বড় হচ্ছে প্রগতি টাওয়ার

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 02:12:19

নিজস্ব অর্থায়নে তেজগাঁওয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত গাড়ি সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (পিআইএল) ‘প্রগতি টাওয়ার’-এর উচ্চতা আরো বাড়ছে। আগে ১৪ তলা বিশিষ্ট সার্ভিসিং সেন্টার ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এখন সিদ্ধান্ত বদলে সেখানে ৩৭ তলা ভবন নির্মাণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ বেসরকারি বিমান কর্তৃপক্ষ প্রগতি টাওয়ার নির্মাণের নির্ধারিত স্থানে ১৭০ ফুটের বদলে ৫০০ ফুট উচু ভবন নির্মাণে ছাড়পত্র দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভবনের মূল অবকাঠামোর উচ্চতা বেড়ে যাওয়া নির্মাণ ব্যয় কত হবে তার ধারণা দেয়নি শিল্প মন্ত্রণালয়। তবে প্রকল্প সংশোধনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সংশোধিত লিকিউডিটি সনদ চেয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রধান মু. নুরুল আমিন খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এই সনদ চেয়েছে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।  

জানা গেছে, প্রগতি টাওয়ারের উচ্চতা বাড়ায় আবারো ভবনের ডিজাইন, ড্রইং এবং প্রাক্কলন সংশোধন প্রস্তুতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যা আবার রাজউকের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। প্রগতি টাওয়ার নির্মাণের জন্য ১.৫ একর জমি বাণিজ্যিক প্লটে রূপান্তরের জন্য পিআইএল কর্তৃপক্ষ ৩.৫ কোটি টাকা কনভার্সন ফি জমা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তেজগাঁওয়ে ১৪ তলা বিশিষ্ট প্রগতি টাওয়ার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১৪০ কোটি টাকা। যা প্রচলিত ব্যয়ের প্রায় দ্বিগুণ ছিল। ফলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক ব্যয় দেখানোর অভিযোগ উঠে। ২০১৮ সালে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৯ কোটি টাকা। তবে ৩৭ তলা ভবন করতে কত খরচ হবে তা প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) উল্লেখ করা হয়নি।

আগের ডিপিপি’তে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতিদিন ৮০০ যানবাহন সার্ভিসিং করানো সম্ভব হবে। প্রতিটি যানবাহনের সার্ভিসিং বাবদ ৭ হাজার টাকা হিসাবে বছরে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার যানবাহন থেকে গড়ে ১৬৮ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। এছাড়া বাণিজ্যিক স্পেস ভাড়া বাবদ বার্ষিক আয় ধরা হয় ১১ কোটি ৮৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৭ বর্গফুট মাসিক হিসাবে ৭৫ টাকা হারে ভাড়া আদায় করা হবে। এভাবে প্রকল্পের সমীক্ষা প্রতিবেদনে অযৌক্তিক আয় দেখিয়ে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছিল প্রগতি কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ১৫১-১৫২ শিল্প প্লটটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে নামজারী করা হয়। ওই বছরই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। যা শেষ হওয়ার কথা ২০২০ সালে জুন মাসে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় ১৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে ১৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এডিপিতে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ভবনটি নির্মাণ হলে প্রগতির গাড়ির বিক্রয়োত্তর সেবা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্বি পাবে বলে উল্লেখ করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর