এবারের ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যেহেতু ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে, তাই এসব সুযোগ ও সুবিধা কাজে লাগিয়ে তারাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শুক্রবার (৪ জুন) দুপুরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আরও বলেন, বাজেটে কর্মসংস্থানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা আছে। বাজেটে পুরোটাই হলো ব্যবসায়ী বান্ধব। আমি মনে করি যে, ব্যবসায়ী বান্ধব হলেই ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেবে। আর ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেওয়ার মানে হচ্ছে উৎপাদনে যাওয়া। সেই উৎপাদনটি ঘটাবে আমাদের দেশের জনগোষ্ঠী। মানুষের কর্মসংস্থান না করা হলে কিভাবে তারা এগুলো করবেন। সেজন্য আমরা মনে করি ব্যবসায়ীরাই এ কাজটি করবেন। সেজন্য ব্যবসায়ীদের আমরা সুযোগ দিয়েছি, আমরা কমিটেড। আমরা "মেড ইন বাংলাদেশ" ট্যাগলাইনটা ব্যবহার করতে চাই। আমাদের দেশীয় পণ্য যেগুলোকে তিনি বাড়তি সুযোগ দিয়েছেন। তবে বাজেটে যা দেখেছেন সেটাই যে থাকবে তা নয়, আমরা কিছু ফ্লেক্সিবল থাকবো। আমরা আরও পরিবর্তন করবো, কখনো বাড়াবো না। আমরা সবসময় প্রয়োজনে ট্যাক্স, ভ্যাট কমাবো।
কালো টাকার সুযোগ না রাখার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কালো টাকা নিয়ে আমি কখনো কথা বলিনি। আমাদের বাজেটে আমারা যেই প্রিভিশনটি রেখেছিলাম তা হলো অপ্রদর্শিত আয়। কালো টাকা এবং অপ্রদর্শিত আয়ের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য। কালো টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে সৃষ্ট হয়, আর অপ্রদর্শিত টাকাটা আমাদের সিস্টেমের কারণে সৃষ্টি হয়। ট্যাক্সের টার্গেট করা হয় ৫০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ। এটা অনেক অন্যায় করা হয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। এখানে কোন এক সময় ছিলো সুপার ইনকাম ট্যাক্স, যারা বেশি ইনকাম করবে তাদের আরও বেশি ট্যাক্স দিতে হবে। অথচ উল্টোটা হওয়া উচিত ছিলো।
তিনি আরও বলেন, যারা সীমিত সম্পদকে এক্সপ্লয়েড করে নূন্যতম আয় করবে তাদেরকে বেশি করে সুযোগ করে দেওয়া উচিত ছিলো। সেটা না করে যারা বেশি আয় করেছিলো তাদের আরো বেশি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিলো, এটা ঠিক না। সেজন্য আমরা এই বিষয়গুলো দেখে যতটা সম্ভব হয়েছে এই বাজেটে খোলামেলাভাবে সমস্যা যেখানে ছিলো সেখানে সুন্দর ও সহজ করে আরেও সার্বজনিন করার চেষ্টা করেছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) করোনা মহামারির প্রকোপের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে তৃতীয়বারের মতো বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।
এবারের বাজেটে প্রাধিকার পেয়েছে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামের এবারের বাজেটটি করা হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে। বাজেটে সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের বাস্তবায়ন, কৃষিখাত, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থবছরের পুরো সময় জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, বাড়ানো হবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা।