বাজেট পুনর্বিবেচনায় এনে তামাকজাত পণ্যে কর বৃদ্ধির দাবি

বাজেট, অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 09:44:27

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকজাত পণ্যে যে কর ধার্য করা হয়েছে তা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে বিশিষ্টজনেরা।

প্রস্তাবিত বাজারের প্রায় ৭২ শতাংশ নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে বিড়ি ও জর্দা-গুলের দাম ও শুল্ক অপরিবর্তিত রাখায় হয়েছে। অপর দিকে গত বছরের তুলনায় জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলো  তামাকজাত পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে গত বছরের তুলনায় আরো সহজলভ্য হয়ে যাবে।

যা জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত দেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

এ ব্যাপারে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ে আমরা যারা কাজ করছি আমাদের সবার একটা স্বপ্ন ছিল যে আসন্ন বাজেটে তামাকের কর বৃদ্ধি পাবে। কর বৃদ্ধির প্রভাবে তামাকজাত পণ্যের দামও বৃদ্ধি পাবে। এর মূল উদ্দেশ্যই ছিল তরুণ প্রজন্মকে তামাক ব্যবহার থেকে বিরত রাখা। যারা ধূমপান করে তারা ধূমপান কমিয়ে আনবে কিংবা ধূমপান ত্যাগ করবে।

তিনি বলেন, সর্বোপরি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক পণ্যের ব্যবহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে আনার প্রধানন্ত্রীর যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়নে এটা বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। কিন্তু আসন্ন বাজেটে আমরা যে জিনিসটা লক্ষ্য করেছি তা আমাদেরকে হতাশ করেছে। এই বাজেটের যে রিফ্লেকশন তা যদি এরকম থাকে তাহলে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক পণ্যের ব্যবহার সর্বনিম্নে নিয়ে আসে এবং জননস্বাস্থ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের স্বপ্ন তা ব্যাহত হবে।

তিনি আরো বলেন, তামাকপণ্যের কর বৃদ্ধি ছাড়া তামাকপণ্য নিয়ন্ত্রণে আমাদের কার্যক্রম কোনোভাবেই এগিয়ে নিতে সক্ষম হবো না।

যেহেতু বাজেট মাত্র পেশ করা হয়েছে, আমরা আশা করি আমাদের দাবিগুলো আমলে নিবে। আমাদের দাবিগুলোকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। জনস্বাস্থ্য এবং প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নকে বাস্তবায়নে চলতি বাজেটে আমরা আশা করব অর্থমন্ত্রী এটাকে নতুনভাবে বিবেচনা নিবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক বলেন, এই বছরের বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের কর হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আমাদের দেশে যারা ধূমপান করেন তাদের ৭২ শতাংশ নিন্মস্তরের সিগারেট গ্রহণ করেন।

যেহেতু এই স্তরের সিগারেটের কর ও দামের কোন পরিবর্তন হয়নি। জনস্বাস্থ্যে আমাদের আকাঙ্খা ছিল সঠিক হারে কর আরোপ করে তামাকজাত পণ্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাবো। আমি মনে করছি যে বর্তমান বাজেটে সে প্রত্যাশা পুরনো করতে সক্ষম হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে বিপুল জনগোষ্ঠী ধোঁয়াহীন তামাক যেমন জর্দা-গুল ব্যবহার করে থাকে। বিশেষ করে গ্রামের মহিলারা, তারা কিন্তু ধোঁয়াহীন তামাক ব্যবহার করেন। যেহুতু ধোঁয়াহীন তামাকের দাম গত বছরের তুলনায় বাড়েনি। কিন্তু মাথাপিছু আয় বাড়ছে, 

মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, সেইগুলোর সাথে তুলনা করলে গুল-জর্দা গত বছরের তুলনায় সহজলভ্য হয়েছে। সুতরাং আমাদের আগামী প্রজন্ম, আমরা আশা করছি তাদেরকে আমরা সুন্দর তামাক মুক্তি ভবিষ্যৎ উপহার দিতে পারব এটা তখনই সম্ভব হবে যখন কর ও দাম বৃদ্ধি করে সব ধরনের তামাকপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি নিম্নস্তরের সিগারেট, মধ্যস্তরের সিগারেট, ধোঁয়াহীন তামাকে কর হারের পরিবর্তন হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর একটা অঙ্গীকার রয়েছে যে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা তামাক মুক্ত দেশ গড়ে তুলবো। কিন্তু এই বছরের বাজেটে আমরা সেই লক্ষ্য পৌঁছানোর কোনো সুবিচার দেখতে পারছি না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর