সরকারের গৃহ ঋণ কার্যক্রমে অংশীদার হতে চায় বেসিক ব্যাংক

ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 00:17:51

 

সরকারের গৃহ ঋণ কার্যক্রমে অংশীদার হতে চায় অর্থ সংকটে থাকা বেসিক ব্যাংক। সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত অর্থ সচিব আব্দুল রউফ তালুকদার বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এ আবেদন জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহম্মদ আউয়াল খান। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, চারটি সরকারি ব্যাংক (সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রুপালী) এবং বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের সাথে গৃহ ঋণ প্রদান সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক সই করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

বেসিক ব্যাংকের ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক ও ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে দেশের মানুষের ব্যাংকিং চাহিদা পূরণ ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের তহবিলের বিশ্বস্ত রক্ষক হিসেবে কাজ করছে বেসিক ব্যাংক। গ্রাহক সেবা ও আর্থিক সামর্থের বিচারে সর্বোত্তম ব্যাংক হওয়ার সুদীর্ঘ ইতিহাসও রয়েছে। এটা শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তফসিলী ব্যাংক। তাই সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহ নির্মাণে সরকার ঋণ দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে তার বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অংশগ্রহণ করতে ব্যাংকটি আগ্রহী। এজন্য সরকারের সাথে সমঝোতা স্মারক সইসহ সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে তারা প্রস্তুত।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘ঋণ জালিয়াতির অর্থ আদায়ে ব্যর্থ বেসিক ব্যাংক বর্তমানে বড় অঙ্কের মূলধন ঘাটতিতে আছে। এ অবস্থায় সরকারের গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান কার্যক্রমে ব্যাংকটির অর্থ দেওয়ার আগ্রহ নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তারা এ কাজে সম্পৃক্ত হয়ে হঠাৎ করে যদি গৃহ ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে চাকরিজীবীরা সমস্যায় পড়বেন। এসব বিষয় চিন্তা করেই মূলত ব্যাংকটিকে এ কার্যক্রমের বাইরে রাখা হয়।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থ বাজেটে ৯টি সরকারি ব্যাংকের মূলধন পুর্নগঠনে এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ছাড় করা হয়। কিন্তু বেসিক ব্যাংকের জন্য কোনো অর্থ ছাড় করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ওই ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতি করে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। টাকার অঙ্কে যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে বলা হয়, ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সহায়তায় এসব লুটপাট করেন। ২০১৫ সালে দুদক এ বিষয়ে মোট ৫৬টি মামলা করে। কিন্তু বাচ্চু বা পরিচালনা পর্ষদের কাউকে মামলায় অভিযুক্ত করা হয়নি।

যদিও দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করে দুদক। তাদের মধ্যে ৮ জন ব্যবসায়ী, একজন সার্ভেয়ার ও ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের পাঁচ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। পরবর্তীতে ওই কর্মকর্তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর