প্রাথমিক পর্যায়ের দেড় কোটি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি এবং শিক্ষা উপকরণ ভাতা ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যার বিবেচনায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে বৃত্তি বিতরণের এটিই হবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঘটনা।
মূলত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি এবং শিক্ষা উপকরণ ভাতা প্রাপ্তির ভোগান্তি দূর করতেই সরকার ‘নগদ’-কে বেছে নিয়েছে।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সবিচালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই), বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এবং থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের মধ্যে এ বিষয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
ত্রিপক্ষীয় চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসরুল আলম, বাংলাদেশ ডাক বিভগের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন এবং ‘নগদ’-এর নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণ সুনিশ্চিত হবে এবং সরকারের খরচ এক তৃতীয়াংশে নেমে আসবে। সরকারের কাছ থেকে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা পাওয়ার পরপরই ‘নগদ’ উপবৃত্তি ও ভাতা বিতরণের কাজ শুরু করবে। উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ ভাতাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মা-এর অ্যাকাউন্টে সরাসরি চলে যাবে।
সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণে ‘নগদ’-কে নির্বাচন করে।
কয়েক বছর আগে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি চালু করে। তখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণের জন্য ক্যাশ-আউট চার্জ এবং ডেটা ম্যানেজমেন্ট-এর জন্য সরকারকে সব মিলিয়ে প্রতি হাজারে সাড়ে ২১ টাকা করে খরচ করতে হচ্ছিল। আর রাষ্ট্রীয় সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে সর্ববৃহৎ সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাতা ও উপবৃত্তি বিতরণে সরকারের প্রতি হাজারে মাত্র ৭ টাকা খরচ হবে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের বৃত্তির অর্থ প্রাপ্তির সঙ্গে ক্যাশ-আউট চার্জের সমপরিমাণ অর্থ তার ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবেন।
এই চুক্তি বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে ‘নগদ’ এর চুক্তির মাধ্যমে আজ একটি অনন্য সাধারণ ঘটনা ঘটল, একটি নতুন মাইলফলক স্থাপিত হলো। আমরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আশ^স্ত করতে চাই যে, আপনারা আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছেন ‘নগদ’-এর সেবার মাধ্যমে তার যোগ্য প্রতিদান আমরা দেব। ‘নগদ’ দেশের সর্বকনিষ্ঠ ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এটি সবচেয়ে প্রিয় সার্ভিস। আমরা সবাই বিশ্বাস করি ‘নগদ’-এর মাধ্যমে জরাজীর্ণ ডাক বিভাগ এক দিন ঘুরে দাঁড়াবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, একে তো ‘নগদ’ আমাদের ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান, তার ওপরে আমাদের অনেক টাকা খরচ বাঁচবে। সুতরাং ‘নগদ’-কে বেছে না নেওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। এই প্রক্রিয়ায় আমরা শিক্ষার্থীদের মাদেয়দের অ্যাকাউন্টে সরাসরি উপবৃত্তি এবং শিক্ষা উপকরণ কেনার টাকা পাঠাবো। যার মধ্যেমে নারীর ক্ষমতায়নও হবে। আমাদের বিশ্বাস প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষ ডাক বিভাগে ফিরতে শুরু করবে।