জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী নির্ধারণের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে একটি ফর্মুলা অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিদ্যুৎ ভবনে স্মার্ট গ্রিড ডে আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা ফর্মুলা জমা দিয়েছি। তারা এখন বিবেচনা করবে কখন করবে। নির্বাচনের পরেও হতে পারে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে কিছু হলে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দেয়। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে এখনও বড় প্রভাব ফেলেনি। তবে যুদ্ধ দীর্ঘ চিন্তা থেকেই যায়। কারণ জ্বালানি তেলের বিকল্প উৎস সেভাবে নেই।
সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক দরে জ্বালানি তেল বেচাকেনার কথা অনেক আগেই ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ। তখন বলা হয়, জ্বালানি তেলে আর কোনো ভর্তুকি দেবে না বাংলাদেশ। আমদানি নির্ভর, ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন ও জেট ফুয়েলসহ জ্বালানি তেলে স্বয়ক্রিয় দর পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজার বেড়ে গেলে দাম বাড়বে, কমলে কমে যাবে। বর্তমানে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর রয়েছে। সরকার সময়ে সময়ে গেজেট প্রকাশ করে তেলের দাম পুনঃনির্ধারণ করে আসছে।
প্রকাশ্যে কিছু বলা না হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রেসক্রিপশনের বিষয়টি অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। এর চারদিনের মাথায় প্রথম কিস্তি ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করা হয়। সেই ঋণে অন্যতম শর্ত ছিল জ্বালানি তেল থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা।
ওই ঘোষণার পর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বিপিসিকে একটি ফর্মুলা প্রস্তুত করতে বলা হয়। তখন উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম ভারত সফর করে আসেন। অন্যদিকে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) অধীনে দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় (১৪ ডিসেম্বর ২০২২) সিদ্ধান্ত হয়েছিল তেলের দাম নির্ধারণ করবে বিইআরসি। ওই সভায় এক দশক ঝুলে থাকা বিইআরসির প্রবিধানমালা সংশোধন সাপেক্ষে দ্রুত অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে মোতাবেক প্রবিধানমালা সংশোধন করে ফের জমা দেয় বিইআরসি।