বড় ব্যবসা ধরতে মূলধন বাড়াতে চায় রূপালী ব্যাংক

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 22:49:12

অনুমোদিত মূলধন কম হওয়ায় বড় ব্যবসা ধরতে পারছে না আধা সরকারি রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। তাই কর্তৃপক্ষ ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন বাড়াতে চায়। গত ২২ অক্টোবর ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আতাউর রহমান প্রধান অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন মাত্র ৭০০ কোটি টাকা হওয়ায় সিঙ্গেল বরোয়ার লিমিটও কম হচ্ছে। ফলে ব্যাংকটির পক্ষে বৈদেশিক ও স্থানীয় বাণিজ্যের জন্য ঋণপত্র খোলা কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। এজন্য ব্যাংকটি বড় ব্যবসা পাচ্ছে না। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাসেল-৩ গাইডলাইন বাস্তবায়ন করতে চায় রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। তাই অনুমোদিত মূলধন ৭০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হচ্ছে।

প্রস্তাবে আরো উল্লেখ করা হয়, মূলধন বাড়াতে ব্যাংকটি সরকারের কাছে এক হাজার ২১৪ কোটি টাকা চায়। কারণ ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২:১ অনুপাতে (প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে ২টি শেয়ার) রাইট শেয়ার ইস্যু করতে চায়। রূপালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ইতোমধ্যে বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। ফলে সরকারি অংশের রাইট শেয়ার বাবদ সরকারকে রূপালী ব্যাংকে এক হাজার ৫১৪ কোটি টাকা দিতে হবে। যার মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সরকার ব্যাংকটিতে ৩০০ কোটি টাকা মূলধন হিসেবে দিয়েছে। তাই সরকারকে আরও এক হাজার ২১৪ কোটি টাকা দিতে হবে। এ অর্থ বরাদ্দ পেলে ব্যাংকটি ব্যাসল-৩ গাইডলাইন বাস্তবায়ন করবে।

প্রসঙ্গত, ব্যাসেল-৩ অনুসারে প্রতি ব্যাংকের রিস্ক ওয়েটেড অ্যাসেটের বিপরীতে ২০১৮ সালে ১১.৮৮ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ১২.৫০ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে হবে। যা কোনো ব্যাংকের পক্ষে করা সম্ভব হয়নি। তবে রূপালী ব্যাংক এই পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হলে ব্যাংকটির বৈদেশিক বাণিজ্যসহ ব্যবসা সম্প্রসারণ হুমকির সম্মুখীন হবে। রূপালী ব্যাংকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বিসিআইসিসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণপত্র খোলা হয়। কিন্তু ব্যাংকটিতে যথাযথ মূলধন না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণপত্র খোলা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

জানা গেছে, রূপালী ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন সোনালী, জনতা, অগ্রণী, প্রাইম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের চেয়েও কম। ফলে ব্যাংকটির ব্যবসার পরিমাণও কম। ২০১৭ সালে রূপালী ব্যাংক ২৪ শতাংশ শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৩০৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৭৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা করা হয়েছে। কোম্পানির ৯০.১৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার এবং বাকি ৯.৮১ শতাংশ শেয়ারের মালিক সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা। দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে রূপালী ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৩৭-৩৯ টাকায়। প্রতিটি শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর