গ্যাস সংকটে নাকাল অবস্থার মধ্যেই সুখবর বয়ে এনেছে অনাদরে থাকা রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্স। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সালদা গ্যাস ফিল্ডে পরিত্যাগ কূপের ওয়াকওভার মাধ্যমে নতুন গ্যাস স্তর আবিষ্কার করেছে।
দুই দিন ধরে পরীক্ষামূলক ভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে ৫০০ পিএসআই চাপ পাওয়া গেছে। কূপটি থেকে দৈনিক ৪ থেকে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পরিমাণের দিক থেকে খুব বেশি না হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় এর চেয়ে স্বস্তিদায়ক কমই রয়েছে জ্বালানি বিভাগের কাছে। নতুন কোন ফিল্ডে গ্যাস পেলে তা সহসা পাইপ লাইনে দেওয়া অনেক সময় সাপেক্ষ বিষয়। অন্যদিকে সালদায় পাইপ লাইন ও অন্যান্য সুবিধা বিদ্যমান। দুই তিন দিনের মধ্যে কূপটি থেকে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন করা হবে। গ্যাস সংকটের কারণে ভীষণ খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সিএনজি ফিলিং স্টেশনের পর ১২ এপ্রিল থেকে শিল্পে ৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তজাতিক বাজারে গ্যাসের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। ৫ ডলারে বিক্রি হওয়া এলএনজি (এমএমবিটিইউ) এখন ৩৯ ডলারে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে সরকার গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বাড়ানোর আবেদন করেছে বিইআরসিতে।
সালদা ২ নম্বর কূপটি অনেকদিন আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। আগে ২৪৩৫ মিটার মাটির নিচ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হতো, সেই স্তরের গ্যাস শেষ হলে বন্ধ হয়ে যায় কূপটি। বাপেক্স ওয়াকওভারের মাধ্যমে আরও ১২০ মিটার খনন করে নতুন স্তরটি আবিষ্কার করেছে। নতুন স্তরটি ২৫৩৫ মিটার থেকে ২৫৪৫ মিটার পযন্ত পুরু।
দেশীয় কোম্পানি বাপেক্স নিজস্ব অর্থায়ন ও কারিগরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পন্ন করেছে। এতে মাত্র ৫ কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে। ফিল্ডটি থেকে বর্তমানে দৈনিক ২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। সালদার ধারাবাহিকতায় পরিত্যক্ত কূপ সেমুতাং ৫ এ রিগ নিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়াকওভার শুরু করতে চায়। এ কাজটি করতে তিন থেকে চার সপ্তাহের মতো লাগতে পারে।
বাপেক্স এমডি মোহাম্মদ আলী বার্তা২৪.কম-কে বলেছেন, পরীক্ষামূলক উৎপাদন হচ্ছে, এখনই এর বেশি মন্তব্য করতে পারছি না। সফল হলে খুব শিগগিরই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রের শিকার। তাদের নিজেদের ফিল্ডে অন্যকে দিয়ে চড়া দামে কূপ খনন করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর তারা অর্ধেক দামে ভাড়া খাটছেন বছরের পর বছর ধরে।