'অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ৭০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করে এসএমই খাত'

, অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 20:27:02

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের শতকরা প্রায় ৯৯ ভাগ শিল্প ও ব্যবসা কুটিরসহ এমএসএমই খাতের আওতাভূক্ত। এ খাত দেশের অর্থনৈতিক  কর্মকাণ্ডের ৭০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করে। মোট শিল্প কর্মসংস্থানের শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ সৃষ্টি  হচ্ছে এসএমই খাতে। এসএমই খাত মোট অভ্যন্তরীণ শিল্পপণ্য চাহিদার শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ যোগান দিয়ে থাকে।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের দেশব্যাপী এসএমই ই-ডাটাবেজ তৈরির পাইলট কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। এটুআই এর সহযোগিতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে ঢাকার শ্যামপুর, বগুড়ার আদমদীঘি, পিরোজপুরের নেছারাবাদ এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরবে- এই চার উপজেলায় পরীক্ষামূলক কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী।

শিল্পমন্ত্রী বলেন,  এসএমই ই-ডাটাবেজ কার্যক্রম অত্যন্ত সময়োপযোগী উদ্যোগ। দেশের সকল এসএমই উদ্যোক্তার তথ্য একটি প্ল্যাটফর্মে পাওয়া গেলে এই খাতের উন্নয়নে সরকারের নীতি নির্ধারণ সহজ হবে। এ ধরনের কর্মসূচি অর্থনীতির প্রাণ এমএসএমই খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এজন্য এসএমই ফাউন্ডেশন ও এটুআই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য বলে আমি মনে করি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এই খাতকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু নিয়মিত হালনাগাদকৃত ডেটাবেজ না থাকার ফলে আমাদেরকে প্রায়ই সিএমএসএমই খাত নিয়ে নানাবিধ নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বেগ পেতে হত। তাই আমি মনে করছি, এসএমই ফাউন্ডেশন ও এটুআই’এর এই উদ্যোগ একটি সময়োপযোগী এবং বাস্তবসম্মত উদ্যোগ। আমি এটুআই’কে অনুরোধ জানাবো এসএমই ফাউন্ডেশন এর সাথে এই কাজ অব্যহত রাখতে এবং দেশের সকল সিএমএসএমই’কে কীভাবে এই ডেটাবেজের আওতায় আনা যায় তার জন্য যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে। পাশাপাশি সকল সিএমএসএমই যেন তাদের সংশ্লিষ্ট সকল সেবা একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে পায় তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরসমূহের সাথে যৌথভাবে কাজ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি এটুআই ও এসএমই ফাউন্ডেশনকে।

তিনি আরো বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, তহবিলের যোগান এবং ব্যবসার বিভিন্ন সেবা দেয়া নিশ্চিত করতে একসাথে কাজ করতে পারে এসএমই ফাউন্ডেশন ও আইসিটি বিভাগ।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর।

স্বাগত বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এ ২০২৪ সালের মধ্যে জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান বর্তমান ২৫% থেকে ৩২% এ উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এই খাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এটুআইয়ের সহযোগিতায় এসএমই ই-ডাটাবেজ সরকারের নীতি নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা রাখবে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, এটুআই এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শিগগিরই এসএমই ই-ডাটাবেজ তৈরির কাজ শেষ হলে উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন, পণ্য বাজারজাতকরণ এবং পণ্যের মানোন্নয়নে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, www.smef.nise.gov.bd এই ওয়েব লিংকে লগইন করে একজন উদ্যোক্তা নিজে/ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সহায়তায়/এসএমই ক্লাস্টার অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে এসএমই ই-ডাটাবেজের জন্য নিজেদের তথ্য আপলোড করতে পারবেন। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত সবশেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী দেশের মোট ৭৮ লাখের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৯ ভাগের বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর