পেট্রোবাংলার ভ্যাট ফাঁকি ২০ হাজার কোটি টাকা!

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 15:30:54

রাষ্ট্রীয় জ্বালানি তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো গত ৮ বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। যা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়।

গত ১৬ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়্যারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এনডিসি এক চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুল রউফ তালুকদারকে ব্যক্তিগতভাবে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পেট্রোবাংলা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বকেয়া বা ফাঁকি দেওয়া অর্থ যেন তাড়াতাড়ি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। তা না হলে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জানা গেছে, এনবিআর’র এক তদন্তে দেখা গেছে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পেট্রোবাংলার অধীন ৪ কোম্পানি ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করা ১৯ হাজার ৭১২ কোটি টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আদায় করে। কিন্তু তা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড এবং কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে এনবিআর’র রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা এবং তার মধ্যে মূল্য সংযোজন করের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এবং জনসেবার মাত্রা ও পরিমাণ বাড়াতে অধিক রাজস্ব যোগান দিতে রাজস্ব আহরণে গুরুত্বারোপ করে এনবিআর। ফলে এক তদন্তের পেট্রোবাংলার এসব অনিয়ম উঠে আছে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেট্রোবাংলার ৪টি গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানির কাছে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বকেয়া রয়েছে ১৩ হাজার ৩৬ কোটি টাকা, ২০১৪ সালের এপিল থেকে ডিসেম্বর পর্ষন্ত বকেয়া আছে ২ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্ষন্ত এক হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্ষন্ত ২ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। ২০১৮ পর্যন্ত সর্বমোট মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ বকেয়া আছে ১৯ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা।

তবে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের দপ্তর নিরীক্ষার মাধ্যমে আগের ২০০৯ সালের বকেয়া ১৩ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা বুক এডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করে কোম্পানিগুলো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর