সদ্য প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে করের হার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, এটি বাস্তবায়ন করা গেলে রেভিনিউ কালেকশন বাড়বে বলে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শুক্রবার (০৪ জুন) দুপুরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজেটে কর ছাড়ের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা লক্ষ্য রেখেছি আইনটিকে আমরা সহজ করব। রেভিনিউ কালেকশন থেকে শুরু টার্গেন্টিং, কালেকশন পরিকল্পনার একটি অংশ। আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যদি আমরা আইনটিকে সহজ করতে পারি এবং ট্যাক্স পেয়ারদের যদি এই কাজে সম্পৃক্ত করতে পারি তাহলে রেভিনিউ জেনারেশন অনেক বৃদ্ধি পাবে। রেভিনিউ জেনারেশন বাড়াতে পৃথিবীর অনেক দেশ চেষ্টা করেছিল। এমনকি আমেরিকায়ও কোন একসময় ৭৫ শতাংশ ট্যাক্সের পরিমাণ ছিলো, সেটা এখন নেই। বেশি করে ট্যাক্স আদায় করা যায় কিনা সেটি সবাই চেষ্টা করেছিল। আমরা মনে করি যদি আমরা রেভিনিউয়ের হার আস্তে আস্তে কমাই তাহলে আমাদের কালেকশন বাড়বে। আমরা যে কর কমালাম আমরা বিশ্বাস করি "উই উইল বি উইনার"। করের হার কমানো হয়েছে, আশা করি আমাদের রেভিনিউ কালেকশন আরও বাড়বে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ব্যবসায়ী যারা বলছে ব্যবসায়ী বান্ধব বাজেট করার কথা। ব্যবসায়ী শব্দটি ফ্লেক্সিবল জব, এটাকে ফিক্সড করে রাখা যাবে না। প্রত্যেক সময় মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়। চাহিদা পূরণে ব্যবসায়ীদেরও পরিবর্তন আসে। তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্যও পরিবর্তন আসে। সুতরাং এটা কখনো ফিক্সড রাখা যাবে না। আমাদের সিচ্যুয়েশন কি ডিমান্ড করে? সারা বিশ্ব কি করছে সেটি দেখতে হবে। উন্নত বিশ্ব যদি পিছিয়ে পড়ে তাহলে আমরা কিন্তু এগুতে পারব না। কারণ উন্নত বিশ্বের মাধ্যমে আমরা সমৃদ্ধ। আজকে মার্কিন ইকোনমি এটাই আমাদের শেখায় যে আমরা একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। এই সম্পৃক্ততার কারণে সবাইকে নিয়ে আমাদের চলতে হয়। উন্নত বিশ্ব এগুলেই আমাদের সমর্থনটা বাড়বে, এগিয়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য আরও মসৃণ হবে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুন) করোনা মহামারির প্রকোপের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে তৃতীয়বারের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।
এবারের বাজেটে প্রাধিকার পেয়েছে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামের এবারের বাজেটটি করা হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে। বাজেটে সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের বাস্তবায়ন, কৃষিখাত, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অর্থ বছরের পুরো সময় জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, বাড়ানো হবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা।