মুনাফা কমানো ও বিভিন্ন শর্তারোপের পর সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। সর্বশেষ অক্টোবর মাসে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৭০ শতাংশেরও বেশি। চলতি অর্থবছরের অক্টোবর মাসে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে মাত্র ৭৬৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহ করতে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া গত সেপ্টেম্বরে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানো হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিকল্প বিনিয়োগে মনোযোগী হওয়ার কারণেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ মোট ৮ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ হয়েছে। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রির পরিমাণ ৭৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকার অক্টোবরে সঞ্চয়পত্রে ঋণ নিয়েছে ৭৬৬ কোটি টাকা। যা তার আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে নিট বিক্রি কমেছে ৭২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকঋণ ছাড়াও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ করে থাকে সরকার। সামাজিক সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে সঞ্চয়পত্রে তুলনামূলক বেশি মুনাফা দেয় সরকার। বর্তমানে অন্য যেকোনো বিনিয়োগ উৎসর চেয়ে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বেশি। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাত থেকে সরকার নিট ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে।
আর অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩৫ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা। যা অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার মোট ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর এ সময়ে সরকারের নিট ঋণ এসেছে ৯ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। যা ২০২০-২০২১ অর্থবছরের একই সময়ের (জুলাই-অক্টোবর) তুলনায় ৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বা ৪০ শতাংশ কম।