গাজীপুরের চন্দ্রনায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের হেডকোয়ার্টারে ইফতার খাওয়ার পর তিন শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন কারখানার শ্রমিকরা।
রোববার (১৬ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ালটন জানায়, গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের হেডকোয়ার্টারে এক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে। রমজান উপলক্ষে কারখানায় প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার লোক ইফতার গ্রহণ করেন। বরাবরের মতো এবারও প্রতিষ্ঠানে ইফতারের আয়োজন করা হয়।
ইফতারের পর ৫ শ্রমিক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মূল ডাইনিংয়ের বাইরে শরবত জাতীয় পানীয় তৈরি করে পান করেন। এর কিছুক্ষণ তাদের ৩ জন অসুস্থবোধ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ওয়ালটনের মেডিকেল টিম তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে কারখানার নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে পার্শ্ববর্তী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে আরেকজন শ্রমিক অসুস্থবোধ করলে তাকেও জরুরি ভিত্তিতে উপরোক্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার সুচিকিৎসার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিন শ্রমিকের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে ওয়ালটন পরিবার গভীরভাবে শোকা প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ওয়ালটন সবসময়ই ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ। ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ উক্ত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি কোম্পানির পলিসি অনুযায়ী কমপ্লায়ান্স মেনে (ইনস্যুরেন্স, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি ইত্যাদি) যথাযথ সুবিধাসহ তাদের পরিবারকে এর অতিরিক্ত আরও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, ওয়ালটন কারখানায় নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা রক্ষায় সূচনালগ্ন থেকেই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ খাবার সরবরাহ করে আসছে। কোম্পানির নিজস্ব তত্বাবধানে যে খাবার সরবরাহ করা হয়, তা ব্যতিরেকে অন্য খাবার গ্রহণ না করার জন্য ওয়ালটনের সকল সদস্যকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়ে থাকে।
উপরোক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিরাগতরা কারখানা ও এর আশপাশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। তবে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদক্ষেপে সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
ওয়ালটন পরিবারের ৩ জন সদস্যের আকস্মিক প্রয়াণে কর্তৃপক্ষ এক দিনের শোক দিবস ঘোষণা করেছেন। এ কারণে আজ সোমবার (১৭ এপ্রিল) কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।