টহল বাবদ অর্থ ছাড়ে পৃথক কন্ট্রোল রুম স্থাপনের অনুরোধ ইসি’র

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-26 19:27:26

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও পাহারা বাবাদ অর্থ দ্রুত ছাড় করতে অর্থ বিভাগে পৃথক একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া ইসি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বরাদ্দ অর্থ যাতে আইবাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে সহজে উত্তোলন করা যায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানিয়েছে।

গত সপ্তাহে ইসি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে। সভার সিদ্বান্ত অনুসারে অর্থ বিভাগকে এই অনুরোধ জানায় ইসি। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করতে ইসি’র বরাদ্দ ৭০০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৪০০ কোটি টাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ইসির। যদিও বিভিন্ন বাহিনীর চাহিদা প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। ফলে অতিরিক্ত ৬০০ কোটি টাকা যোগানের বিষয়ে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা সংশয়ে আছেন। এছাড়াও ঠিক সময়ে অর্থ ছাড় না করলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অর্থ পাঠানো বিষয়ে বেশ চ্যালেঞ্জ থাকছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সবচেয়ে বেশি ৪২৮ কোটি টাকা চেয়েছে পুলিশ। এছাড়া আনসার-ভিডিপি ৩৮১ কোটি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৭২ কোটি, সেনাবাহিনী ৫০ কোটি ও কোস্ট গার্ড ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য পরিকল্পিত বাজেটের অতিরিক্ত এ অর্থের সংস্থান কিভাবে করতে হবে বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে- তা ইতোমধ্যেই অর্থ বিভাগকে জানিয়েছে ইসি।

ইসি’র তথ্য অনুযায়ী, আগামী জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ, ভোট কেন্দ্র ৪০ হাজার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ১০ লাখ। এছাড়া ব্যালট বক্স, ব্যালট পেপার, নির্বাচনী সামগ্রী, পরিবহন, জ্বালানিসহ নির্বাচন পরিচালনায় অন্তত ৬০-৭০টি খরচের খাত রয়েছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা, সিটি ও অন্যান্য উপনির্বাচনের জন্য মোট এক হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়। যার মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা করতে এক হাজার ৬৮৫ কোটি ও উন্নয়ন খাতে ২১০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। যদিও একাদশ সংসদ নির্বাচনের খরচ বাবদ ৭০০ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করে ইসি। গত জাতীয় নির্বাচনে অনুমোদন করা হয় ৫০০ কোটি।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও পারিশ্রমিক বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছরই নির্বাচনী ব্যয় বাড়ছে। এছাড়া ভোট গ্রহণে নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও নিয়োগ দিতে হয় বেশি। এ কারণে পুরো নির্বাচন পরিচালনা ব্যয়ের একটি বড় অংশ চলে যায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা খাতে।

জানা গেছে, দশম সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৪-১৬ জন নিরাপত্তারক্ষী দায়িত্ব পালন করেন। ওই নির্বাচনে ১৪৭ আসনে ভোট হয়। বাকি ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচন আয়োজনে ব্যয় হয় প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে ১৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয় আইন-শৃঙ্খলা খাতে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর