনালের জন্য দুই ধাপে ৮৮৮ একর ভূমি বরাদ্দের প্রথম ধাপে ৬৭ একর ভূমির টাকা পরিশোধ করছে কাল। ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ৩৬২ কোটি টাকার বিনিময়ে এ ভূমি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। আর ভূমি বরাদ্দের টাকা জেলা প্রশাসনকে হস্তান্তর করতে চট্টগ্রামে আসছেন নৌ মন্ত্রী শাজাহান খান। চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরীন সব অনুষ্ঠান বন্দরের নিজস্ব অডিটরিয়ামে হলেও এই অনুষ্ঠানটি হচ্ছে চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা হোটেল র‌্যাডিসনে। মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই চেক হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

নগরীর ইপিজেডের পেছন থেকে দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনি ঘাট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় সাগরের ভেতরের অংশে ২৩০০ একর ভূমিতে গড়ে উঠতে যাচ্ছে এই বে টার্মিনাল। দিন রাত ২৪ ঘন্টা নেভিগেশন সুবিধার সম্ভাবনার এই টার্মিনালের ভূমি বরাদ্দ প্রক্রিয়া ঘুরছে তিন বছর ধরে। ২০১৫ সালে ভূমি বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। দীর্ঘ জটিলতা শেষে কাল এর মূল্য পরিশোধ করা হচ্ছে।

আলোচিত এই টার্মিনাল প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজ বলেন, আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে বে টার্মিনাল প্রকল্পের দৃশ্যত অগ্রগতি দেখাতে চেয়েছি। আর এরই অংশ হিসেবে ভূমি বরাদ্দের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো। এখন দ্রুত এই স্থানে নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করা হবে। আমরা এতোদিন তা বরাদ্দের অপেক্ষায় ছিলাম।

বন্দরে সূত্রে জানা যায়, সাগর পাড়ে দুই ধাপে ৮৮৮ একর ভূমি বরাদ্দের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করে। প্রথম ধাপে ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬৭ একর জায়গা ও দ্বিতীয় ধাপে সরকারি খাস জায়গা (৮২১ একর) বরাদ্দের জন্য আবেদন করে। বর্তমানে ৬৭ একর জায়গার টাকা জেলা প্রশাসনকে পরিশোধ করা হচ্ছে। এই ৬৭ একরের মূল্য এসেছে ৩৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এই টাকা জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ভূমি মালিকদের কাছে  হস্তান্তর করবে। অপরদিকে বাকি ৮২১ একর ভূমির বরাদ্দ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) জিল্লুর রহমান বলেন, বাকি ভূমি বরাদ্দের প্রক্রিয়াও প্রায় সম্পন্ন, আগামী তিন মাসের মধ্যে হয়তো আমরা তা বরাদ্দ পেতে পারি।

এদিকে বে টার্মিনালের নির্মাণের সম্ভাব্যতা জরিপের কার্যক্রম শেষ করে জার্মানির হামবুর্গ পোর্ট কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান বন্দরের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্রেক ওয়াটার নির্মাণের মাধ্যমে বে টার্মিনাল গড়ে তোলবে। বে টার্মিনালে তিনটি টার্মিনাল থাকবে। একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল ও দুটি কনটেইনার টার্মিনাল। প্রাথমিকভাবে সবার আগে বে টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনারগুলো ডেলিভারি দেয়ার জন্য স্পেস তৈরি করা হবে। এতে বন্দরের জেটিতে প্রবেশ করা প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার ট্রক নগরীতে প্রবেশ করতে হবে না।

উল্লেখ্য, বে টার্মিনালে জোয়ার-ভাটা, দিন-রাত, বাঁকা চ্যানেল কিংবা ড্রাফটের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। এখানে যেকোনো দৈর্ঘ্য ও প্রায় ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ এখানে ভিড়তে পারবে। বর্তমান চ্যানেলে মাত্র ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ কর্ণফুলীতে প্রবেশ করতে পারে। বিদ্যমান পোর্ট জেটিতে একসাথে ১৬টি জাহাজ বার্থিং করা গেলেও বে-টার্মিনালে গড়ে প্রায় ৫০টি জাহাজ একইসাথে বার্থিং করা যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর