ইভিএম কিনতে এবার অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল ও ইসমাইল হোসেন রাসেল, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 04:12:42

চলতি অর্থ বছরে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ তহবিল থেকে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনতে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। গত ১ নভেম্বর এক চিঠিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও অর্থ বিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়। তবে চিঠিতে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এই অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে  ইলেকট্রানিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার’ শীর্ষক প্রকল্পে অনুমোদন দেয় একনেক। এ প্রকল্পের আওতায় দেড় লাখ ইভিএম মেশিন কিনতে ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এরপর ইভিএম কিনতে অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চায় ইসি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট খাতে  অর্থ না থাকায় বরাদ্দ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিবি) আওতায় বাস্তবায়নাধীন কম অগ্রগতিসম্পন্ন  প্রকল্প থেকে অর্থ নিয়ে ইভিএম কেনার পরামর্শ দেয় মন্ত্রণালয়। এজন্য ইসি’কে শিগগিরই পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে বলা হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়ার সহকারী সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষতির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি অর্থ বছরে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫৪৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রয়োজনে ওই বরাদ্দ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ফলে ইভিএম কিনতে উক্ত খাত থেকে এক হাজার ৯৯৮ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব না। তবে প্রকল্পটি জন গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয়কে এই খাতে জিওবি বাবদ রক্ষিত অর্থের অতিরিক্ত ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

অন্যদিকে, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘ইভিএম কিনতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের আর্র্থিক সংকটের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যতটুকু জানি, ইভিএম কিনতে সরকারের কোনো আর্থিক সংকট নেই।’

উল্লেখ্য, গত রোববার ইসি’র ৩৮তম মুলতবি সভায় ইভিএম বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। ২০১০ সালের জুন মাসে স্বল্পপরিসরে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ইভিএম চালু হয়। ২০১৫ সালে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ইভিএমে কিছু পরিবর্তন করে ২০১৬ সালে রংপুর সিটি নির্বাচনে তা আবার চালু করা হয়। ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএম বিধিমালা-২০১৮’তে রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, ভোট গণনা ও ফল একীভূতকরণসহ নানা বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।

তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, আইনি ভিত্তি পাওয়ার পর স্বল্প পরিসরে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। আগামী নির্বাচনে কয়টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে তা দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে কমিশন চূড়ান্ত করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর