শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি অধিগ্রহণে ঋণের সুদ মওকুফ চায় বেজা

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 14:06:17

সিলেটের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ করতে যে ঋণ নেওয়া হয়েছে তার সুদ মওকুফ চায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। ঋণের সুদ বাবদ সমপরিমাণ অর্থ অনুদান হিসেবে চেয়ে গত সপ্তাহে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আরো জানা গেছে, ইতোমধ্যে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৪০৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এছাড়া আরও ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ১১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার ডিবিএল গ্রুপ, আয়েশা ক্লথিং সাড়ে ৫ কোটি ডলার, আসওয়াদ কম্পোজিট ৩ কোটি ডলার, গ্রেটওয়াল সিরামিকস ৩ কোটি ২৫ লাখ এবং ডাবল গ্লেজিং ৮১ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে। এই অর্থনৈকি অঞ্চল থেকে বছরে ৩০ হাজার ৪০৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি করা যাবে এবং কর্মসংস্থান হবে ৪৪ হাজার ৯৩১ জনের।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে জমি অধিগ্রহণের জন্য ঋণ নিয়েছে বেজা। যদিও আগামী ৫০ বছরে সেখানের জমি অধিগ্রহণ থেকে বেজার আয় হবে ১৬৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের (বিআইএফএফএল) কাছ থেকে ২৯২ কোটি টাকা ঋণ নেয় বেজা।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন স্বাপক্ষে প্রথম তিন বছর ৫ শতাংশ এবং পরবর্তী বছরগুলোতে ৯ শতাংশ হারে ঋণের সুদ নির্ধারণ করা হয়। সেপ্টেম্বর ২০১৯ হতে সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ৭ কিস্তিতে সমহারে মোট ৪৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা সুদাসল পরিশোধ করতে হবে। যার মধ্যে সুদের পরিমাণ ১৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে বেজা সুদ বাবদ ৩৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

কিন্তু শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি বিনিয়োগ উপযোগী করতে অফসাইট অবকাঠামো নির্মাণ এবং যাবতীয় ইউটিলিটি ব্যয় নিশ্চিত করতে আরো অন্তত ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। সেক্ষেত্রে সুদ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হলে অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ব্যহত হবে। তাই বিআইএফএফএল থেকে নেওয়া ২৯২ কোটি টাকা ঋণের সুদ পরিশোধের টাকা অনুদান হিসেবে বেজার বাজেটে বরাদ্দ দেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে।

বেজা সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে সিলেট বিভাগের চার জেলার মিলনস্থল মৌলভীবাজারের শেরপুরে গড়ে তোলা হয়েছে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল। যার আয়তন ৩৫২ একর। এর মধ্যে ১১২ একর জমি রাখা হয়েছে জলাধার নির্মাণের জন্য। বাকি ২৪০ একর জমিতে কারখানা ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে এ অথনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া এবং জমি বরাদ্দ চলছে।

এখন পর্যন্ত ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ২৩১ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে বেজা। যার মধ্যে ডিবিএল গ্রুপকে ১৭০ একর, গ্রেটওয়াল সিরামিকসকে ২৫ একর, আসওয়া কম্পোজিট মিলস ও আয়েশা ক্লথিংকে ১৪ একর, ডাবল গ্লেজিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ৩ একর এবং ওরিয়ন গ্রুপকে ৫ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যদিও ওরিয়ন গ্রুপ ১০০ একর জমির আবেদন করেছিল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর