সম্মানজনক অবস্থান ধরে রাখা সে বিরাট ব্যাপার। এর নেপথ্যে থাকে প্রচুর পরিশ্রম, নিষ্ঠা, মেধা, সততা প্রভৃতি গুণাগুন। সেটা যেকোনো কাজেই হোক না কেনো – এই সম্মানজনক প্রাপ্তিতার সন্তুষ্টিটুকু চিরমধুর এক উপলব্ধি।
সম্প্রতি দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক চা নিলাম কেন্দ্রে চলতি মৌসুমের ২১তম নিলামে ১০৫৬৯৪ (এক লক্ষ পাঁচ হাজার ছয়শত চুরানব্বই) কেজি বিক্রি হয়েছে। বুধবার (৯ মার্চ) দিনব্যাপী শ্রীমঙ্গল মৌলভীবাজার সড়কের খাঁন টাওয়ারে এই নিলাম কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে প্রায় অর্ধশতাধিক বায়ার অংশ নেয়।
এই ২১তম নিলামে বৃন্দাবন চা বাগানের জিবিওপি গ্রেডের (মোটা দানা) চা কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ৭৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে।
শ্রীমঙ্গলের ওইদিনের নিলামে শ্রীমঙ্গল টি ব্রোকার্স, রূপসীবাংলা টি ব্রোকার্স ও জালালাবাদ টি ব্রোকার্স ও জেএসটি ব্রোকার্স মাধ্যমে বিভিন্ন বাগানের চা নিলামে তোলা হয়েছে। চা বাগানগুলো হলো - বৃন্দাবন চা বাগান, সাগরনাল চা বাগান, জঙ্গলবাড়ি চা বাগান, খাদিম চা বাগান, লোহায়ইনি চা বাগান, লোভাছড়া চা বাগান, ইমাম চা বাগান এবং মোমিনছড়া চা বাগান।
শ্রীমঙ্গল টি ব্রোকার্সের পরিচালক হেলাল আহমেদ বলেন, নিলামে নতুন ও পুরাতন চা তোলা হয়। তারমধ্যে নিলামে বৃন্দাবন চা বাগানের জিবিওপি চা সর্বোচ্চ ৭৫০টাকা দামে বিক্রি হয়। মৌসুমে নতুন চায়ের মধ্যে বৃন্দাবন বাগানের চা বেশি দামে বিক্রি হয়।
ইতোপূর্বে চা নিলামগুলোতে ব্লাক-টির পাশাপাশি বৃন্দাবন চা বাগানের গ্রিন-টিও বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ দরে বলে জানান তিনি।
এর আগে শ্রীমঙ্গলের ১৫তম চা নিলামে (৮ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার) সর্বোচ্চ দরে বিক্রি হয়েছিল বৃন্দাবন চা বাগানের ব্লাক-টি ‘ডিএম ক্লোন বিটি-২ স্পেশাল’। প্রতি কেজির দাম উঠেছিল ৬১০ টাকা। পরবর্তী ভ্যাট-ট্যাক্স নিয়ে কেজি প্রতি দাম পড়ে ৭১৩ টাকা।
তবে পরিবহন খরচ, চা রক্ষণাবেক্ষণ খরচ এবং অন্যান্য খরচের পর এই দাম গিয়ে পড়েছে প্রতি কেজি ৯৫০ টাকা বলে জানিয়েছে এই চা ক্রয়কারী মাস্টার টি এর সত্ত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম।
বৃন্দাবন চা বাগানের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘ডিএম ক্লোন বিটি-২ স্পেশাল’-কে এ যাবৎকালে আমাদের উৎপাদিত ব্লাক-টির মধ্যে এটিই সর্বোৎকৃষ্ট। চা পাতার অ্যাপিয়ারেন্স, লিকার এবং ফ্লেভার পরখ করে ক্রেতারা সর্বোচ্চ দামে ক্রয় করেছেন আমাদের এই চা। প্রচুর পরিশ্রম, সততা, বিশ্বাস আর দক্ষতার সমন্বয়ে আমরা চা উৎপাদনে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছি।’
শুধু তা-ই নয়, আমাদের বাগানের চা ক্রয়ের পর কোনো বিক্রেতা যদি প্রমাণ সাপেক্ষে আমাদের চায়ের কোনো প্রকার সমস্যা চিহ্নিত করে আমার নিকট অভিযোগ করেন আমি সাথে সাথে সেই পরিমাণ নতুন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চা সেই বিক্রেতার নিকট দ্রুত সরবরাহ করে থাকি। চা বিক্রেতা এবং চা ক্রেতার তাৎক্ষণিক চাহিদাকে আমরা সবসময়ই অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকি বলে জানান এই বৃন্দাবন চা বাগানের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন।