ইশতেহারে অর্থের উৎস কি হবে জানাতে হবে -সিপিডি

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 00:15:30

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহারে যে গগণ স্পর্শী আকাঙ্খা জনগণকে দিবে তা কিভাবে বাস্তবায়ন হবে ও তার জন্য অর্থের উৎস কি হবে তা উল্লেখ করতে হবে বলে মন্তব্য জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের ( সিপিডি)  বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

রোববার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে বেলা ১১ টায় ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক সিপিডি মিডিয়া ব্রিফিং-এ  এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন,  গত ১০ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে জ্বালানি খাতে যে সঙ্কট ছিলো সেসব অনেটাই কাটিয়ে উঠেছে দেশ। সব মিলিয়ে গত ১০ বছরে সামগ্রিক যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দেশের ভেতরে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা কমে গিয়েছে। এর অন্যতম একটি কারণ দেশের ভেতরে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা কমে যাওয়া। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী আলোচনায় অর্থনৈতিক বিষয়ে কোনো আলোচনায় আসেনি। এটি অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়।

তিনি বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে সে বিষয়ে ও তা বাস্তবায়নের অর্থের উৎসের কথা পরিষ্কারভাবে বলতে হবে। ইশতেহারে গগণস্পর্শী যে আকাঙ্খা থাকবে তা বাস্তবায়নে অর্থের উৎস দেখাতে হবে। সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিভাজিত বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে বৈষম্য সবচেয়ে বেশি। ব্যাংকিং খাতের যে দশা তা আগেই আমরা বলেছিলাম। কিন্তু তখন নির্বাচনী ইশতেহারে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু এবার ইশতেহারে সে বিষয়ে নির্দেশনা থাকা উচিত।  নির্বাচনী ব্যয় সৎ প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখছে। হলফনামায় যে সম্পদের বিবরণ দেওয়া হলো তার সত্যতা যাচাই করা হলো না। নির্বাচন কমিশনের সে সক্ষমতা না থাকতে পারে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তো এ বিষয়টি দেখতে পারতেন। যাদের ঋণখেলাপির দায়ে প্রার্থীতা বাতিল হয়েছে তাদের ঋণের পরিমাণ খুব একটা বেশি নেই।

সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,  আমাদের দেশ থেকে যে সম্পদ পাচার হচ্ছে তা জিরো টলারেন্স এর আওতাধীন করা উচিত। ব্যাংকিং খাতে গত কয়েক বছরে অনেক ভালো ভালো নীতিমালা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও কেনো দুর্নীতি হচ্ছে। জনগণের টাকা কিভাবে ব্যক্তিখাতে চলে যাচ্ছে  তা খতিয়ে দেখতে হবে। এর সমাধান করতে হবে। যারা ঋণখেলাপি হচ্ছেন তাদের বিচারের আওতাধীন করা উচিত। নির্বাচনী ইশতেহারে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা থাকা উচিত।   আমাদের বৈদেশিক ঋণ বাড়ছে এটা যেমন ইতিবাচক ঠিক তেমনি ঋণের দায়ভার বেড়ে যাওয়াটা কিন্তু নেতিবাচক।

পোশাক খাত নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের রফতানিখাতে বৈচিত্র আনতে হবে।  পোশাক শিল্পে একর্ড, অ্যালায়ান্স ও সরকার কাজ করছিলো দক্ষতার সাথে।  এখন একর্ড, অ্যালায়ান্স যদি চলে যায় তাহলে রফতানি বাড়াতে হলে সেসব কাজের ভাড় সক্ষমতার সাথে নিতে হবে। কারণ পোশাক শিল্পের সকল কাজই আসছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। তাই এসব বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে শ্রম বাজারে শিক্ষিতদের চেয়ে কম শিক্ষিত মানুষের কর্মসংস্থান বেশি হচ্ছে। কারণ দক্ষতা সেই হারে বাড়ছে না। এখন উদ্যোক্তা তৈরি করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের জন্য আমাদের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা উচিত। স্বাস্থ্যখাতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। নতুন নতুন রোগ আসছে সেসব বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর