সাধারণত শৈশব থেকে দেখে এসেছি গ্রামে-গঞ্জে নদীর আশেপাশে বা পুরনো বটবৃক্ষের ছায়ায় সাপ্তাহিক হাট বসে। সেই হাটে বাতাসা গুড়ের জিলাপিসহ মুখরোচক খাবার এবং হরেক রকম পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন দোকানিরা।
তাই হয়ত গ্রামের হাট, পশুর হাট- এমন অনেক হাটের নাম শুনে থাকবেন। কিন্তু ‘নতুন টাকার হাট’ হয়ত প্রথম শুনছেন। হ্যাঁ- নতুন টাকা বিক্রির হাটও রয়েছে। যেখানে বান্ডেলে বান্ডেলে চকচকে নতুন নোট নিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা।
এই নতুন টাকা কিনতে সোনা, ডায়মন্ড এমন কিছই লাগে না। লাগবে সচল-অচল পুরনো ছেঁড়া নোট বা বিদেশি মুদ্রা।
রাজধানী গুলিস্তান সিনেমা হলের সামনে এবং মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের উত্তর দিকের সড়কের পাশে বসে নতুন টাকার হাট। কারো যদি চকচকে নতুন টাকার বান্ডেল প্রয়োজন হয়, এই হাট থেকে দরদাম করে কিনতে পারবেন। এখানে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বিকিকিনি হয় নতুন টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে যারা নতুন টাকা বিক্রি করেন তাদের মধ্যেই অধিকাংশ নারী। যারা আর্থিকভাবে অত্যন্ত দরিদ্র শ্রেণীর। প্রতিদিন এরা নতুন টাকার বান্ডেল নাড়াচাড়া করেন, ঘ্রাণ নেন। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলোর ভাগ্যে আর পরিবর্তন ঘটে না।
নতুন টাকার ব্যবসা জমজমাট থাকে রোজার ঈদ কোরবানির ঈদসহ উৎসব-পার্বণে।
গুলিস্তানকে পকেটমার, চোর, ছিনতাইকারী এদের অভয়াশ্রম বলা হয়। তবে এই টাকার হাটে বান্ডেল উন্মুক্তভাবে সাজানো থাকলেও পকেটমার বা চোরের উপদ্রব ঘটেছে- এমন রেকর্ড নেই!